সব ঠিক থাকলে পুজোর আগেই কালনা শহরের রাজবাড়ি চত্বরে দেখা যেতে পারে সুদৃশ্য ফোয়ারার সঙ্গে আলো ও শব্দের (লাইট অ্যান্ড সাউন্ড) কেরামতি।
নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার কয়েক মাস পরে কালনা শহর পরিদর্শন করতে এসে কাটোয়া রাজবাড়ি চত্বরে গিয়েছিলেন রাজ্যের তৎকালীন পর্যটনমন্ত্রী রচপাল সিংহ। সেখানে লালজী মন্দির, প্রতাপেশ্বর মন্দির-সহ বেশ কিছু প্রাচীন মন্দির, রাজবাড়ি চত্বরের পাশেই থাকা ১০৮ শিবমন্দির ও তাদের গায়ে থাকা নানান কারুকাজ দেখে রাজবাড়ি চত্বরকে নতুন করে সাজানোর পরিকল্পনা নেন তিনি। সিদ্ধান্ত হয়, রাজবাড়ি চত্বরে বসানো হবে আলো ও শব্দের যুগলবন্ধীর যন্ত্র ও একটি ফোয়ারা। প্রকল্পের জন্য পর্যটন দফতর থেকে ৬০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু এর পরেই দেখা যায় জটিলতা।
মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজবাড়ি চত্বরের মন্দিরগুলি দেখভাল করে পুরাতত্ত্ব দফতর। তাই সেখানে কোনও নতুন প্রকল্পের কাজ করতে গেলে পুরাতত্ত্ব দফতরের ছাড়পত্র প্রয়োজন। রাজ্য পর্যটন দফতর প্রয়োজনীয় ছাড়পত্রের জন্য পুরাতত্ত্ব বিভাগের দিল্লির কার্যালয়ে যোগাযোগ করে। |
দিল্লির পুরাতত্ত্ব আধিকারিকেরা বছর খানেক আগে কালনায় এসে রাজবাড়ি চত্বর পরিদর্শন করেন। তাঁরা আশঙ্কা করেন, আলো জ্বালানো হলে মন্দিরের পুরার্কীতির উপর বিভিন্ন পোকার আক্রমণ হতে পারে। এরপর অনেক দিন এই প্রকল্পটি নিয়ে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
প্রকল্পটি ‘ঠান্ডা ঘরে’ চলে গিয়েছে বলে যখন সবাই প্রায় ধরেই নিয়েছেন তখনই চলতি বছরের ১৫ জুলাই পুরাতত্ত্ব বিভাগের দিল্লি কার্যালয় থেকে একটি প্রতিনিধি দল পুনরায় কালনা রাজবাড়ি পরিদর্শনে আসেন। পরিদর্শনের সময় তাঁদের সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের পর্যটন বিভাগ ও কালনা পুরসভার কর্তারা। এরপরই মেলে প্রকল্প শুরুর আশ্বাস।
মহকুমা প্রশাসন সূত্রে খবর, জটিলতা প্রায় কেটে গিয়েছে। খুব শীঘ্রই প্রকল্পটির কাজ শুরু হবে। কালনার মহকুমা শাসক শশাঙ্ক শেঠি বলেন, “পুরাতত্ত্ব বিভাগ, পর্যটন বিভাগ ও কালনা পুরসভার মধ্যে একটি ত্রিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে কাজ শুরু হওয়ার কথা। আশা করছি এ বার আর সমস্যা হবে না।” কালনার বিধায়ক ও কালনা পুরসভার চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ কুন্ডু বলেন, “প্রকল্পটি নিয়ে বর্তমান পর্যটনমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। আশা করি, পুজোর আগেই কাজ শুরু হবে। প্রকল্পটির বিদ্যুতের খরচ বহন করবে পুরসভা।”
পুজোর সময়ে রাজবাড়ি চত্বর ভাসবে মায়াবি আলোয়। আশায় রয়েছে কালনাবাসী। |