কাজের ফাঁকে ছবি আঁকা, চিত্র প্রদর্শনী এসডিপিও-র
নাইন এমএম পিস্তল উঁচিয়ে দুষ্কৃতীদের তাড়া করেন, আবার তিনিই তুলির টানে ফুটিয়ে তোলেন প্রকৃতির নৈসর্গিক শোভা। শুধুই প্রকৃতির মধ্যে আটকে থাকা নয়, শিল্পীর মন কখনও ভারাক্রান্ত হয় সমাজের নিষ্ঠুর বর্বর ঘটনার জন্য। তুলির আঁচড়ে ফুটে ওঠে সেই যন্ত্রণার টুকরো চিত্রও। আর এসব নিয়েই খড়্গপুরের এসডিপিও দ্যুতিমান ভট্টাচার্যের চিত্র প্রদর্শনী হল খড়্গপুর শহরের কল্যাণ মণ্ডপে। শনিবার প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন ডিআইজি লক্ষীনারায়ণ মিনা। দু’দিনের এই প্রদর্শনী শেষ হল রবিবার। প্রদর্শনী সফল হওয়ায় খুশি খড়্গপুরের শিল্পী ধীমান পাল। তাঁর কথায়, “প্রদর্শনীতে সাড়া মিলবে কি না তা নিয়ে সংশয়ে দল বেঁধেও শিল্পীরা প্রদর্শনী করার সাহস পান না অনেক সময়। সেদিক দিয়ে দ্যুতিমানবাবু এক নতুন দিগন্তের সূচনা করলেন। এর থেকে জেলার শিল্পীরাও উত্‌সাহ পাবেন।”
প্রদর্শনীতে এসডিপিও দ্যুতিমান ভট্টাচার্য। —নিজস্ব চিত্র।
প্রদর্শনীতে ছবি বিক্রিরও ব্যবস্থা রয়েছে। শনিবার অর্থাত্‌ প্রদর্শনী শুরুর দিনই ৫৭টি ছবির মধ্যে ৬টি বিক্রি হয়ে গিয়েছে। ছবি বিক্রির টাকা দেওয়া হবে ‘ফেরা’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে। ওই সংস্থাটি খড়্গপুর শহরে থেকে নেশাগ্রস্ত, মাদকাসক্ত যুবক-যুবতীদের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে। দ্যুতিমানবাবুর স্ত্রী রোশনীদেবী ওই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। মাদকাসক্তদের কাউন্সেলিংয়ের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি।
দ্যুতিমানবাবু কখন সময় পান ছবি আঁকার? উত্তরটা দিলেন তাঁর স্ত্রী রোশনীদেবী। তাঁর কথায়, “খেতে দিয়েছি হয়তো। দেখলাম খাবার টেবিলে না বসে রঙ তুলি নিয়ে বসে গেল। সকালে ব্যায়াম করার ফাঁকে ফাঁকে দু’চারটে তুলির টান দিয়ে রাখল। এভাবেই সময় বের করে নেয়।” আর দ্যুতিমানবাবুর কথায়, “ইচ্ছে থাকলে সবই করা যায়।” শিল্পীর কথায়, “ছোটবেলা থেকেই আঁকার ইচ্ছে ছিল প্রবল। প্রথমে শিক্ষকদের অঙ্গভঙ্গি নিয়ে ছবি আঁকা বা কাদার পুতুল বানানো দিয়ে শুরু। তারপর ধীরে ধীরে প্রকৃতি প্রেম। ভোরের কুয়াশা বা প্রকৃতির কোলে দু’টি মানুষ কাছাকাছি, কখনও কাঠকয়লা রঙে মহীয়সী নারী। আবার কখনও তুলির টানে ফুটে ওঠে দিল্লি ধর্ষণকাণ্ডের প্রতিবাদ, নারীর বেদনাহত অবয়ব।” দ্যুতিমানবাবু আরও বলেন, “কাজের চাপ তো থাকবেই। তার মধ্যেই ভাল কিছু দৃশ্য মনে গেঁথে থাকে। সেটাই ফুটিয়ে তুলি। এতে ক্ষতি হয় না, বরং কাজে উত্‌সাহ বাড়ে।”
সম্প্রতি সদ্য ডব্লুবিসিএস পাশ করা যুবক-যুবতীদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শ ছিল, যখন খুব চাপে পড়বেন তখন কাগজে আঁকিবুকি কাটবেন। তা হলে নাকি চাপ মুক্ত হওয়া যায়। মুখ্যমন্ত্রীও তাই করে থাকেন বলে জানিয়েছিলেন। দ্যুতিমানবাবু শুধু আঁকিবুকি না কেটে একেবারে আস্ত ছবির প্রদর্শনী করে ফেললেন। কে জানে, মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শেই সাহস পেয়েছিলেন কি না।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.