ধর্মঘটে সামিল হচ্ছেন না হুগলির বাস-মালিকেরা
ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে আগামী ১৯-২০ তারিখে কলকাতার বাস ধর্মঘটে সামিল হচ্ছে না হুগলি জেলা বাস মালিকদের সংগঠন। মঙ্গলবার জেলা সদর চুঁচুড়ায় জেলার বাস মালিকরা এক বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত নেন। বৈঠকের পরে ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। ভাড়া বাড়ানোর পাশাপাশি বাস চালানোর অন্য সমস্যাগুলিও সমাধানের দাবি জানানো হয়। জেলাশাসক মনমীত নন্দা বলেন, “মালিকদের সমস্যার ব্যাপারে আমরা অবহিত। ওঁদের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করা হবে।” বাস মালিকেরা জানিয়েছেন, সমস্যা সমাধানে প্রশাসনকে আরও কিছুটা সময় দিয়ে দেখতে চান তাঁরা। সে জন্যই এই ধর্মঘটে সামিল হচ্ছেন না তাঁরা।
প্রশাসন সূত্রের খবর, জেলার প্রায় ৪৬টি বাসরুট রয়েছে। ওই সমস্ত রুটে প্রায় ২০০০ বাস চলাচল করে। অন্যান্য জায়গার মতো হুগলিতেও ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে বাসমালিকেরা দীর্ঘ দিন ধরেই সরব হয়েছেন। হুগলি জেলা বাস-মিনিবাস-এক্সপ্রেস বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যেরা বৈঠকের পরে জানান, শেষ বার ভাড়া বৃদ্ধি হয়েছিল গত বছরের নভেম্বর মাসে। তারপর থেকে ডিজেলের দাম লিটার প্রতি অন্তত ৭ টাকা বেড়েছে। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে যন্ত্রপাতির দাম। ফলে আয় কমেছে অনেকটাই। বাস মালিকদের একটা বড় অংশের অভিযোগ, গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো বিভিন্ন জায়গায় রাজনৈতিক নেতাদের বদান্যতায় পারমিটহীন গাড়ির দৌরাত্ম্য বেড়েছে। রুট ভেঙে অন্যত্র গাড়ি চলছে বহু জায়গায়। অথচ প্রশাসন চোখ বুজে রয়েছে। এর জেরেও ক্ষতি হচ্ছে বাসের ব্যবসায়।
বিষয়গুলি নিয়ে বাস মালিকেরা বার বারই প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। কিন্তু ফল তেমন মেলেনি। এ সবের মধ্যেই বাস চালকদের কাছে বিভীষিকা হয়ে দাঁড়িয়েছে ভাঙাচোরা রাস্তার সমস্যা। সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি দেবব্রত ভৌমিকের দাবি, দশঘড়া থেকে তারকেশ্বর যাওয়ার রাস্তা এত বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে যে ওই পথে বাস চালানো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ওই পথে ২৩ এবং ১৭ নম্বর রুটের গোটা ষাটেক বাস চলে। এ ছাড়াও বর্ধমান থেকে গোটা দশেক এক্সপ্রেস বাস চলে। দাদপুরের আগেই সমস্ত বাস দাঁড় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তারকেশ্বর পর্যন্ত চালানো হচ্ছে না। রাস্তা ঠিক না হওয়া পর্যন্ত ওই রাস্তায় বাস চালানো সম্ভব নয় বলে ওই রুটের বাস মালিকেরা জানিয়ে দিয়েছেন।
দেবব্রতবাবু বলেন, “জেলা জুড়ে বেআইনি ইঞ্জিন ভ্যান দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। কোথাও ট্রেকারের মাথায় রেলিং দিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী তোলা হচ্ছে। অন্য গাড়িও চলছে রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায়। আর সরকারকে কর দিয়ে আমরা মার খাচ্ছি। তবুও ধর্মঘটের পথে এখনই হাঁটছি না। সমস্যা না মিটলে আগামী দিনে অনির্দিষ্ট কালের ধর্মঘট করা হবে।”
এ দিকে, বাস মালিকদের চাপে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া বন্ধ করতে জাঙ্গিপাড়ায় অভিযান চালিয়েছে জেলার মোটরযান বিভাগ। রবিবার জাঙ্গিপাড়া থেকে একটি ট্রেকার আটক করা হয় অতিরিক্ত যাত্রী তোলার অভিযোগে। সংশ্লিষ্ট দফতর সূত্রের খবর, ওই ট্রেকারের মাথায় বেআইনি ভাবে যাত্রী তোলা হয়েছিল। একটি ট্রেকার আটক করলেও জাঙ্গিপাড়া থেকে বসন্তপুর পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার রাস্তায় দাপিয়ে বেড়ানো গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্য মহকুমা প্রশাসন চেষ্টা করলেও বিশেষ লাভ হয়নি। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, সরকারি নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা না করে বেশ কিছু ছোট গাড়ি সেখানে যাত্রী পরিবহণ করছে। নেপথ্যে, সেখানকার এক তৃণমূল নেতা। ফলে ৩১ নম্বর রুটের বাস মার খাচ্ছে। ওই রুটের বাস মালিক রঞ্জন প্রামাণিক বলেন, “বেআইনি গাড়ির দৌরাত্ম্যে আয় তলানিতে এসে ঠেকেছে।”
ওই রুটের বাস মালিকেরা জেলা তৃণমূলের বিভিন্ন স্তরে অভিযোগ জানিয়েছেন। পরিবহণমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীর দফতরেও চিঠি দিয়েছেন তাঁরা। পরিস্থিতি অবশ্য বদলায়নি।
 
পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.