উড়ান চালু করার সমস্যা মেটাতে বিমানবন্দরের রানওয়ে বাড়ানোর কাজ শুরু হচ্ছে। এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়া’র (এএআই) হাতে এ জন্য মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ১৫ কোটি টাকার একটি চেক তুলে দিয়েছেন। আরও ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্তও চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে পুজোর আগে রানওয়ে বাড়ানোর কাজ শুরু করবে এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ। আগামী এক বছরের মধ্যে পুরো কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে বলে আশা করছেন কর্তারা। এতে উড়ান পরিষেবা চালু নিয়ে আশায় বাসিন্দারা। জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “পুজোর আগে রানওয়ের দৈর্ঘ্য বাড়ানোর কাজ শুরু হবে। এক বছরের মধ্যে পুরো কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে বলে আশা। কাজ শেষ হলে উড়ান চালু সংক্রান্ত সমস্যা মিটবে।” |
এএআই সূত্রেই জানা গিয়েছে, কোচবিহার বিমান বন্দরে রানওয়ে রয়েছে ৩৭০৪ ফুট। রানওয়ের ওই পরিকাঠামোয় সর্বাধিক ১৮ আসনের থেকে বড় বিমান ওঠানামা করা সম্ভব নয়। ২০১১ সালে নয়া রাজ্য সরকার ক্ষমতায় আসার পর কোচবিহার-কলকাতা উড়ান পরিষেবা চালু করলেও মূলত ওই সমস্যার জন্য কয়েক মাসের মধ্যে তা বন্ধ হয়ে যায়। এর পরে রাজ্য ও এএআই মিলে নতুন করে চিন্তাভাবনা করে রানওয়ে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। রানওয়ের দৈর্ঘ্য আরও ১২৯৬ ফুট বাড়িয়ে ৫ হাজার ফুট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরজন্য বিমান বন্দরের পিছনের জমি লাগোয়া এলাকায় থাকা মরা তোর্সার ওপর বক্স কালভার্ট তৈরির বিষয়টিও চূড়ান্ত হয়েছে। কাজ শেষ হলে এই বিমানবন্দর থেকে এটিআর-৭২ উড়ান চালানোর ক্ষেত্রে সেমস্যা হবে না।
রাজ্যের পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে বিমান বন্দরের পরিকাঠামোগত ঘাটতি মিটতে চলেছে। কাজ হলে অধিক আসন বিশিষ্ট বিমান ওঠানামায় সমস্যা হবে না। কোচবিহার-কলকাতা উড়ান চালু হবে।” কোচবিহার ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন সম্পাদক সুব্রত পোদ্দার বলেন, “রাজ্যে র ওই উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছি। বাইরের শিল্পদ্যোগীরা কোচবিহারে আসবেন।” কলকাতা যাতায়াত করেন চিকিৎসক উজ্জ্বল দাসশর্মা। তাঁর কথায়, “দারুণ ব্যাপার। কোচবিহার থেকে বাগডোগরা হয়ে বিমানে কলকাতা যেতে হয়। অন্তত ৬ ঘন্টার ধাক্কা। তার ওপর রাস্তা বেহাল। ট্রেনে ১৩ ঘন্টা লাগছে। জরুরি না হলে ট্রেনেই যাতায়াত করতে হচ্ছে। বিমান চালু হলে রোগীর সুবিধা হবে।” কোচবিহার ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অ্যান্ড কমার্সের সম্পাদক রাজেন বৈদ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছি। রানওয়ে বাড়ানো হলে উড়ান চালাতে আগ্রহী সংস্থার সমস্যা হবে না।” |
২০১১-এ কোচবিহার বিমানবন্দর থেকে উড়ান চালু হয়। ১৮ আসনের বিমানে কোচবিহার থেকে কলকাতা যাতায়াতে মাথাপিছু ৫ হাজার টাকা ভাড়া দাঁড়ায়। এতে অপেক্ষাকৃত কম ভাড়ায় বাগডোগরা থেকে যাতায়াত করা যাচ্ছিল। যাত্রী কমে যাওয়ায় পরে পরিষেবা অনিয়মিত হয়। মেখলিগঞ্জের বিধায়ক পরেশ অধিকারী বলেছেন, “কাজের বাস্তবায়ন না দেখে আশ্বস্ত হতে পারছি না। তবে তা সত্যিই হলে সাধারণ মানুষ খুবই উপকৃত হবেন।”
|
ছবি তুলেছেন হিমাংশুরঞ্জন দেব।
|