রাহুল দ্রাবিড়ের একটি ওয়েবসাইটকে দেওয়া যে সাক্ষাৎকারের অংশবিশেষ নিয়েই দিনকয়েক আগে ভারতীয় ক্রিকেটে সোরগোল উঠেছিল। আনন্দবাজারে টেক্সট মেসেজ পাঠিয়ে দ্রাবিড় বলেছিলেন, তাঁর বক্তব্যের অপব্যাখ্যা হয়েছে। সেই ওয়েবসাইটে প্রাক্তন ভারত অধিনায়কের পূর্ণাঙ্গ সাক্ষাৎকার আজ প্রকাশ হতে ছবিটা পরিষ্কার হল। বিস্ফোরক সাক্ষাৎকারই দিয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেটের ‘দ্য ওয়াল’।
আইপিএল সিক্সে স্পট ফিক্সিং করার দায়ে রাজস্থানের তিন সতীর্থ ক্রিকেটার গ্রেফতার হওয়ার তিন মাস পরেও যন্ত্রণাটা তাজা রয়্যালস ক্যাপ্টেনের। “সেই সময় শুধু একটা আবেগ কাজ করছিল এমন নয়। রাগ, দুঃখ, হতাশা, খারাপ লাগা, সব মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছিল। শুধু রাজস্থান রয়্যালসের দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই নয়, গোটা আইপিএলের দিক থেকেও। তখনও পর্যন্ত আইপিএল কিন্তু দারুণ চলছিল। কিন্তু ওই ঘটনার পর সবার কাছেই ব্যাপারটা হতাশাজনক হয়ে ওঠে। অনেক প্লেয়ারকেই ব্যক্তিগত ভাবে জানার পর, ড্রেসিংরুমে এত সময় কাটানোর পর খারাপ লাগাটা আরও বেশি করে মনে ধাক্কা মারে,” বলেছেন দ্রাবিড়। একই সঙ্গে দ্রাবিড় বলে দিয়েছেন, “এ রকম কেলেঙ্কারি সমর্থকদের কাছে ক্রিকেটারদের সম্মান নষ্ট করতে পারে। সেটা হলে ক্রিকেটের পক্ষে খুব দুঃখের হবে।”
এই দুর্নীতি রুখতে ক্রিকেট প্রশাসকদের পুলিশের আরও সাহায্য নেওয়া উচিত বলেও মনে করেন দ্রাবিড়। “আমার মনে হয় পুলিশই এখানে কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারে। কারণ পুলিশের হাতে ক্ষমতা থাকে। যেটা ক্রিকেট প্রশাসকদের নেই। তাই খেলাটার সুরক্ষার জন্য ক্রিকেট প্রশাসকরা আরও বেশি করে পুলিশের সাহায্য নিতেই পারেন। তার মানে এই নয় যে, পুলিশকে সব সময় ঘরে বসিয়ে রাখতে হবে। তবে আইনের রক্ষক আর প্রশাসকদের মধ্যে একটা সমঝোতা থাকতেই পারে,” বলেন তিনি। প্রশ্ন উঠছে ভারতীয় ক্রিকেটের উপর নেমে আসা এই ঘোর দুর্যোগ ঠেকাতে কি ক্রিকেট প্রশাসকরা যথেষ্ট চেষ্টা করেছেন। দ্রাবিড় বলেন, ‘‘আমার মনে হয় প্রশাসকরা চেষ্টা করেছেন। দায় চাপিয়ে দেওয়াটা খুব সহজ। তবে এটাও বলতে হবে এ রকম ঘটনা কিন্তু ঘটেই চলেছে। তাতে বোঝা যাচ্ছে, প্রশাসকরা যা ব্যবস্থা নিয়েছেন তা যথেষ্ট নয়। তাই এ সব রুখতে পার্টনারশিপে কাজ করতে হবে।” কড়া আইন প্রয়োগের ব্যাপারেও জোর দেন দ্রাবিড়। বলেন, “দুর্নীতির বিরুদ্ধে শুধুমাত্র ক্রিকেটারদের শিক্ষিত করে লাভ হবে না। আইন প্রণয়ন করতে হবে। যাতে এটা বোঝানো যায়, এ রকম কাজে জড়িত থাকলেই তার শাস্তি অনিবার্য। এটা জানলে ভয়টা আপনিই তৈরি হবে।”
দ্রাবিড়ের সঙ্গে একমত আর এক প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়ক অনিল কুম্বলেও। এক অনুষ্ঠানে কুম্বলে বলেন, “যে ভাবে আইনের সাহায্যে ক্রিকেটে দুর্নীতি রোখার চেষ্টা করছে সরকার আশা করি তাতে কাজ হবে।’’ পাশাপাশি কুম্বলে আরও জানান, ম্যাচ গড়াপেটাকে গুরুতর অপরাধ হিসেবে ধরতে হবে। এটাই প্লেয়ারদের দুর্নীতি আটকানোর একমাত্র উপায়। তবে প্রত্যেকের উপর সব সময় নজর রাখা সম্ভব নয়।
|