ব্যাটের কানায় সিলিকন টেপ লাগিয়ে নাকি হটস্পট টেকনোলজিকে বিভ্রান্ত করে দেওয়া যায়। অ্যাসেজে কয়েক জন ব্যাটসম্যান নাকি এটা করেওছে। যার মধ্যে বেশি করে কানে আসছে কেভিন পিটারসেনের নামটা।
সব শুনে একটা কথা আগে বলে নিতে চাই। ব্যাটে সিলিকন টেপ লাগানোটা তো বেআইনি কিছু নয়। আমি নিজেও বহু বার ফাইবার টেপ, অ্যান্টি-স্ক্রাফ টেপ ব্যবহার করেছি ব্যাটে। ঘটনা হল, এ সব টেপ ব্যবহার করলে ক্যামেরায় ‘হিট সিগনেচার’টা ধরা পড়তেও পারে, আবার নাও পড়তে পারে। অর্থাৎ হটস্পট নিয়ে একটা প্রশ্ন সব সময় থেকেই যায়।
সিলিকন টেপের সঙ্গে উঠে আসছে সিলিকন স্প্রে-র কথাও। যেটা ব্যাটে স্প্রে করলে একই ভাবে হটস্পটকে ধোকা দেওয়া যায়। সিলিকন টেপ বা স্প্রে কেউ ব্যবহার করছে কি না, সেটা নিয়ন্ত্রণ করার কোনও বাস্তবসম্মত উপায়ও নেই। টেপটা না হয় তা-ও দেখা যায়। স্প্রে ব্যবহার হয়েছে কি না বুঝতে কি তা হলে মাঠে স্নিফার-ডগ নামাবে আইসিসি? আর যত বেশি নিয়ম চালু করবে, ততই কিন্তু আইনসম্মত ভাবে সেগুলো ভাঙার উপায়ও তৈরি হবে। সবচেয়ে ভাল হয়, আইসিসি যদি এই বিতর্কিত প্রযুক্তি একেবারে বাদ দিয়ে দেয়।
|
ব্যাটে বল লেগেছে কি না বোঝা যাচ্ছে না হট স্পটেও। |
এ বার আসি অভিযোগের পরের অংশটায়। পিটারসেন নাকি টেপ লাগিয়ে জোচ্চুরি করেছে। এটা ঠিক যে হটস্পট কে ঠান্ডা করার কিছু উপায় সত্যিই আছে। কিন্তু তা বলে পিটারসেন জোচ্চুরি করার জন্য সে সব ব্যবহার করছে, এটা মানতে পারছি না। দেখুন, কেপি-কে আমি ব্যক্তিগত ভাবে চিনি। ও এ রকম কিছু করার লোকই নয়। হ্যাঁ কেপি মাঠে মেজাজ হারাতে পারে, ওর আরও দশ রকম সমস্যা আছে। কিন্তু ক্রিকেটের সঙ্গে প্রতারণা করার মতো মানুষ ও নয়। আর একটা জিনিস বুঝতে হবে। হটস্পটের আবিষ্কারক সংস্থা নিজেরাই দাবি করেছে যে এই পদ্ধতি একশো শতাংশ নিখুঁত নয়। তো যে প্রযুক্তিটাই পুরো সঠিক নয়, তার চোখে ধুলো দেওয়ার চেষ্টায় কেন কেউ সময় নষ্ট করবে?
আমার মনে হয় অ্যাসেজ হার থেকে প্রচারের আলো সরাতেই অস্ট্রেলিয়ার কাগজ-টাগজে এই ইস্যুটা নিয়ে এত বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে। যেহেতু এ বার অ্যাসেজে অস্ট্রেলিয়া ঠিকঠাক ডিআরএস ব্যবহার করতে পারেনি, তাই এখন ওরা এ সব সিলিকন টেপের প্রসঙ্গ তুলে বোঝাতে চাইছে যে ডিআরএস একশো শতাংশ নির্ভুল নয়।
ডিআরএসকে কাঠগড়ায় তুলতে কোনও বাধা নেই। কিন্তু পিটারসেনদের না জড়ালেই হল।
|
ডিআরএস বিতর্ক |
হটস্পটও ‘ঠান্ডা’ কেপি-র কাছে |
ব্যাটসম্যানরা ব্যাটে সিলিকন টেপ লাগাচ্ছেন। যার ফলে হট স্পটে আর ব্যাটে বল লাগার ছবি ধরা পড়ছে না। হাফ মিলিমিটার টেপ লাগালেই ‘কাজ’ হয়ে যাচ্ছে। অস্ট্রেলীয় মিডিয়া বিশেষ করে আঙুল তুলেছে কেভিন পিটারসেনের দিকে। |
ক্রিকেটারদের পাল্টা |
• “আমি আউট হতে ভয় পাই না।
ব্যাটে বল লাগলে নিজেই বেরিয়ে যাব।
কেউ যদি
বলে আমি ব্যাটে সিলিকন
লাগিয়ে জোচ্চুরি করছি,
তা হলে আমার
চেয়ে খারাপ কেউ হবে না।”
—কেভিন পিটারসেন |
• “সবার কথা বলতে পারব না।
তবে এটুকু বলতে পারি, অস্ট্রেলিয়ান ড্রেসিংরুমে
এমন একজনও নেই যে জোচ্চুরি করে। আমি
ব্যাটে ফাইবার গ্লাসের কভার লাগাই। কিন্তু তার
জন্য হট স্পটে সমস্যা হয়েছে বলে
কখনও শুনিনি।” —মাইকেল ক্লার্ক |
আইসিসি জানাচ্ছে
তাদের প্রতিনিধি দুটো টিমের সঙ্গেই বৈঠকে বসবেন। ডিআরএসকে কী ভাবে নিখুঁত করা যায়,
তা নিয়ে আলোচনা করতে। তবে কোনও বিশেষ ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে তদন্ত হবে না। |
|