|
|
|
|
বন্ধ ঘরে মিলল দুই সন্তান-সহ দম্পতির দেহ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • হলদিয়া |
বন্ধ বাড়ির ভিতরে এক দম্পতি ও তাঁদের ছেলে-মেয়ের মৃতদেহ মিলল। মঙ্গলবার দুপুরে হলদিয়া টাউনশিপের বন্দর আবাসনে এই ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায়। বাড়ির কর্তা শেখ রেজাউল ইসলামের (৪৫) দেহটি গলায় শাড়ির ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলছিল। ওই ঘরের মেঝেতেই পড়েছিল তাঁর স্ত্রী মমতাজ বিবি (৩৫), মেয়ে রায়তা খাতুনের (১৩) দেহ। ছেলে মিরাজ রাজের (১০) নিথর দেহ পড়েছিল পাশের ঘরের বিছানায়। পেশায় হলদিয়া বন্দরের মেরিন অপারেশনের কর্মী রেজাউল স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েকে বিষ খাইয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন বলে মনে করছে পুলিশ। একটি সুইসাইড নোটও মিলেছে বলে দাবি পুলিশের। জেলা পুলিশ সুপার সুকেশকুমার জৈন বলেন, “স্ত্রী’র সঙ্গে অন্য ব্যক্তির সম্পর্ক আছে বলে সন্দেহ করতেন ওই ব্যক্তি। সুইসাইড নোটেও তাই লিখেছেন।”
আদতে নন্দীগ্রামের কাঞ্চননগরের বাসিন্দা রেজাউল ইসলাম ঈদের ছুটিতে সপরিবারে গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলেন। সোমবার সকালে বন্দর আবাসনের (ক্লাস্টার ৫, ১১৩ কে) ফ্ল্যাটে ফিরে আসেন। মঙ্গলবার সকাল থেকে ওই পরিবারের কারও সাড়াশব্দ না পেয়ে সন্দেহ হয় পড়শিদের। ডাকাডাকি করেও সাড়া না মেলায় জাফরি দিয়ে উঁকি মেরে ঘরের ভিতরে রেজাউলের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান তাঁরা। এরপরেই খবর যায় পুলিশে। টাউনশিপ ফাঁড়ির পুলিশ এসে দরজা ভেঙে দেহগুলি উদ্ধার করে এবং ময়না-তদন্তে পাঠায়।
পুলিশ মনে করছে, রেজাউল নিজেই বিষ খাইয়ে স্ত্রী ও সন্তানদের খুন করার পরে আত্মঘাতী হয়েছেন। সিরাজের নাকে রক্ত লেগে রয়েছে। তা থেকে পুলিশের অনুমান, ছেলের মৃত্যু নিশ্চিত করতে শ্বাসরোধ করেছিলেন রেজাউল। তবে, দীর্ঘ দিনের প্রতিবেশী শান্ত ও চাপা স্বভাবের প্রৌঢ় রেজাউল যে এমনটা করতে পারেন, তা বিশ্বাস হচ্ছে না আশপাশের বাসিন্দাদের। পড়শি জবা মাণ্ডি বলেন, “ওরা বাড়ি থেকে ফেরার পরও কোনও অশান্তি শোনা যায়নি। এ দিন সকালে ডাকাডাকি করেও সাড়া না পেয়ে আমাদের সন্দেহ হয়। দরজা-জানলা সব ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। পুলিশ এসে দেহগুলো যখন বার করছিল, বিশ্বাস হচ্ছিল না।” ঘটনার কথা শুনে নন্দীগ্রাম থেকে ছুটে এসেছেন রেজাউলের জামাইবাবু শেখ জাহাঙ্গির, খুড়তুতো ভাই শেখ আনোয়ার। আনোয়ার বলেন, “বাড়িতে ঈদের সময়ও তো হাসিখুশি দেখাচ্ছিল ওদের। হঠাৎ কী হল বুঝতে পারছি না।” হলদিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, “তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত ভাবে বলা সম্ভব নয়।” |
|
|
|
|
|