দুর্গাশক্তি বিতর্ক
কংগ্রেসের অস্বস্তি বাড়িয়ে রায়বরেলীতে অখিলেশ
তাঁকে ঘিরে জাতীয় রাজনীতিতে যতই সমর্থনের ঢল নামুক, সমাজবাদী পার্টির রোষ থেকে রেহাই পাচ্ছেন না উত্তরপ্রদেশের আইএএস অফিসার দুর্গাশক্তি নাগপাল। এ বার সরাসরি তাঁর চরিত্র হনন করতে সক্রিয় হল অখিলেশ প্রশাসন। আর এ দিনই হঠাৎ কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর লোকসভা কেন্দ্র রায়বরেলী সফরে গিয়ে কংগ্রেসকে পাল্টা চাপ দিতে চাইলেন অখিলেশ নিজে।
তাঁর সরকারের আর এক মন্ত্রী আহমেদ হাসান আজ আঙুল তুলেছেন দুর্গার পরিবারের দিকে। দুর্গার কোনও ‘বোধ’ নেই দাবি করে হাসান বলেন, “যখন আমরা জানাব উনি কোন পরিবারের মেয়ে, তখন আপনারা বুঝবেন কাকে সমর্থন করছেন।” তাঁর মতে, “দুর্গার ক্ষমা চাওয়া উচিত। উনি নিজের দায়িত্ব পালন করেননি। উল্টে নিজের পদের বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট করেছেন।” এই মন্ত্রী প্রকাশ্যে দুর্গাকে যখন এ ভাবে আক্রমণ করছেন, তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব। যিনি এ দিনও নিজের অবস্থানে অনড় থেকে বলেছেন, দুর্গাশক্তি নিজের শাস্তি নিজেই ডেকে এনেছেন। একই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, “গত কাল কেউ এক জন এসএমএসে জানালেন, আমার জনপ্রিয়তা কমে যাচ্ছে। সরকার তার নিজের কাজটা করবে, না করবে না? যারা রাজ্যের পরিবেশ নষ্ট করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা, প্রশ্ন সেটাই।”
জনতার মুখোমুখি। বুধবার রায়বরেলীতে অখিলেশ যাদব। ছবি: পিটিআই।
দুর্গাশক্তি যাতে বঞ্চনার শিকার না হন, তা জানিয়ে ঘটনাটিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে তাঁকে চিঠি লিখেছিলেন সনিয়া। কিন্তু এই বিষয়ে সনিয়ার সক্রিয়তা মোটেই ভাল ভাবে নেননি সপা নেতৃত্ব। আজ যে ভাবে রায়বরেলীতে আচমকা যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন অখিলেশ, তার পিছনে কংগ্রেসকে পাল্টা বার্তা দেওয়ার কৌশল রয়েছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন সূত্রে খবর, এ দিন সকালে অখিলেশ যে রায়বরেলীর বাচ্ছারাওয়া গ্রামে যাবেন, সে বিষয়ে কিছু জানত না স্থানীয় প্রশাসন। ওই গ্রামের নানা এলাকায় সড়ক ও সেতু নির্মাণের কাজ ঠিকমতো হচ্ছে কি না, তার খোঁজ নিতে অখিলেশ কথা বলেন জেলা প্রশাসন আধিকারিক ও স্থানীয়দের সঙ্গে। সফর ছিল মূলত প্রশাসনিক কাজ ঘিরেই।
কিন্তু আইএএস অফিসারের সাসপেনশন নিয়ে কংগ্রেস-সপা তিক্ততার আবহে আজ অখিলেশের সফরে কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে কংগ্রেস নেতৃত্ব। দলের তরফে মুখপাত্র ভক্তচরণ দাস অবশ্য বলেন, “অখিলেশ উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি নিজের রাজ্যে যেখানে খুশি যেতে পারেন। তা ছাড়া, অখিলেশ যদি রায়বরেলী সফরে যান, তা হলে ওই এলাকারই উন্নয়ন হবে।” মুখে এ কথা বললেও রায়বরেলীর ভোটের অঙ্কটাই মাথাব্যথা কংগ্রেসের। গত বিধানসভা নির্বাচনে রায়বরেলী কেন্দ্রের অন্তর্গত সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রেই হেরে যায় কংগ্রেস। সনিয়া লোকসভার সাংসদ হওয়া সত্ত্বেও ওই এলাকায় সাতটি বিধানসভা আসনে না জেতা যথেষ্ট চিন্তায় রেখেছে কংগ্রেসকে। এমনকী আগামী লোকসভা নির্বাচনেও ওই আসন ধরে রাখা নিয়ে সংশয় রয়েছে দলে। যে কারণে সনিয়া-কন্যা প্রিয়ঙ্কা বঢরা বিধানসভা ভোটের পর থেকেই এলাকায় সংগঠন শক্তিশালী করতে উদ্যোগী হয়েছেন। ওই অঞ্চলের মানুষের মন পেতে একাধিক প্রকল্পও ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। কিন্তু তাতে শেষমেশ কতটা লাভ হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে কংগ্রেসের অন্দরেই।
যদিও গত কয়েক বছর সপা-কংগ্রেস সুসম্পর্কই ছিল। এমনকী গত নির্বাচনে সনিয়া গাঁধী দাঁড়ানোয় তাঁর বিরুদ্ধে প্রার্থী পর্যন্ত দেয়নি সপা। আগামী লোকসভা নির্বাচনেও সনিয়ার বিপক্ষে প্রার্থী দেওয়া হবে না বলেই আগে ইঙ্গিত দিয়েছিল সপা। কিন্তু সনিয়া দুর্গাশক্তিকে সমর্থন করায় এখন সেই সমীকরণ অনেকটাই ঘেঁটে গিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রথমে খাদ্য সুরক্ষা বিলে সমর্থন না করার হুমকি, তার পর আজ অখিলেশের সফর সব মিলিয়ে দু’দলের তিক্ততা আরও বাড়ল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
এর মধ্যেই আজই বালি মাফিয়াদের নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্র। উত্তরপ্রদেশের গৌতম বুদ্ধ নগরে বেআইনি বালি খনন নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে, তার তদন্ত করতে তিন সদস্যের একটি প্যানেল তৈরি করা হয়েছে। ওই প্যানেল সব দিক খতিয়ে দেখে শুক্রবার রিপোর্ট জমা দেবে। গৌতম বুদ্ধ নগরেই বালি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে সরব হয়ে প্রশাসনের বিরাগভাজন হতে হয়েছে আইএএস অফিসার দুর্গাশক্তিকে।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.