|
|
|
|
স্কুলে ছুটি দিয়ে বৌভাতের আসর, অভিযুক্ত সিপিএম |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
পড়ুয়াদের ছুটি দিয়ে স্কুল চত্বরে বসল বৌভাতের আসর। সিপিএম কর্মীর ছেলের বিয়ে উপলক্ষে মঙ্গলবার দুপুরে এমনটাই ঘটেছে পাঁশকুড়ার কেশাপাট পঞ্চায়েতের জিয়াখালি মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রে। এলাকায় গিয়ে তৃণমূলের প্রাথমিক শিক্ষা সেলের নেতা কিশোর পাহাড় ও সাংবাদিকরা মার খেয়েছেন বলেও অভিযোগ।
যে পূর্ব মেদিনীপুরে তৃণমূলের ‘একচ্ছত্র আধিপত্য’, সেখানে সিপিএমের এই ‘দাপটে’ বিস্মিত রাজনৈতিক মহল। তার চেয়েও বড় বিস্ময়, এই রকম একটি কারণে স্কুল কর্তৃপক্ষ ছুটি দিলেন কী ভাবে? প্রধান শিক্ষক শঙ্কর সামন্ত বলেন, “পরিচালন সমিতির সঙ্গে মৌখিক আলোচনা করে স্কুলবাড়ি ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।” কিন্তু এই কারণে স্কুল বন্ধ করা যায় কী? প্রধান শিক্ষক মেনে নেন, “এটা ঠিক নয়। পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি ও স্থানীয় নেতৃত্বের চাপেই করতে হয়েছে।” |
|
স্কুল চত্বরে চলছে ম্যারাপ বেঁধে চলছে বিয়ের অনুষ্ঠান।— নিজস্ব চিত্র। |
পাঁশকুড়া ১ পঞ্চায়েত সমিতি ও কেশাপাট পঞ্চায়েতে এ বার জিতেছে তৃণমূল। তবে, জিয়াখালি বুথে ১৯৭৮ সাল থেকে জিতছে সিপিএম। এ বারও জিতেছে তারাই। তমলুকের তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “জেলার কিছু জায়গায় সিপিএমের জোর থেকে গিয়েছে। সেখানেই ওরা এই সব কাণ্ড ঘটাচ্ছে। এগুলো বন্ধ করতে হবে।” সিপিএমের স্থানীয় নেতৃত্ব ঘটনার দায় নিতে চাননি। তবে দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নিরঞ্জন সিহি অবশ্য বলেন, “স্কুল বন্ধ করা ঠিক হয়নি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
জিয়াখালি মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। পড়ুয়া ১০৮ জন। ছাত্র রঞ্জিত খাঁড়া বলে, “সোমবার স্যারেরা জানান মঙ্গলবার স্কুল ছুটি থাকবে। তবে কী কারণে ছুটি বলেননি।” এ দিন সকাল থেকে স্কুল চত্বরের মণ্ডপ বেঁধে রান্নাবান্না শুরু হয়ে যায়। সব তদারক করছিলেন পাত্র গোপাল খাটুয়ার বাবা নন্দদুলাল খাটুয়া। স্থানীয় সিপিএম কর্মী নন্দদুলালবাবু বলেন, “পরিচালন সমিতির অনুমতি নিয়েই অনুষ্ঠান করছি।” পরিচালন সমিতির তৃণমূলের বিধায়ক প্রতিনিধি অশোক মহাকাল অবশ্য দাবি করেছেন, “এই নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি।”
অযথা স্কুল ছুটি দেওয়ায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা। স্থানীয় তপন পাত্র বলেন, “এক জনের বিয়ের জন্য এত জনের পড়া বন্ধ করা অনৈতিক।” ওই মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রের পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা বিডিও পূর্ণিমা দে-র বক্তব্য, “প্রধান শিক্ষককে ডেকেছি। এমন ঘটনা যাতে আর না ঘটে তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” |
|
|
|
|
|