মেরামতের দাবিতে রাস্তা কেটে বিক্ষোভ
রাস্তা কেটে প্রতিবাদ জানানোর ঘটনা নতুন নয়। একদা রাস্তা কেটে বিক্ষোভের এই পথ দেখিয়েছিলেন নন্দীগ্রামবাসী। আর এ বার রাস্তা মেরামতের দাবিতে রাস্তা কাটা হল পশ্চিম মেদিনীপুরের চাঁইপাটের কাছে পায়রাশি এলাকায়।
দাসপুরের সুলতান নগর থেকে গোপীগঞ্জ পর্যন্ত দীর্ঘ দশ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের দাবিতে সোমবার আন্দোলনে নেমেছিলেন এলাকার প্রায় ৩০টি গ্রামের বাসিন্দারা। প্রশাসনের লোক না আসায় সোমবার সন্ধ্যায় ওই রুটের চাঁইপাটের কাছে পায়রাশি এলাকায় রাস্তা কেটে দেন গ্রামবাসীরা। অবশেষে মঙ্গলবার প্রশাসনের তরফে লিখিত মুচলেকা হাতে পেয়ে আন্দোলনে ইতি টানলেন তাঁরা। বুজিয়ে দেন রাস্তার কাটা অংশও।
কাটা রাস্তার সামনে বিক্ষোভে গ্রামবাসী।
প্রশাসন সূত্রে খবর, সমস্যা মেটানোর জন্য আন্দোলনকারীদের দফায় দফায় অনুরোধ করা হলেও সাড়া মেলেনি। ফের মঙ্গলবার সকালে ওই রুটে রাস্তা আটকে শুরু হয় আন্দোলন। এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হওয়ায় এলাকায় মোতায়েন করা হয় পুলিশও। মঙ্গলবার বেলা ১২টা নাগাদ সোনাখালি বিডিও অফিসের প্রশাসনিক দফতরে স্থানীয় বিডিও অনুপ মণ্ডল, পূর্ত দফতরের জেলা বাস্তুকার অশোক মণ্ডল, ঘাটালের সহকারী বাস্তুকার লক্ষ্মীকান্ত মাইতি-সহ প্রশাসনিক আধিকারিকরা আন্দোলনকারীদের বৈঠকে বসার জন্য অনুরোধ করেন। ঘণ্টা খানেক ধরে বৈঠক চলার পর সরকারি আধিকারিকরা প্রতিশ্রুতি দেন, আগামী ৭ ডিসেম্বর থেকে ওই রাস্তায় ফের কাজ শুরু হবে এবং কাজ শেষ হবে ২০১৩ সালের ১৫ জানুয়ারীর মধ্যে। এছাড়াও যে সাত কিলোমাটির রাস্তা নতুনভাবে তৈরির পরেও এখনই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে তারও সংস্কারের কথা জানান তাঁরা। তবে আন্দোলনকারীরা মৌখিক এই আশ্বাসে সন্তুষ্ট না হয়ে জানান, তাঁদের লিখিত মুচলেকা দিতে হবে। আন্দোলনকারীদের চাপে পড়ে নির্দিষ্ট দিনের সময়সীমা এবং বৈঠকের সমস্ত আলোচনার বিষয়বস্তু লিখিত দিতে বাধ্য হয় প্রশাসন। এরপরই উঠে যায় আন্দোলন।
পূর্ত দফতরের জেলা বাস্তুকার অশোক মণ্ডল বলেন, “চলতি মাসের ৭ তারিখ থেকেই কাজ শুরু হবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাকে ২০১৩ সালের ১৫ জানুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। যাতে ওই তারিখের মধ্যে কাজ শেষ হয় তার জন্য দফতরের অফিসারেরা নজরদারি চালাবেন।” এখন প্রশ্ন, কেন্দ্রীয় সরকারের আরআইডিএফ প্রকল্পে ওই রাস্তার (১০কিমি) জন্য ৪ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। সুলতান নগর থেকে সোনাখালি পযর্ন্ত নতুন সাত কিলোমিটার রাস্তাও হয়েছে। কিন্তু তৈরির মাস দুয়েকের মধ্যে কেন নষ্ট হয়ে গেল রাস্তাটি? এ ব্যাপারে ঘাটালের সহকারী বাস্তুকার লক্ষ্মীকান্ত মাইতি বলেন, “আমরা তদন্ত করেছিলাম। ওই রাস্তায় পিচ ঢালার পর দিনই টানা বৃষ্টি হয়েছিল। ফলে ওই সমস্যা দেখা দিয়েছে। বাদবাকি সংশ্লিষ্ট সংস্থা দফতরের ওয়ার্ক অর্ডার মেনেই কাজ করেছে।”
রাস্তা সারাতে প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক।
কিন্তু পাশাপাশি প্রশ্ন, রাস্তা সংস্কারের দাবি জানাতে আন্দোলনকারীরা আরও ক্ষতবিক্ষত করলেন কেন রাস্তাটিকে? রাস্তাটি যতটুকু যাতায়াতের উপযুক্ত ছিল তারও অবনতি করার কারণই বা কী? আন্দোলনকারী শুভ মাঝি বলেন, “আমরা চেয়েছিলাম প্রশাসনের লোকজন এখানে দেখে পরিস্থিতি দেখুক। কিন্তু তাঁরা না আসায় ক্ষোভে আমরা এই কাজ করেছি। তবে সমাধানের পর কাটা ওই রাস্তা আমরাই আবার মেরামত করে দিয়েছি।”

—নিজস্ব চিত্র।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.