|
|
|
|
সরব ঝাড়গ্রামের ব্যবসায়ীরা |
রাস্তা আটকে উড়ালপুল, নকশা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
মান্ধাতা-পদ্ধতিতে তৈরি হচ্ছে ঝাড়গ্রামের উড়ালপুল। আর এতেই সমস্যায় পড়েছেন ঝাড়গ্রাম শহরের মেন রোড ও সংলগ্ন জুবিলি বাজারের কয়েকশো ব্যবসায়ী।
উড়ালপুল তৈরি করতে গিয়ে আস্ত একটি রাস্তা অবরুদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ মেন রোড ব্যবসায়ী সমিতির। ফলে, রাস্তার দু’পাশে মেন রোড জুবিলি বাজারের দোকানগুলির ব্যবসা করাই এখন দুষ্কর হয়ে পড়েছে। এরপর অ্যাপ্রোচ রাস্তার গার্ড-ওয়াল তৈরি হলে বেশ কিছু দোকানে ঢোকার রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের। বিহিত চেয়ে দফায় দফায় রেল ও পূর্ত দফতর-সহ প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে স্মারকলিপি দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। মেন রোড ব্যবসায়ী সমিতির তরফে তথ্য জানার অধিকার আইনে উড়ালপুলের মূল নকশার প্রতিলিপি চেয়েও আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু সেই প্রতিলিপি দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। পরিস্থিতির কথা জানিয়ে নাগরিকদের একাংশ লিফলেট বিলিও শুরু করেছেন। আশা জনমত গঠন করে যদি সুরাহা হয়। |
|
এই সেই উড়ালপুল। ছবি: দেবরাজ ঘোষ। |
ঝাড়গ্রাম শহরের নতুনডিহি রেল ক্রসিং সংলগ্ন ৫ নম্বর রাজ্য সড়কে (এটি শহরে মেন রোড হিসেবে পরিচিত) দীর্ঘ প্রতীক্ষিত উড়ালপুল তৈরির কাজ শুরু হয় গত বছর অগস্টে। উড়ালপুল তৈরির জন্য রেল ও রাজ্য সরকার মোট ১২ কোটি টাকা বরাদ্দ করে। পুরো কাজের দায়িত্ব নেয় রেল। রেলের তরফেই টেন্ডার ডেকে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়।
এক বছরে উড়ালপুল তৈরির কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। কিন্তু রাস্তার ধারের দোকানগুলির গা ঘেঁষে এমন ভাবে উড়ালপুলটি তৈরি করা হচ্ছে, যে এখনই দোকানগুলিতে যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে। রেল ক্রসিংয়ের দক্ষিণ দিকে জুবিলি বাজার সংলগ্ন এলাকায় ঘিঞ্জি দোকানপাটের জন্য মেন রোডটি এমনিতেই অপরিসর। ওই রাস্তায় পুব দিকের দোকানগুলি রয়েছে সরকারি জায়গায়। পশ্চিম দিকের দোকানগুলি ব্যক্তিগত রায়তি জমিতে। অভিযোগ, রায়তি জমির দোকানগুলির একেবারে গা-বরাবর গার্ড-ওয়াল তৈরির জন্য চিহ্নিত করেছে বরাতপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থা। ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, মূল নকশায় বলা ছিল, উড়ালপুলের নীচে দু’পাশে ১০ ফুট করে চওড়া সংযোগকারী রাস্তা থাকবে। এখন দেখা যাচ্ছে, দোকানের গা ঘেঁষেই উড়ালপুল তৈরি করা হচ্ছে। ফলে দু’পাশের লিঙ্ক রাস্তা কী ভাবে করা সম্ভব তা বোধগম্য হচ্ছে না। মেন রোড ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সন্তোষ সোমানি বলেন, “এখন সর্বত্রই কম জায়গায় আধুনিক প্রযুক্তিতে সরু স্তম্ভের উপর উড়ালপুল তৈরি হয়। অথচ ঝাড়গ্রামে রাস্তা জুড়ে উড়ালপুল হচ্ছে একেবারে পুরনো পদ্ধতিতে। কী ভাবে এমন নকশা অনুমোদন করা হল, তা আমাদের বোধগম্য হচ্ছে না। এর ফলে মেন রোডের ব্যবসা মার খাবে। পণ্যবাহী গাড়িগুলি দোকানে ঢুকতে পারবে না। আগুন লাগলে দমকল ঢোকার মতো পথও থাকবে কি-না সন্দেহ।”
কেন ব্যক্তিগত জমিতে থাকা দোকানগুলিকে বলির পাঁঠা করা হচ্ছে সেই প্রশ্নও তুলেছেন কৃষ্ণা সাউ, শিবরাম আচার্য-এর মতো মেন রোডের ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের যাতে সমস্যা না হয়, তা দেখা হবে বলে রেল প্রশাসনের তরফে অবশ্য মৌখিক আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে পূর্ত বিভাগ দায় এড়িয়ে জানিয়েছে, উড়ালপুল তৈরির দায়িত্বে রয়েছে রেল প্রশাসন। তবে রেল কর্তাদেরও মুখে কুলুপ। এই পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের প্রশ্ন, “আমরা উন্নয়নে ব্যাঘাত ঘটাতে চাই না। কিন্তু রুটিরুজিতে টান পড়লে আমরাই বা দাঁড়াব কোথায়?” |
|
|
|
|
|