|
|
|
|
শিল্পতালুকের জমি দেখলেন শিল্পমন্ত্রী |
অভিজিৎ চক্রবর্তী • দুর্গাবাঁধ |
শিল্প গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গোয়ালতোড়ে প্রস্তাবিত সেই ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাবে’র জন্য জমি দেখতে বৃহস্পতিবার এলাকায় এলেন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি এ দিন স্থানীয় দুর্গাবাঁধে সরকারি বীজ খামারের জমি ঘুরে দেখেন। মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন শিল্প উন্নয়ন নিগমের এম ডি কৃষ্ণ গুপ্ত, শিল্প দফতরের প্রধান সচিব সি এম বাচোয়াত, পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত, পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী প্রমুখ।
১৯৬৫ সালে জিরাপাড়া পঞ্চায়েতের অধীন দুর্গাবাঁধে এই বীজ খামার তৈরি হয়েছিল। তৎকালীন সরকারের লক্ষ্য ছিল, উন্নতমানের পাটের বীজ তৈরি করে চাষিদের সরকারি মূল্যে বিলি করা হবে। এখানে কৃষি দফতরের প্রায় হাজার (৯৫০.১৭) একর জমি রয়েছে। সেই জমি এখন আর পুরোপুরি চাষের কাজে ব্যবহার হয় না। খামারটিও রুগণ্। খামারটিকে বাঁচিয়েই যাতে বাকি অংশে শিল্প স্থাপন করা যায়, সেই চেষ্টা চলছে। এ দিন শিল্পমন্ত্রী বলেন, “এখানে শিল্প তালুক হলে স্থানীয় মানুষ কাজ পাবেন। এলাকার আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি হবে। স্কুল, কলেজ হাসপাতাল, সবই হবে।” |
|
গোয়ালতোড়ে শিল্পমন্ত্রীকে ফার্মকর্মীদের অভ্যর্থনা। |
খামারের অফিসঘরে এ দিন প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন পার্থবাবু। প্রাথমিক পরিকাঠামো নিয়ে কথা হয়। শিল্প তালুকের জন্য জমি চিহ্নিত করে পাঁচিল দেওয়ার জন্য ও গোয়ালতোড় শহর থেকে দুর্গাবাঁধ পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার রাস্তাটি চওড়া করতে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের নির্দেশ দেন মন্ত্রী। পরিকাঠামো উন্নয়নের বাকি করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে পার্থবাবু বলেন, “আমি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই এখানে এসেছি। ফিরে গিয়ে তাঁকে রিপোর্ট দেব। এখানে পরিকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ আমরা আগে শুরু করে দেব। পরে শিল্পপতিদের জায়গাটি এনে দেখাবো” তবে কী শিল্প এখানে আসবে, সংখ্যাতেই বা কত তা এ দিন জানাতে পারেননি শিল্পমন্ত্রী। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি শুধু বলেন, “একাধিক ছোট এবং মাঝারি শিল্প হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। আবার কোনও শিল্পপতি যদি পুরো জমি নিয়ে বড় শিল্প করতে চান তাতেও আমাদের আপত্তি নেই।” প্রসঙ্গক্রমে শালবনিতে জিন্দলদের প্রস্তাবিত প্রকল্প নিয়েও কথা বলেন পার্থবাবু। তাঁর কথায়, “সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সজ্জন জিন্দলের বৈঠকে শালবনিতে ৬৬০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ প্রকল্প চালুর কথা হয়েছে। আমরা সরকারের তরফে এর জন্য সব রকমের সাহায্য করব। এখানে প্রায় পাঁচ হাজার কর্মসংস্থান হবে।” |
|
গোয়ালতোড়ে প্রস্তাবিত ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাবে’র জন্য জমি দেখতে বৃহস্পতিবার এলাকায় শিল্পমন্ত্রী। |
নিশ্চিন্দিপুর, পূর্ণিশোল এবং কেশিয়া এই তিনটি গ্রাম নিয়েই তৈরি হয়েছিল বীজ খামারটি। নিশ্চিনিন্দিপুর মৌজায় ৬৫২.২০ একর, পূর্ণিশোলে ১২৫.৪৮ এবং কেশিয়া মৌজায় ১৭২.৪৮ একর জমি রয়েছে। রয়েছে তিনটি পুকুরও। আগে ৭৬৫ একর জমিতে চাষ হলেও এখন মাত্র ৩৬৫ একর জমিতে চাষ হচ্ছে। প্রথমে এখানে পাটের বীজ তৈরি হত। পরে আমনের বীজ, ডাল, তৈল বীজও উৎপন্ন হয়। আগের তুলনায় কৃষিশ্রমিকের সংখ্যাও কমেছে। ১০২৬ সংখ্যাটা এসে দাঁড়িয়েছে ১১১-য়। চাষের পর এখান থেকে বীজ পাঠানো হয় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বীজ নিগমে। তবে খুবই অল্প পরিমাণে। খামারের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক তাপস ঘোষ বলেন, “এখানে নানা সমস্যা। বিশেষ করে কর্মীর অভাবে বেশিরভাগ জমিতেই চাষ করা যাচ্ছে না।”
জানা গিয়েছে, প্রায় হাজার একর জমির মধ্যে ২৫ একর আশপাশের গ্রামের বাসিন্দারা দখল করে নিয়েছে। কেউ সেখানে চাষ করেন, কেউ বা বাড়ি তুলেছেন। এ ছাড়াও ১০ একর জমির উপর তিনটি পুকুর, রাস্তার জন্য ৩০ একর জমি রয়েছে। বাকি জমিতে নিম বাগান, আম বাগান এবং ভ্যারেন্ডা (বায়ো ডিজেল তৈরির জন্য) চাষ হয়। আর ফাঁকা পড়ে রয়েছে ১৬০ একর জমি। খামারটিকে বাঁচিয়ে এখানে শিল্প হলে বহু সংখ্যক মানুষ উপকৃত হবেন। |
ছবি: রামপ্রসাদ সাউ। |
পুরনো খবর: গোয়ালতোড়ে শিল্পতালুকের পরিকল্পনা |
|
|
|
|
|