বামফ্রন্টের জয়ী সদস্যদের পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের ভোটাভুটিতে যোগ দিতে ব্যাপক বোমাবাজি করে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। রবিবার ময়ূরেশ্বর থানার ঝিকড্ডা পঞ্চায়েতের ঘটনা। তৃণমূলের ছোড়া বোমায় বীরভূমের প্রাক্তন সভাধিপতি, সিপিএমের ধীরেন লেট-সহ ৫ সিপিএম সমর্থক জখম হয়েছেন বলে অভিযোগ। এ দিন বারবার পঞ্চায়েত অফিসে ঢুকতে চেষ্টা করলেও তৃণমূল সমর্থকেরা বোমাবাজি করে তাঁদের হঠিয়ে দেন বলে বামেদের দাবি। তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বিনা বাধায় পঞ্চায়েত বোর্ডটিও তাদের দখলে গিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন সকাল থেকেই বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র ময়ূরেশ্বরের ঝিকড্ডা পঞ্চায়েত এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। গত বার ওই পঞ্চায়েতটি তৃণমূল-বিজেপি-কংগ্রেস জোটের দখলে ছিল। এ বার ১৬টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ৮, সিপিএম ৬, ফরওয়ার্ড ব্লক ১ ও সিপিএম সমর্থিত নির্দল একটি আসন দখল করে। |
সকালে ধীরেনবাবুর নেতৃত্বে জয়ী ৮ সদস্য-সহ বামেদের কর্মী-সমর্থকেরা ঝিকড্ডা পঞ্চায়েত অফিসে আসছিলেন। তখনই তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা বোমা মেরে তাঁদের হঠিয়ে দেয়। ধীরেনবাবু বলেন, “সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ আমার গ্রাম পারুলিয়া থেকে জয়ী ৮ জনকে নিয়ে আমরা ভোটাভুটিতে যোগ দিতে আসছিলাম। অফিসের কাছে পৌঁছতেই তৃণমূল ব্যাপক বোমাবাজি শুরু করে আমাদের তাড়িয়ে দেয়।” পুলিশের সামনেই ওই জয়ী সদস্যেরা পরপর চারবার অফিসে ঢোকার চেষ্টা করলেও প্রত্যেকবারই তাঁদের বাধা দেওয়া হয় বলে বামেদের অভিযোগ।
এ দিকে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, ধীরেনবাবুই ইট ছুড়ে ও বোমা মেরে তৃণমূলের জয়ী সদস্যদের পঞ্চায়েত অফিসে ঢুকতে বাধা দেন। তৃণমূলের জেলা কমিটির সদস্য ধীরেন্দ্রমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “বোমাবাজির অভিযোগ ভিত্তিহীন। আসলে হার নিশ্চিত জেনেই সিপিএম ভোটাভুটিতে যোগ দেয়নি।” অবশ্য এ দিন জয়ী বাম সদস্যেরা ভোট দিতে পঞ্চায়েত অফিসে না আসলেও তৃণমূলের জয়ী ৮ সদস্যই বোর্ড গঠনে সামিল হয়েছিলেন। সেখানে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃণমূলের সায়রা বিবি প্রধান ও অতুন বাগদি উপপ্রধান নির্বাচিত হয়েছেন। তৃণমূলের দাবি উড়িয়ে দিয়ে সিপিএমের ময়ূরেশ্বর জোনাল কমিটির সম্পাদক অরূপ বাগ বলেন, “প্রাণের ভয়েই আমরা আর ওখানে ভোটাভুটিতে যোগ দিতে পারিনি। আমরা হামলা করলে তৃণমূল বোর্ড গড়ল কী করে?”
গোটা ঘটনায় পুলিশের দাবি, জয়ী বাম সদস্যদের নিরাপত্তার ব্যাপারে আশ্বস্ত করা হয়েছিল। হামলার ঘটনায় কোনও পক্ষই এখনও অভিযোগ দায়ের করেনি। |