|
|
|
|
মেদিনীপুর শহরে বাড়ছে ক্ষোভ
গম বরাদ্দ হয়নি দু’বছর, হাতে শুধু কুপন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
দু’বছর ধরে জিআর-এর (গ্র্যাচুইটাস রিলিফ) গম পাচ্ছেন না উপভোক্তারা। অথচ, কুপন বিলি হয়েছে। ফলে, ক্ষোভ দেখা দিয়েছে মেদিনীপুর শহরে। বিরোধীদের বক্তব্য, শেষ ২০১০-১১ সালের জন্য জিআর-এর গম বরাদ্দ হয়েছিল। তা বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিলিও হয়। কিন্তু, তারপর আর বরাদ্দ হয়নি। এ ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারকে দুষছেন বিরোধী দলের কাউন্সিলররা। তাঁদের মতে, এই নিয়ে সরকারের কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই। সরকারের উদ্যোগ থাকলে গরিব মানুষ এ ভাবে প্রকল্পের সুফল থেকে বঞ্চিত হতেন না।
কেন এই পরিস্থিতি?
সদুত্তর এড়িয়ে মহকুমাশাসক (সদর) তথা মেদিনীপুর পুরসভার প্রশাসক অমিতাভ দত্তের বক্তব্য, “বিষয়টি দেখছি।” মহকুমাশাসকের এই আশ্বাসে অবশ্য বরফ গলছে না। মেদিনীপুরের প্রাক্তন পুরপ্রধান নাজিম আহমেদের তোপ, “রাজ্য সরকারের উদাসীনতার জন্য গরিব মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন। আগেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, দ্রুত জিআর-এর গম বিলি হবে। কিন্তু, তা হয়নি। এ বারও সেই একই পরিস্থিতি। মাত্র ১২ কেজি করে গম দেওয়া হয়। তা-ও দু’বছর ধরে তা বরাদ্দ হচ্ছে না।” প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা শহর কংগ্রেস সভাপতি সৌমেন খানের কথায়, “গরিব মানুষদের জন্য এই প্রকল্প। অথচ, এমন প্রকল্পের ক্ষেত্রেও সরকার গড়িমসি করছে। আগে আমরা অতিরিক্ত জেলাশাসকের (সাধারণ) সঙ্গে দেখা করে দ্রুত জিআরের গম বরাদ্দের দাবি জানিয়েছি। তখনও আশ্বাস ছাড়া আর কিছুই পাইনি।”
মেদিনীপুর শহরে ২৪টি ওয়ার্ড রয়েছে। এই সব ওয়ার্ডে উপভোক্তার সংখ্যা নির্দিষ্ট। জিআর-এ মাস পিছু এঁদের ১২ কেজি করে গম দেওয়ার কথা। সাধারণত, ছ’মাস অন্তর বছরে দু’বার জিআরের গম বরাদ্দ হয়। শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে যেমন বছরে ১ হাজার ৫৮৪ কেজি গম বরাদ্দ হওয়ার কথা। ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ২ হাজার ৫৯২ কেজি। ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে ১ হাজার ৮৭২ কেজি। প্রকল্পের জন্য পুরসভা থেকে কাউন্সিলরদের কুপন দেওয়া হয়। ওই কুপন কাউন্সিলররা উপভোক্তাদের দেন। পরে কুপন দেখিয়ে উপভোক্তারা তাঁদের প্রাপ্য পান। বরাদ্দ আসেনি। অথচ, প্রকল্পের কুপন যথারীতি কাউন্সিলরদের কাছে পৌঁছেছে। শহরে দু’জন জিআর ডিলারও রয়েছেন। এঁদেরই একজন প্রদীপ চন্দ। তাঁর বক্তব্য, “বরাদ্দ আসেনি। তাই উপভোক্তারা গম পাচ্ছেন না।”
৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর রহিমা আহমেদের বক্তব্য, “শুধু কুপন নিয়ে কী হবে? বরাদ্দই তো নেই। সরকারের উচিত, দ্রুত জিআরের গম বরাদ্দ করা। না-হলে গরিব মানুষ সমস্যায় পড়বেন।” তাঁর কথায়, “তিন-চার মাসের ব্যাপার নয়, দু’বছর ধরে জিআরের গম পাচ্ছেন না উপভোক্তারা। ফলে, তাঁদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেওয়া স্বাভাবিক।” শেষ ২০১০-’১১ সালের জন্য জিআরের গম বরাদ্দ হয়েছিল। ২০১১-’১২ এবং ২০১২-’১৩ সালের জন্য কবে গম বরাদ্দ হয়, সেটাই দেখার। |
|
|
|
|
|