নতুন মরসুমে ফুটবলারদের মনের মতো নম্বরের জার্সি দিতে গিয়ে প্রায় গলদঘর্ম অবস্থা ক্লাবকর্তাদের!
চার্চিল থেকে আসা সন্দীপ নন্দী মোহনবাগানে চাইছেন ৪২ নম্বর তো পুণে এফসি থেকে আসা জেমস মোগার ইস্টবেঙ্গলে পছন্দ ৯৯ নম্বর জার্সি। ওডাফা আবার কিছুতেই পরবেন না ১০ নম্বর জার্সি। বাগান অধিনায়ক সেটা ছেড়ে দিয়েছেন কাতসুমিকে। ওডাফার পছন্দ ৯। পেন ওরজি আবার ৮ নম্বর জার্সি ছাড়া পরবেনই না। ইস্টবেঙ্গলে দু’বছর তা না পেলেও এ বার তাঁর দাবি মেনে নিয়েছে মহমেডান।
বরাবরই নিজেদের ‘লাকি নম্বর’ অনুযায়ী জার্সি নম্বর দাবি করেন ফুটবলাররা। হয়তো খানিকটা কুসংস্কারবশত ফুটবলারদের বেশির ভাগের ধারণা, পয়া নম্বরের জার্সি পরলে সাফল্য আসবেই। কর্তারা অবশ্য সবথেকে বিপদে পড়েন নতুন ফুটবলার দলে এলে। অনেক সময়ই দুই ফুটবলার একই নম্বর চাইলে সমস্যা আরও বেড়ে যায়।
সন্দীপ সবুজ-মেরুনে যে জার্সি পরে নামবেন সেটা বেশ চমকপ্রদ। নম্বর ৪২। গোলকিপারের আবার এ রকম নম্বর হয় না কি? গোলকিপারদের সাধারণত ১ নম্বর জার্সিতে দেখতে সবাই অভ্যস্ত। কিন্তু সন্দীপ ফুটবলজীবনের প্রায় পুরো সময় ২৪ নম্বর জার্সি পরে খেলে এসেছেন। এমনকী ভারতীয় দলে খেলার সময়ও সন্দীপ চেয়ে নিতেন ‘লাকি’ ২৪-ই। কিন্তু গত মরসুমে সন্দীপের চার্চিলে যোগ দেওয়ার আগে থেকে ওই দলে ২৪ নম্বর জার্সি পরে খেলতেন লেনি। তাই বাধ্য হয়েই নিজের জার্সি নম্বর ২৪-কে উল্টে দিয়ে ৪২ পরতে শুরু করেন দেশের অন্যতম সফল গোলকিপার। |
|
|
|
জার্সির বায়না: সন্দীপ, মোগা, পেন। |
|
এ বার তো দেশের সেরা কিপারের সম্মান পেয়েছেন ৪২ নম্বর জার্সিতেই। সে জন্য এই মরসুমেও একই নম্বরের জার্সি চেয়ে নিয়েছেন মোহনবাগান কর্তাদের থেকে। “৪২ নম্বর জার্সি পরে চার্চিলে সাফল্য পেয়েছি। তাই মোহনবাগানেও ওটা নিয়েছি,” বলছিলেন তারকা গোলকিপার। সন্দীপ কি বুঁফোকে অনুসরণ করছেন! সংস্কারবশত ২০০০-এর গোড়ায় ৮৮ নম্বর জার্সি পরে খেলতে চেয়েছিলেন ইতালির বিখ্যাত গোলকিপার। কিন্তু নানা কারণে শেষ পর্যন্ত তাঁকে ১ নম্বর জার্সি পরেই খেলতে হয়।
মোগার পছন্দের নম্বর আবার ৯৯। কিন্তু কোনও ক্লাবই তাঁকে ৯৯ নম্বর জার্সি দেয়নি। পুণে গতবার দেয়নি, এ বার ইস্টবেঙ্গলেও তা পাননি। লাল-হলুদে তাঁর জার্সি নম্বর ১৫। তাই কিছুটা আক্ষেপের সুরেই মোগা বললেন, “আমার লাকি নম্বর ৯৯। কিন্তু এই নম্বরের জার্সি পরে আমি খেলতে চাইলেও কখনও সুযোগ হয়নি। এ বার ইস্টবেঙ্গলে চেয়েও পেলাম না।” মোগার মতো ঘটনার উদাহরণ বিশ্ব ফুটবলেও আছে। ২০০৩-এ ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো ম্যান ইউ-তে যোগ দেওয়ার পর ২৮ নম্বর জার্সি চেয়েছিলেন। পাননি। পেয়েছিলেন বেকহ্যামের সাত নম্বর জার্সি। শেষ পর্যন্ত সেটাই হিট। এখন তো তিনি সিআর সেভেন। মোগার ক্ষেত্রে সে রকম হয় কি না সেটাই দেখার।
জার্সির নম্বর পাওয়ার ব্যপারে ভাগ্যবান অবশ্য ওডাফা, মেহতাব হোসেন, এমনকী ডেম্পো থেকে আসা সুয়োকাও। মেহতাবের লাকি নম্বর ১৪। এই নম্বরের জার্সি পরেই তিনি মাঠে নামেন। সুয়োকার লাকি নম্বর ১১। দল পাল্টালেও জাপানি মিডিওর জার্সি নম্বর একই রয়ে গিয়েছে। ওডাফার আবার তিনটি ‘লাকি নম্বর’ রয়েছে। ৬, ৯ ও ২০। তাই দলের এক নম্বর স্ট্রাইকার হওয়া সত্ত্বেও নাইজিরিয়ান গোলমেশিনের জার্সি নম্বর ৯। জানালেন, “১০ নয়, আমার সব সময় পছন্দ ৯।”
চিডি আবার ফুটবল জীবনের শুরু থেকেই ১০ নম্বর জার্সি পছন্দ করেন। “বিশ্বের তারকা স্ট্রাইকাররা তো ১০ নম্বর জার্সি পরে, আমিও তাই ছোট থেকেই স্বপ্ন দেখেছি ১০ নম্বর জার্সি পরে খেলার। ইস্টবেঙ্গলে সেটাই পেয়ে গিয়েছি।”
মহমেডানের মিডিও পেনের ‘লাকি নম্বর’ আবার ৮। নতুন মরসুমে মহমেডানে এসে তাঁর ইচ্ছেপূরণ হওয়ায় দারুণ খুশি নাইজিরিয়ান মিডিও। দাবি করছেন “মহমেডানে এসে লাকি নম্বরের জার্সি পেয়েছি। কলকাতায় সেরা খেলাটা মনে হচ্ছে এই জার্সিতেই খেলব।” |