অভিযোগ সত্ত্বেও আগে কেন অধরা মোস্তাফা, ক্ষোভ
চুরি-ডাকাতির ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগ থাকলেও ধরা হয়নি তাকে। নাম উঠেছিল মেয়েদের দেহ ব্যবসায় নামানো, এমনকী ভিন্ রাজ্যে পাচারের ঘটনাতেও। তবু পুলিশ গণেশ মুর্মুকে খুনের ঘটনার আগে মোস্তাফা শেখকে ধরার চেষ্টা করেনিএমনই অভিযোগ তুলেছেন দাঁইহাটের পশ্চিম নসিপুরের বাসিন্দারা।
এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, মোস্তাফা পুলিশের ‘ইনফর্মার’ হিসেবে কাজ করত। আদিবাসী এলাকায় বেশ কয়েকটি ঘটনার কিনারা করতে পুলিশকে তথ্য জুগিয়েছিল সে। কাটোয়া মহকুমার এক পুলিশকর্তা বলেন, “দাঁইহাট শহর লাগোয়া এলাকায় আদিবাসীদের মধ্যে মোস্তাফার প্রভূত নিয়ন্ত্রণ। সেই কারণে দু’একটি ঘটনার ক্ষেত্রে পুলিশ তার সাহায্য নিয়েছিল।”
গত রবিবার ভোরে ওই গ্রামের রাঙামাটি পুকুরপাড়ে ঝুপড়িতে ঢুকে দুষ্কৃতীরা দিদি ও বোনের সম্মানহানির চেষ্টা করছে দেখে বাধা দিতে যান সম্পর্কে গণেশ মুর্মু। দুষ্কৃতীরা তাকে গুলি করে খুন করে পালিয়ে যায়। গণেশের দুই বোন যে অভিযোগপত্র জমা দেন সেখানে তাঁদের টিপছাপ শনাক্ত করে মামাতো জামাইবাবু মোস্তাফা।
আদালতে ধৃতেরা। —নিজস্ব চিত্র।
দোষীদের শাস্তির দাবিতে সোমবার পথ অবরোধে নেতৃত্বও দেয় সে। তবে জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে কথায় অসঙ্গতি ও গণেশের বোনের কাছে পাওয়া কিছু তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার মোস্তাফাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধরা হয় তার আরও দুই শাগরেদকে। বুধবার তাদের সাত দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তদন্তকারী অফিসার জুলফিকর আলি ধৃতদের বিরুদ্ধে তফসিলি জাতি ও উপজাতি আইনের ধারা প্রয়োগের আবেদন করেছিলেন। তা মঞ্জুর করেছে আদালত। পুলিশ অবশ্য খুনে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রটি এখনও উদ্ধার করতে পারেনি।
পুলিশ তদন্তে জেনেছে, নিহতের দিদি-বোনকে মুম্বইয়ে কাজ করতে যাওয়ার জন্য মোস্তাফা চাপ দিচ্ছিল। আর তা নিয়ে তার সঙ্গে বেশ কয়েক বার গোলমাল বাধে গণেশের। দু’জনের মধ্যে ঝগড়াও হয়েছে বলে পুলিশ জানতে পারে। জেলার এক পুলিশকর্তার বক্তব্য, “দিল্লি-মুম্বইয়ে কাজ দেওয়ার নামে মোস্তাফা মহিলাদের দেহ ব্যবসায় নামাত।” মোস্তাফার স্ত্রী লক্ষ্মী বিবিও সোমবার রাতেই পুলিশকে জানিয়েছিলেন, তাঁর স্বামীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। পুলিশের সঙ্গে স্বামীর ‘যোগাযোগ’ ছিল কি না, সে প্রশ্নে তিনি বুধবার বলেন, “আমি সারা দিন কাজের মধ্যে থাকি। তাই বেশি কিছু বলতে পারব না।”
এ দিন বিকেলে নিহতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির একটি দল। ওই সমিতির নেত্রী তথা প্রাক্তন বিধায়ক অঞ্জু কর, সাধনা মল্লিকদের দাবি, “এই অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের ধরতে হবে। একই সঙ্গে ব্লক প্রশাসনকেও পাশে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানান। মঙ্গলবারও প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি মানস ভুঁইয়া দাবি করেছিলেন, “ব্লক প্রশাসনের উচিত ছিল, ওই পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে প্রয়োজনীয় সাহায্য করা।” কাটোয়া ২ বিডিও স্বপন পাত্র জানান, বিষয়টি তাঁরা মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখছেন। গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি ছাড়াও এসইউসি এবং শরদ পওয়ারের এনসিপি-র এক প্রতিনিধি দলও ওই পরিবারের সঙ্গে দেখা করে।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.