উড়ালপুলের কাজ শেষ করার দাবিতে অনশন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
অবিলম্বে ঝাড়গ্রাম শহরে অসমাপ্ত উড়ালপুলের কাজ শেষ করার দাবিতে মঙ্গলবার দুপুর ১টা থেকে ঝাড়গ্রামের এসডি অফিসের সামনে ‘আমরণ অনশন’ শুরু করেছেন যুব তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম শহর সভাপতি সুদর্শন ভট্টাচার্য। সুদর্শনের অবশ্য দাবি, “একজন নাগরিক হিসেবেই আমি ঝাড়গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে অনশনে বসেছি। শহরের মেন রোডে নির্মীয়মান উড়ালপুলটির কাজ কোনও অজ্ঞাত কারণে শেষ করা হচ্ছে না। এর ফলে ঝাড়গ্রামবাসী-সহ অসংখ্য মানুষ নিদারুণ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।” উপযুক্ত লিখিত প্রতিশ্রুতি না-পাওয়া পর্যন্ত তাঁর শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন সুদর্শন। এ দিন এসডিও অফিসের উল্টোদিকে রীতিমতো মঞ্চ বেঁধে অনশন শুরু করেন সুদর্শন। এই কর্মসূচিকে অরাজনৈতিক প্রমাণ করার জন্য অনশন-মঞ্চে কেবলমাত্র মহাত্মা গাঁধীর প্রতিকৃতি রাখা হয়েছে। ঝাড়গ্রাম পুরসভা গত তিন দশক ধরে বামেদের দখলে। |
|
অসমাপ্ত উড়ালপুলের কাজ। ফাইল চিত্র । |
আগামী নভেম্বরে ঝাড়গ্রাম পুর নির্বাচন হওয়ার কথা। তার আগে যুব তৃণমূল নেতা সুদর্শনের এই কর্মসূচিকে ঘিরে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে।
ঝাড়গ্রাম শহরের নতুনডিহি রেলওয়ে ক্রশিং সংলগ্ন ৫ নম্বর রাজ্য সড়কে (এটি শহরে মেন রোড হিসেবে পরিচিত) দীর্ঘ প্রতীক্ষিত উড়ালপুল তৈরির কাজ শুরু হয় তৃণমূলের সরকার রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পরে ২০১১ সালের অগস্টে। উড়ালপুল তৈরির জন্য রেল ও রাজ্য সরকার মোট ১২ কোটি টাকা বরাদ্দ করে। পরে প্রকল্প ব্যয় কিছুটা বাড়ে। পুরো কাজটার দায়িত্ব নেয় রেল। রেলের তরফেই টেন্ডার ডেকে কলকাতার একটি ঠিকাদার সংস্থাকে নিয়োগ করা হয়। গত দু’বছরে উড়ালপুল তৈরির ৮৫ শতাংশ কাজ হয়ে গিয়েছে। অ্যাপ্রোচ রাস্তা তৈরির জন্য উড়ালপুলের উত্তরপ্রান্তে বাছুরডোবার দিকে গার্ড ওয়াল তৈরির কাজ প্রায় শেষের মুখে। কিন্তু দক্ষিণপ্রান্তে জুবিলি বাজারের দিকে গার্ড ওয়াল তৈরির কাজ বন্ধ রয়েছে। রেল ক্রশিংয়ের দক্ষিণদিকে জুবিলি বাজার সংলগ্ন এলাকায় অবাধ যাতায়াতের জন্য উড়ালপুলের তলায় দু’টি আন্ডারপাস তৈরির দাবি করেছেন শহরবাসীর একাংশ। উড়ালপুলের নকশায় আন্ডারপাস নেই। এই কারণেই জটিলতা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে প্রস্তাবিত আন্ডারপাসের বিষয়ে পূর্ত সড়ক দফতরের পরিকল্পনা বিভাগের ইঞ্জিনিয়ারেরা সমীক্ষা করে গিয়েছেন। কিন্তু কাজ এগোয় নি। |
|
চলছে অনশন। ঝাড়গ্রামে ছবি তুলেছেন দেবরাজ ঘোষ। |
খড়গপুর রেল প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “যে অংশে কাজ বন্ধ রয়েছে সেটি রাজ্য সরকারের এলাকা। উড়ালপুলের নকশা প্রস্তুত করেছে রাজ্য পূর্ত সড়ক দফতরের পরিকল্পনা বিভাগ। আন্ডারপাস করতে হলে ওই দফতরকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এ ব্যাপারে এখনও আমাদের কিছু জানানো হয় নি।” ঝাড়গ্রামের মহকুমাশাসক বাসব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “রেল কর্তৃপক্ষের বরাতপ্রাপ্ত সংস্থাটি উড়ালপুলটি তৈরি করছে। ওই এলাকায় আইনশৃঙ্খলা জনিত কোনও সমস্যা নেই। কেন কাজ বন্ধ রয়েছে সেটা ওরাই বলতে পারবে।” মহকুমাশাসক অবশ্য জানিয়েছেন, আগামী ১৬ অগস্ট বিষয়টি নিয়ে রেল কর্তারা ঝাড়গ্রামে আলোচনা করতে আসছেন।
এ দিনই ঝাড়গ্রামের সিপিএম পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার কলকাতায় পূর্ত সড়ক দফতরের পরিকল্পনা বিভাগে গিয়ে ঝাড়গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে দু’টি আন্ডারপাস তৈরির জন্য লিখিত দাবিপত্র জমা দেন। প্রদীপবাবু বলেন, “উড়ালপুলের মূল নকশাটি পূর্ত সড়ক দফতরের পরিকল্পনা বিভাগ তৈরি করেছিল। ওই দফতর থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, শীঘ্রই নকশায় দু’টি আন্ডারপাসকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহের মধ্যে আন্ডারপাস-সহ পরিবর্তিত নকশা রেল কর্তৃপক্ষের কাছে জমা পড়বে বলে আশা করছি। এর ফলে জটিলতা কাটার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।”
|
পুরনো খবর: রাস্তা আটকে উড়ালপুল, নকশা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন |
|