আগামী ৩১ অগস্টের মধ্যে রাজ্যের নতুন শিল্পনীতির খসড়া তৈরি করে ফেলা হবে। মুম্বই শিল্প সম্মেলনের পরে রাজ্যে শিল্প সংক্রান্ত কোর কমিটির প্রথম বৈঠকে বুধবার মহাকরণে এ কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পনীতি ও বস্ত্রনীতিও ঘোষণা করবে রাজ্য। এই পরিপ্রেক্ষিতে হাতে যে-ক’দিন সময় আছে, তার মধ্যে যদি কোনও বণিকসভা বা শিল্প সংস্থার পরামর্শ দেওয়ার পরিকল্পনা থাকে, তা হলে তা সরকারের কাছে পেশ করতে হবে বলেও বৈঠকে জানানো হয়েছে।
এ দিন মুখ্যমন্ত্রী প্রায় এক ঘণ্টা বৈঠক করেন কোর কমিটির সঙ্গে। অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র ছাড়াও, শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, পুরমন্ত্রী, পঞ্চায়েতমন্ত্রী, শ্রমমন্ত্রী, বিদ্যুৎমন্ত্রী-সহ অন্য গুরুত্বপূর্ণ দফতরের সচিবরাও ছিলেন। বিকেলে মহাকরণ থেকে বেরোনোর সময়ে বৈঠকের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আলোচনা ভাল হয়েছে।”
বৈঠকের পরে সিইএসসি-র চেয়ারম্যান সঞ্জীব গোয়েন্কা জানিয়েছেন, ৩১ অগস্টের মধ্যে রাজ্যের শিল্পনীতি চূড়ান্ত হতে পারে। একই কথা জানিয়েছেন শিল্পপতি হর্ষ নেওয়াটিয়াও। পাশাপাশি, সঞ্জীববাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে বলেছেন, যে-কোনও বিনিয়োগের জন্য যত দ্রুত সম্ভব সরকারি ছাড়পত্র দেওয়া হবে। জমিও সমস্যা হবে না।”
এ দিনের বৈঠকে প্রাধান্য পেয়েছে ছোট-মাঝারি শিল্প ও পর্যটন শিল্প। মুম্বইয়ে উপস্থিত শিল্পমহলের সামনে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তার মতোই স্থানীয় উদ্যোগীদেরও রাজ্যের আশ্বাস, বিনিয়োগের পথে জমিবাধা হবে না। মুখ্যমন্ত্রীর সুরেই পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী আজ কোর কমিটির বৈঠকে শিল্পপতিদের ফের জানিয়েছেন, নতুন বিনিয়োগের জন্য জমি কোনও সমস্যা হবে না। উত্তর দিনাজপুর, কোচবিহারের মতো পিছিয়ে পড়া জেলায় লগ্নি করলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকার ভর্তুকিও দেবে বলে জানানো হয়েছে।” পার্থবাবু জানান, আপাতত ১০ হাজার একরের মতো জমি রাজ্যের রয়েছে। যাঁরা বিনিয়োগ করতে আগ্রহী তাঁদের জমি পেতে সমস্যা হবে না। পার্থবাবুর দাবি, এখনও পর্যন্ত কোনও প্রকল্পের জন্য জমি পেতে সমস্যা হয়নি।
এ দিনের বৈঠকে শিল্পপতিদের সুন্দরবনে পর্যটন শিল্পে লগ্নি করার ব্যাপারেও আহ্বান জানানো হয়েছে। বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্স-এর কর্তা কল্লোল দত্ত জানান, বকখালিতে বড় পর্যটন প্রকল্প তৈরি করতে চায় রাজ্য। বিনিয়োগ টানতে আন্তর্জাতিক স্তরে ইচ্ছাপত্র চাওয়ার প্রস্তাব দেন কল্লোলবাবু। তবে এ প্রসঙ্গে রাস্তার মতো পরিকাঠামোর ঘাটতির কথা ওঠে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, বকখালি পৌঁছনোর বর্তমান রাস্তার পাশাপাশি বিকল্প রাস্তা খুঁজে দেখার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। এ ছাড়াও প্রস্তাবিত ছোট ও নতুন বিমানবন্দরগুলিতে বিমানের জ্বালানি কর মকুবের সিদ্ধান্তে রাজ্য সরকারের প্রশংসা করেছে শিল্পমহল। এই সিদ্ধান্তে পর্যটন শিল্প উপকৃত হবে বলে আশা তাদের।
|