দল চায় না, দায়ে পড়ে একা যশোবন্ত গোর্খাল্যান্ডের পক্ষে
বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে সমর্থন করবেন না। রাজ্য বিজেপি-ও পশ্চিমবঙ্গের বিভাজনের পক্ষে নয়। অথচ দার্জিলিঙের সাংসদ হিসেবে স্থানীয় ভোটারদের তুষ্ট রাখতে গোর্খাল্যান্ডের পক্ষেই দাঁড়াতে হচ্ছে তাঁকে। এর ফলে দলে কার্যত একঘরে হয়ে পড়েছেন যশোবন্ত সিংহ।
এমনিতেই গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে যশোবন্ত সংসদে সরব হননি বলে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতারা ক্ষুব্ধ। বিজেপি-র নির্বাচনী ইস্তাহার কমিটির সদস্য হওয়ায় যশোবন্তের উপরে চাপ রয়েছে মোর্চার। তারা চায়, বিজেপি-র নির্বাচনী ইস্তাহারে গোর্খাল্যান্ডের বিষয়টি রাখা হোক। কিন্তু বিজেপি গোর্খাল্যান্ডের পক্ষে দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অসন্তুষ্ট করার পক্ষে নয়। চাপের মুখে যশোবন্ত বলেন, “দলকে বলে দিয়েছি, দার্জিলিঙের জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমি পৃথক গোর্খাল্যান্ডের পক্ষে।” তাঁর দাবি, পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রত্যাহার করা হোক। রাজ্য মোর্চা নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা শুরু করুক। দার্জিলিঙের স্পর্শকাতর ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনা করে হস্তক্ষেপ করুক কেন্দ্রও। যশোবন্ত বলেন, “সুযোগ পেলে আমিও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব।” যশোবন্তের মন্তব্য নিয়ে তৃণমূলের তরফে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় পরে বলেন, “সবাই খেলার চেষ্টা করছেন। স্থানীয় সাংসদ হিসেবে তিনি ওদের সন্তুষ্ট করা চেষ্টা করেছেন। তাঁর বক্তব্য মূল্যহীন এবং অবাস্তব।”
তেলঙ্গানার সিদ্ধান্তের পরে মোর্চা নেতারা দিল্লিতে দরবার শুরু করেছেন। পাহাড়ে টানা ধর্মঘট চলছে। সংসদে বড়োল্যান্ড ও অন্যান্য রাজ্যের দাবিতে সাংসদরা সরব। মোর্চার অন্দরমহলে প্রশ্ন, তাঁদের সমর্থনে জিতে আসা দার্জিলিঙের সাংসদ কী করছেন?
এই চাপের মুখে রোশন গিরি, হরকাবাহাদুর ছেত্রীদের পাশে বসিয়ে যশোবন্ত সাংবাদিক বৈঠক করে বোঝানোর চেষ্টা করেন, তিনি সংসদে গোর্খাল্যান্ড নিয়ে সরব হন। তাঁর বক্তব্য, “আমার একটা নিজস্ব শৈলী রয়েছে। আমি গোর্খাল্যান্ড নিয়ে সরব হই না বলে ভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। আমি আসলে নিজের মতো করে বলি।” মোর্চা নেতাদের হিসেব, সাড়ে চার বছরে যশোবন্ত লোকসভায় মাত্র দু’বার গোর্খাল্যান্ড প্রসঙ্গ তুলেছেন। কিন্তু যশোবন্তের হিসেব, পাঁচ বার। গত শনিবার দিল্লিতে যশোবন্তের বাড়ির সামনে মোর্চা সমর্থকরা বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। এ দিন তিনি ওই বিক্ষোভের কথা স্বীকার করেননি। তাঁর নামে নিখোঁজ ডায়েরিকেও হাস্যকর বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।
যশোবন্তের পাশে বসেই রোশন গিরি জানিয়েছেন, লোকসভা নির্বাচনে মোর্চা দার্জিলিং আসনে কাকে সমর্থন করবে, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। অর্থাৎ সকলের জন্যই দরজা খোলা। মোর্চা নেতৃত্বের ক্ষোভ কমাতে যশোবন্তের প্রতিশ্রুতি, দল যাতে গোর্খাল্যান্ডের পক্ষে অবস্থান নেয়, তিনি সেই চেষ্টা করবেন। তবে দলের রাজ্য নেতাদের সঙ্গে কথা বলতে তিনি রাজি নন।
তৃণমূল, কংগ্রেস, বিজেপি সব দলই রাজ্য ভাগের বিরোধী। তা হলে কী ভাবে পৃথক রাজ্য গঠন সম্ভব? যশোবন্তের যুক্তি, “অতীতেও বাংলা ভাগ হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের বিভাজন নিয়ে সমস্যা রয়েছে মানুষের মনে। কিন্তু সামাজিক-রাজনৈতিক, কোনও দিক থেকেই গোর্খাল্যান্ড বাংলার অংশ ছিল না। শুধু উন্নয়ন নয়, গোর্খাদের পরিচয়েরও প্রশ্ন আছে।” রোশন গিরির দাবি, “কেন্দ্রকেই হস্তক্ষেপ করতে হবে। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় কখনও গোর্খাল্যান্ড নিয়ে বিল পাশ হবে না। তাঁকে সমর্থন করে যশোবন্ত বলেন, “আমি দ্বিতীয় রাজ্য পুনর্গঠন কমিশনের পক্ষে নই। নির্দিষ্ট কিছু এলাকার দাবি আলাদা ভাবে বিবেচনা করা হোক।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.