রাজ্যের ১২টি পুরসভার নির্বাচনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে আজ, সোমবার রাজ্য প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডে। প্রশাসন সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত ভোটের মতো এ ক্ষেত্রেও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে মতভেদ দেখা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে এ বারেও কমিশন আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে।
পুরভোট নিয়ে অবশ্য এর মধ্যেই এক দফা আদালত ঘুরে এসেছে দু’পক্ষ। বস্তুত, হাইকোর্টের নির্দেশেই আগামী ২১ সেপ্টেম্বর ওই ১২টি পুরসভার নির্বাচন হবে। সেই
সংক্রান্ত সরকারি বিজ্ঞপ্তিও জারি হয়ে গিয়েছে। ভোটের জন্য প্রস্তুতিও
শুরু করে দিয়েছে কমিশন। তবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কী হবে, তা
এখনও পরিষ্কার হয়নি। সে জন্যই সোমবার রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তাদের বৈঠকে ডাকা হয়েছে বলে কমিশন সূত্রের খবর।
ওই ১২টি পুরসভার ভোটের জন্য এর মধ্যেই ৭০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়েছে কমিশন। ওই বাহিনী কেন চাওয়া হয়েছে, তা সোমবার রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং এডিজি (আইশৃঙ্খলা)-কে মীরাদেবী বুঝিয়ে বলবেন বলে রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের মনোভাব কী, তা সে দিনই প্রশাসনিক কর্তারা কমিশনকে জানিয়ে দেবেন বলে মহাকরণ সূত্রে জানা গিয়েছে।
পঞ্চায়েত ভোটে ৮০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়েছিল কমিশন। তা নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে তাদের লড়াই সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছিল।
শেষ পর্যন্ত শীর্ষ আদালতের নির্দেশে ৮০০ কোম্পানিরও বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়। এ বার ১২টি পুরসভা নির্বাচন নিয়েও কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রশ্নে রাজ্য ও কমিশনের মধ্যে আরও একবার টানাপোড়েন সামনে এসেছে। রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তা রবিবার বলেছেন, “১২টি পুরসভার ভোটের নিরাপত্তার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন আদৌ জরুরি কি না, সেটাই সব থেকে বড় প্রশ্ন। কমিশনের কাছে আমরা সেই বিষয়টিই সোমবার জানতে চাইব।”
কমিশন সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত ভোটে যেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল, সেখান থেকে কোনও গোলমালের খবর আসেনি। রাজ্য সরকার যে নিজস্ব বাহিনী দিয়ে অবাধ ভোট করাতে পারবে না, তা পঞ্চায়েত নির্বাচনেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। কমিশনের একটি সূত্র রবিবার বলেন, “সোমবার রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার পুরসভা
ধরে ধরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করবেন।” ওই সব পুরসভা
এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সরকারের প্রতিনিধিরা নির্বাচন কমিশনারের কাছে সোমবারই একটি প্রাথমিক রিপোর্ট দেবেন বলে মহাকরণ সূত্রের খবর।
কোন পুরসভা এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেমন তার জন্য রাজ্য সরকারের রিপোর্ট বা পর্যবেক্ষকদের রিপোর্টের উপরেই কিন্তু পুরোপুরি নির্ভর করছেন না নির্বাচন কমিশনার। তাই তিনি নিজেই এ বার ১২টি পুরসভা এলাকায় গিয়ে সরেজমিনে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন বলে কমিশন সূত্রে বলা হয়েছে। রাজ্য সরকার পুরভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী আনার যুক্তি মানতে না চাইলে পঞ্চায়েত নির্বাচনের মতো এবারেও কমিশন আদালতের শরণাপন্ন হতে পারে বলে কমিশন সূত্রে
ইঙ্গিত মিলেছে। তাই মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এ বার আটঘাট বেঁধে নামতে চাইছেন বলেই কমিশন সূত্রের খবর। |