ধর্মতলা থেকে বাস টার্মিনাস সরানো নিয়ে পরিবহণ দফতরের জমা দেওয়া রিপোর্ট দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করল কলকাতা হাইকোর্ট। ২০০৭ সালে ধর্মতলা থেকে ওই টার্মিনাস সরাতে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। পরে ২০১১ সালে একই রায় বজায় রাখে সুপ্রিম কোর্টও। এই বাস টার্মিনাস সরানোর ব্যাপারে সরকার কী করছে, সম্প্রতি আদালত তা জানতে চায়। তার প্রেক্ষিতেই এ দিন বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি মৃণালকান্তি চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চে একটি রিপোর্ট জমা দেয় পরিবহণ দফতর। সেই রিপোর্টে বেসরকারি বাস সরানো নিয়ে রাজ্যের কোনও বক্তব্য না থাকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতিরা।
পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, হাইকোর্টের নির্দেশের প্রেক্ষিতে গত ২৪ মে একটি বৈঠকে বসেন পরিবহণ দফতরের কর্তারা। দফতরের প্রধান সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সিটিসি, সিএসটিসি-সহ সরকারি বাস পরিবহণ সংস্থার কর্তারা। সেই বৈঠকে ধর্মতলা চত্বর থেকে বাস সরানো নিয়ে আলোচনা হয়। সিএসটিসি-কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দেন, বৈঠকের এক মাসের মধ্যে তাঁদের বাসগুলি ধর্মতলা থেকে গড়িয়া, কসবা, সল্টলেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। বাস টার্মিনাস বেলগাছিয়া, রাজাবাজার ডিপোয় সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন সিটিসি-কর্তৃপক্ষ। ধর্মতলা থেকে বাস টার্মিনাস সরানোর আশ্বাস দিয়েছিল এসবিএসটিসি ও এনবিএসটিসি-ও। তবে বেসরকারি বাস নিয়ে কোনও আলোচনা সেখানে হয়নি। বৈঠকে বেসরকারি বাস পরিবহণ সংগঠনগুলির কোনও প্রতিনিধিও হাজির ছিলেন না।
পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের বক্তব্য, ধর্মতলার পাশাপাশি বাবুঘাটেও বাসস্ট্যান্ড রয়েছে। তা নিয়েও কোনও বক্তব্য পরিবহণ দফতরের রিপোর্টে নেই। অথচ হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের তিন কিলোমিটারের মধ্যে কোনও বাস টার্মিনাস করা যাবে না। শুধু ভিক্টোরিয়াই নয়, ময়দানের সবুজ বাঁচানোর জন্যও এই বাস টার্মিনাস সরানো প্রয়োজন বলে তাঁর দাবি। বাবুঘাটের বিষয়টি আদালতের নজরে এসেছে বলে সুভাষবাবু জানান।
এ দিন আদালত নির্দেশ দিয়েছে, আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর পরিবহণ দফতরের প্রধান সচিব, পূর্তসচিব এবং রাষ্ট্রায়ত্ত পরিবহণ সংস্থার শীর্ষ আধিকারিকদের ব্যক্তিগত ভাবে হাজির হয়ে এ বিষয়ে তাঁদের মতামত জানাতে হবে। হাজির হতে হবে কলকাতার পুলিশ কমিশনার, পুর-কমিশনারকেও। প্রতিনিধি পাঠাতে হবে কলকাতা বন্দর-কর্তৃপক্ষ এবং সেনাবাহিনীকেও।
সম্প্রতি অক্সফোর্ডে গিয়ে টেম্সের ধারে একটি সবুজ মাঠ দেখেন সুভাষবাবু। তিনি জানতে পারেন, দীর্ঘদিন ধরে সেটি বিশেষ ভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। সেই প্রসঙ্গ টেনে এ দিন আদালতে তিনি জানিয়েছেন, গঙ্গার সামনে অবস্থিত কলকাতার ময়দানকেও তেমন ভাবে গড়ে তোলা সম্ভব।
|