তিনিই যেন পূজারাদের বড়দা। এত দিন ভারতীয় ‘এ’ দলের দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে সেই ভূমিকায় ছিলেন লালচাঁদ রাজপুতের। এখন তিনি কার্যত মেজদা। নতুন অভিভাবক ডানকান ফ্লেচারের সান্নিধ্য পেয়ে ভারত ‘এ’ দলের ক্রিকেটাররাও রীতিমতো ‘চার্জড’।
দক্ষিণ আফ্রিকা ‘এ’-র বিরুদ্ধে চলতি বেসরকারি টেস্টের প্রথম দিন চেতেশ্বর পূজারার সেঞ্চুরির পর রবিবার দ্বিতীয় দিন রোহিত শর্মা, সুরেশ রায়নাদের ব্যাটেও শতরানের ফুলঝুরি। এ সব দেখে ব্যাপক খুশি ধোনিদের কোচও। তিন মাস পর যখন দল নিয়ে সেখানে যাবেন লম্বা সফরে, তখনও এমনই ফর্মে থাকবেন তাঁর দলের ক্রিকেটাররা, এই আশায়।
রবিবার দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারতীয় ‘এ’ দলের শিবিরে ফোন করে জানা গেল, ফ্লেচারই বকলমে দলটার কোচ হয়ে উঠেছেন। তিনি যেমন টিম হোটেলে দলের সঙ্গে থাকছেন, তেমনই দলের ছেলেদের সঙ্গে প্রাতরাশ, নৈশভোজ সবেতেই অংশ নিচ্ছেন। দলের কোচ হয়ে গেলে যা করতেন সবই করতে দেখা যাচ্ছে তাঁকে। সিনিয়র দলের কোচই যেখানে এমন সক্রিয়, তখন তো ‘এ’ দলের ক্রিকেটাররাও উৎসাহে টগবগ করে ফুটবেনই এবং সেটাই হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা ‘এ’ দলের ওপর ৫৮২ রানের বোঝা চাপিয়ে দেওয়াটা বোধহয় তারই প্রতিফলন। পূজারার ১৩৭-এর পর রোহিত শর্মা এ দিন করলেন ১১৯। সুরেশ রায়নার সংগ্রহ ১৩৫। এমনকী ইনিংসের শেষ দিকে শাহবাজ নাদিম (৪৬ অপরাজিত), ঈশ্বর পান্ডে (৩৫) ও জয়দেব উনাদকটও (৩১ অপরাজিত) দলকে প্রচুর রান দিলেন। সব মিলিয়ে ভারত যখন ৫৮২-৯, তখন ইনিংস ডিক্লেয়ার করে দেন পূজারা। অবশ্যই ফ্লেচারের সঙ্গে পরামর্শ করে। |
এ দিন সকালে মাঠে নামার আগে রায়নাকে আলাদা করে ডেকে নিয়ে বেশ খানিকক্ষণ কথা বলেন ফ্লেচার। জানা গেল, ব্যাট হাতে নিয়ে রায়নাকে স্টান্সও দেখিয়ে দেন ভারতীয় দলের কোচ। আগের দিন ১১ রানে অপরাজিত ছিলেন রায়না। রোহিত শর্মা এ দিন যখন ব্যাট করতে নামেন, তখন তিনি সেঞ্চুরি থেকে ৩০ রান দূরে।
রায়নার সেঞ্চুরিতে ফ্লেচার যে বিশেষ তৃপ্ত, তা ভালই বোঝা গিয়েছে। ফিরে আসা মাত্রই রায়নাকে জড়িয়ে ধরে অভিনন্দন জানান ধোনিদের দলের কোচ। হয়তো বা তাঁর পরামর্শটা মাঠে রায়না ঠিকঠাক কাজে লাগাতে পেরেছেন বলেই।
এ দিন রাস্টেনবার্গ থেকে ফোনে দলের ম্যানেজার সুবীর গঙ্গোপাধ্যায় বলছিলেন, “এই দলের অনেককে যেমন উনি চেনেন, তেমন অনেককেই তো আবার চেনেন না। কিন্তু সবার সঙ্গেই যে ভাবে মিশে গিয়েছেন ফ্লেচার, তা সত্যিই প্রশংসা করার মতো। উনি যে এখানে ভারতীয় দলের আগামী সফরের জন্য ক্রিকেটার খুঁজতে এসেছেন, তা বুঝতেই দিচ্ছেন না কাউকে। বরং অভিভাবকের মতো সবার দেখাশোনা করছেন, সবার সমস্যা মেটাচ্ছেন।”
রাস্টেনবার্গে চলতি ম্যাচ শুরুর আগের দিনই পৌঁছে যান ফ্লেচার। এই ক’দিন প্র্যাক্টিসে দলের ছেলেদের যাঁর যা সমস্যা, সেগুলো নিয়ে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। দিনের শেষে দক্ষিণ আফ্রিকা ২০-১। উনাদকটের বলে ওপেনার হেনড্রিক্স স্টাম্পড হন ঋদ্ধিমান সাহার হাতে। তবে দুঃখের বিষয়, ব্যাট হাতে নেমে এ দিন ঋদ্ধি মাত্র এক রান করে ফিরে যান। সামি করলেন ২। বাকিদের সবার পাশে দুই অঙ্কের রান। |