আজ টেক্কা মনমোহনকে, ঘোষণা মোদীর
স্বাধীনতা দিবসের ঠিক আগে প্রত্যয়ে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলেন নরেন্দ্র মোদী। চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের দিকে। দলের প্রচারের মুখ হিসেবে তুলে ধরলেও বিজেপি এখনও তাঁকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা করেনি বিভিন্ন সমীকরণকে মাথায় রেখে। কিন্তু গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী যে নিজেকে সেই জায়গাতেই দেখছেন, আরও এক বার তা স্পষ্ট করে দিলেন আজ। বরং আরও এক ধাপ এগিয়ে তিনি আজ বুঝিয়ে দিতে চাইলেন, আগামী বছর তাঁর হাত দিয়েই তেরঙ্গা উঠবে লাল কেল্লায়।
সরাসরি অবশ্য এমন কোনও দাবি করেননি মোদী। কাল গুজরাতের ভুজে লালন কলেজের প্রাঙ্গনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবেন মোদী। তার আগে আজ তিনি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে কটাক্ষ ছোড়েন, লালন কলেজ থেকে তিনি যখন বক্তৃতা দেবেন, তার বার্তা পৌঁছে যাবে দিল্লির লাল কেল্লাতেও, যেখানে বক্তৃতা দেবেন মনমোহন সিংহ। মোদীর কথায়, “গোটা দেশ জানতে চায়, লাল কেল্লায় কী বলা হল, আর এখানে কী বলা হল। এক দিকে থাকবে একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি। আর অন্য দিকে থাকবে কাজের খতিয়ান। এক দিকে থাকবে নিরাশার আবহ, আর অন্য দিকে আশা।”
ভূজে তাঁর ক্ততার সঙ্গে লাল কেল্লায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতার এই তুলনা টেনেই মোদী এ দিন স্পষ্ট করে দেন, আগামী বছরের ১৫ অগস্ট নিজেকে কোথায় দেখতে চাইছেন তিনি। লোকসভা নির্বাচনের আগে শেষ স্বাধীনতার দিবসে আগে এতটাই প্রত্যয়ী তিনি।
স্বাভাবিক ভাবেই মোদীর এই বক্তব্যে কংগ্রেস ক্ষুব্ধ। কপিল সিব্বল বলেন, “প্রধানমন্ত্রী কী বলতে চলেছেন, তা আগেভাগে কী করে জেনে গেলেন মোদী? সেই বক্তৃতা নিরাশা ছড়াবে না আশা, তা-ই বা কী করে বলে দিলেন? মোদী যখনই কোনও মন্তব্য করেন, তখনই ভুল তথ্য দেন। কালও তাই করবেন।”
মোদীর মন্তব্যে অখুশি বিজেপি-র কিছু নেতাও। একে ঔদ্ধত্যের প্রকাশ হিসেবেই দেখছেন তাঁরা। ঘরোয়া ভাবে তাঁরা এমনও বলছেন, “অহেতুক তাড়াহুড়ো করছেন মোদী। এই রকম আগ্রাসী মেজাজ সব সময় ঠিক ফল না-ও দিতে পারে।” বিজেপি-তে মোদীকে নিয়ে কোন্দল উস্কে দিতে সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী রাজীব শুক্ল বলেন, “গোড়া থেকে বলে আসছি মোদী উদ্ধত। তাঁর দলের নেতারাও সেটা বিলক্ষণ জানেন। এমন ব্যক্তি রাজনীতির শিখরে গেলে দেশের যে কী দশা হবে, প্রত্যেকেই তা বুঝতে পারছেন।”
মোদী-ঘনিষ্ঠ নেতাদের অবশ্য দাবি, মানুষ বিকল্প চান। মনমোহনের বিকল্প হিসেবে তাঁরা মোদীর মতো দক্ষ প্রশাসককেই পছন্দ করছেন। মোদীকেও তাই সেই বিকল্পকে মেলে ধরতে হবে মানুষের সামনে। সেই লক্ষ্যেই মোদী এ দিন বলেছেন, “গত বিধানসভা নির্বাচনেই গুজরাত পাশ করেছে পরীক্ষায়। ইউপিএ-র পরীক্ষা ২০১৪ সালে। ভোটে মানুষ সব কিছুর হিসেব নেবে।” সেই হিসেব চাওয়ার ভঙ্গিতেই মনোমহনের সঙ্গে গাঁধী পরিবারকেও সমান তীব্রতায় আক্রমণ করে যেতে বদ্ধপরিপরিকর মোদী।
সংসদে এক দিন হট্টগোলের পর বিজেপি নেতারা সনিয়া গাঁধীর জামাই রবার্ট বঢরার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে আক্রমণে রাশ টানলেও মোদী কিন্তু লাগাম কষতে নারাজ। আজও তিনি নাম না করে বিঁধেছেন, “অনেকে এখন অপেক্ষা করেন কবে সরকারি জামাই হওয়ার সুযোগ আসে।”
নিজেকে ভাবী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরার জন্য নিজের ভাবমূর্তির ব্যাপারেও মোদী এখন যথেষ্ট কৌশলী। তিনি শুধুই শিল্পবন্ধু এই তকমা ঘোচাতে ৯ থেকে ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোদী এক মহাসম্মেলন করবেন কৃষকদের নিয়ে। সেখানে দেশ-বিদেশ থেকে কৃষি সংক্রান্ত শিল্পপতি ও বিভিন্ন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রীরা আমন্ত্রিত হবেন সেখানে।
পাশাপাশি দলের প্রচার কমিটির প্রধান হিসেবেও প্রচারের কৌশল নিয়ে নিরন্তর আলোচনা করছেন মোদী। শনিবার দিল্লিতে এসে তিনি দলের মুখপাত্ররা কে কী বিষয়ে মুখ খুলবেন তার প্রশিক্ষণ দেবেন। দলের অন্য শীর্ষ নেতারাও সেখানে উপস্থিত থাকবেন।
আজই দলের নেতা গোপীনাথ মুন্ডে, রবিশঙ্কর প্রসাদরা কংগ্রেসের ‘অপশাসন’-এর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র প্রকাশের প্রাথমিক পরিকল্পনা তৈরি করেছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে দলের নেতারা মানুষের ক্ষোভ শুনে ইউপিএ-র বিরুদ্ধে ওই চার্জশিট তৈরি করবেন। একটি নতুন ওয়েবসাইটও তৈরি করা হয়েছে। সাধারণ মানুষ বিভিন্ন স্যোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তাঁদের ক্ষোভ প্রকাশ করতে পারবেন। এই সবই হচ্ছে মোদীর দেখানো পথে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.