সেচ দফতর পুরনো তালিকা মেনেই
নিয়োগ, বলল সুপ্রিম কোর্ট

বাম আমলে প্রকাশ করা তালিকা মেনেই সেচ দফতরে চতুর্থ শ্রেণির পদে ১৪৪৬ জনকে চাকরি দিতে রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এইচ এল দাত্তু এবং বিচারপতি দীপক মিশ্রের বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে। ১২ জুলাই এই মামলার শুনানি শেষ হয়েছিল। তালিকাভূক্ত সকলকেই নিয়োগ করা উচিত বলে ওই দিনই মত দিয়েছিলেন বিচারপতিরা। আট সপ্তাহের মধ্যে ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে এ দিন নির্দেশ দিল সর্বোচ্চ আদালত।
২০১০ সালে প্রকাশিত সেচ দফতরের ওই তালিকাকে চ্যালেঞ্জ করে দু’জন প্রার্থী রাজ্য প্রশাসনিক ট্রাইবুন্যাল (স্যাট)-এ মামলা করেছিলেন। নিয়োগ পদ্ধতি যথাযথ হয়নি বলে রায় দিয়েছিল স্যাট। পরবর্তী কালে কলকাতা হাইকোর্টও স্যাটের রায়ের সঙ্গে সহমত হয়। ওই নিয়োগ তালিকায় যাঁদের নাম ছিল, এ বার তাঁরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। মঙ্গলবার সেই মামলার নিষ্পত্তি করে দিল সর্বোচ্চ আদালত। পাশাপাশি, তালিকায় নাম না থাকা যে দুই প্রার্থী স্যাটে মামলা করেছিলেন, তাঁদেরও চাকরির ব্যবস্থা করতে বলেছেন বিচারপতিরা।
সুপ্রিম কোর্টের এ দিনের নির্দেশে আর্থিক সঙ্কটে জর্জরিত রাজ্য সরকারের ঘাড়ে অতিরিক্ত চাপ পড়বে বলেই মনে করছেন মহাকরণের কর্তারা। সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় রায়ের প্রতিলিপি না দেখে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকারের আইনজীবী তালিকায় নাম থাকা চাকরি প্রার্থীদের পক্ষেই সওয়াল করেছিলেন। মামলায় রাজ্য সরকারের অন্যতম আইনজীবী তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা রাজ্য সরকারের প্যানেলের পক্ষেই সওয়াল করেছিলাম। কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ওই নিয়োগ বাতিল করে দিয়েছিল। হাইকোর্টের সেই নির্দেশ খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট।”
চতুর্থ শ্রেণির ১৪৪৬টি পদে নিয়োগের জন্য রাজ্য মন্ত্রিসভার অনুমোদন নিয়ে ২০০৬ সালে উদ্যোগী হয় সেচ দফতর। নিয়োগের জন্য কর্মসংস্থান কেন্দ্র থেকে নাম চেয়ে পাঠানো হয়। নিয়ম মতো, একটি পদ পিছু ২০ জনের নাম পাঠায় কর্মসংস্থান কেন্দ্র। সব মিলিয়ে প্রায় ২৪ হাজার ৯২০ কর্মপ্রার্থীর নাম পাঠায় তারা। এ ছাড়াও বিজ্ঞাপন না দিয়ে নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরুর বিরুদ্ধে যাঁরা রাজ্য প্রশাসনিক ট্রাইবুন্যাল (স্যাট) এবং কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন, সেই রকম আরও কয়েক হাজার জনকে প্রার্থী করার জন্য চিহ্নিত করা হয়। সব মিলিয়ে প্রায় ৫৭ হাজার কর্মপ্রার্থীকে মৌখিক পরীক্ষায় ডাকে সেচ দফতর। সেটা ছিল ২০০৮ সাল। তার পর প্রায় দু’বছর ধরে মৌখিক পরীক্ষা চলে।
২০১০ সালের মাঝামাঝি ১৪৪৬ জনের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে সেচ দফতর। সেই তালিকা বিভিন্ন সার্কেল অফিসে টাঙিয়েও দেওয়া হয়। ঠিক হয়, নির্বাচিত প্রার্থীদের পুলিশি ছাড়পত্র নেওয়ার জন্য চিঠি পাঠানো হবে। কিন্তু এই নিয়োগ নিয়ে নানা মহলে স্বজনপোষণের অভিযোগ ওঠায় সরকার এক সদস্যের কমিশন গঠন করে। ফলে চিঠি পাঠানোর প্রক্রিয়া আটকে যায়। অন্য দিকে, ওই তালিকাকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা হয়। বিজ্ঞাপন না-দিয়ে সরকার নিয়োগের পরীক্ষা নেওয়ায় তার বিরুদ্ধে স্যাটে মামলা করেন ওই দু’জন।
সুপ্রিম কোর্টে আবেদনকারীদের পক্ষে আইনজীবীরা বলেন, ৫৭ হাজারের বেশি মানুষ আবেদন করেছিলেন। তাদের মধ্যে ১৪৪৬ জন সফল হন। ওই নিয়োগের বিরুদ্ধে মোত্র দু’জন স্যাটে মামলা করেছিলেন। তাঁদের প্রশ্ন, দু’জনের জন্য এত জনকে কেন বঞ্চিত করা হবে, সুপ্রিম কোর্টে সেই প্রশ্ন তোলেন তাঁরা।
বিচারপতিরা বলেন, যাঁদের নাম তালিকায় রয়েছে, তাঁদের তো কোনও দোষ নেই। এটা মানুষের রুটিরুজির প্রশ্ন। তাই ২০১০ সালের তালিকা বাতিল হবে না। তবে বিজ্ঞাপন দিয়ে নিয়োগের আবেদনপত্র চাওয়া হয়নি বলে যে দু’জন মামলা করেছিলেন, তাঁদের চাকরি দেওয়ার বিষয়টিও রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করতে হবে।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.