প্রার্থী ছিলেন প্রায় পাঁচ লক্ষ ৭১ হাজার। কিন্তু তাঁদের মধ্য থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের সাড়ে ৪৬ হাজার শিক্ষক-পদ পূরণ করা যাচ্ছে না। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ইন্টারভিউয়ে হাজির হওয়ার যোগ্য বিবেচিত হয়েছেন সাড়ে ৩৬ হাজার প্রার্থী। তাঁদের সকলে নিযুক্ত হলেও হাজার দশেক পদ খালি থেকে যাবে।
স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি-র ওই পরীক্ষা হয়েছিল গত বছর ২৯ জুলাই। বছর পার করে তার ফল বেরোল মঙ্গলবার। কমিশনের চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন মণ্ডল জানান, সফল প্রার্থীদের বাড়িতে চিঠি পাঠিয়ে ইন্টারভিউয়ের খবর জানানো হবে। এ ছাড়া কমিশনের ওয়েবসাইট www.westbengalssc.com মারফত এবং WBSSC লিখে স্পেস দিয়ে ৫৪২৪২ নম্বরে রোল নম্বর পাঠালেও ফল জানতে পারবেন প্রার্থীরা। সফল প্রার্থীদের ইন্টারভিউ নিয়ে পুজোর আগেই নিয়োগপত্র দেওয়া যাবে বলে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর আশা।
এসএসসি-র ওই পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র-বিভ্রাটের জেরে সেপ্টেম্বরে পাঁচটি কেন্দ্রে ফের পরীক্ষা নিতে হয়। মোট পরীক্ষার্থী পাঁচ লক্ষ ৭০ হাজার ৯১১। পরীক্ষার দ্বিতীয় পত্র (টেট)-এর ফল বেরোয় গত ১ ডিসেম্বর। সফল হন এক লক্ষ ৭৩ হাজার ৬৩৮। তার পর থেকে বিভিন্ন মামলার জেরে প্রথম পত্রের (প্রার্থীর সংশ্লিষ্ট বিষয়) ফলপ্রকাশ থমকে ছিল। চিত্তবাবু জানান, সব মামলার শুনানি শেষ হয়ে যাওয়ায় ফল প্রকাশ করা হল। তবে শিক্ষামন্ত্রীর দাবি, মাসখানেক আগেই ফল বার করা যেত। পঞ্চায়েত ভোটের বিধি কার্যকর থাকায় তা করা যায়নি।
প্রকাশিত ফলে দেখা যাচ্ছে, টেট-এ সফলদের মধ্যে ৩৬ হাজার ৫৯০ জন ইন্টারভিউয়ে ডাক পাবেন। চিত্তবাবু জানান, হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে শিক্ষক বাছাইয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বিএড প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের।
এত প্রার্থী পরীক্ষা দেওয়া সত্ত্বেও সব পদ পূরণ করা যাচ্ছে না কেন?
চিত্তবাবু বলেন, “বিজ্ঞানের বিষয়গুলিতে যথেষ্ট যোগ্য প্রার্থী পাওয়া যায়নি। সংরক্ষিত পদে প্রার্থীর অভাব সব থেকে বেশি। যাঁরা ন্যূনতম ৪০% নম্বর পাননি, তাঁদের ইন্টারভিউয়ে ডাকা হচ্ছে না। আগে অনেক সময় ন্যূনতম নম্বর কমিয়ে ইন্টারভিউয়ে প্রার্থীদের ডাকা হত।”
সেপ্টেম্বরের মধ্যে এসএসসি-র পরবর্তী পরীক্ষার বিজ্ঞাপন দিয়ে দ্রুত খালি পদ পূরণের আশ্বাস দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, “আগের সরকারের আমলে ইংরেজি তুলে দেওয়া, বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ তৈরি না-করা ইত্যাদি কারণেই প্রার্থীর এত আকাল। আমরা এ-সব সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী হয়েছি।” প্রাক্তন উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী সুদর্শন রায়চৌধুরী অবশ্য ব্রাত্যবাবুর এই অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তিনি বলেন, “উনি যা বলছেন, সেটার তথ্যগত ভিত্তি কী? তা না-থাকলে কথাটার কোনও মানেই দাঁড়ায় না!”
ব্রাত্যবাবু জানান, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষার ফল পুজোর আগে বেরিয়ে যাবে। তাঁর কথায়, “স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী মিলিয়ে প্রায় এক লক্ষ কর্মসংস্থান হবে পুজোর আগেই।”
|