|
|
|
|
জেলাশাসককে দাবিপত্র |
ফলের বাগান নয়, লোধারা চায় হস্টেল
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
ফলের বাগান নয়, বরং বরাদ্দ টাকায় লোধা আশ্রম হস্টেল তৈরি এবং সেচ ব্যবস্থার সম্প্রসারণের জন্য জেলাশাসকের কাছে দাবি জানাল লোধা-শবর কল্যাণ সমিতি। সোমবার জেলাশাসকের দফতরে সমিতির পক্ষ থেকে ওই দাবিপত্র জমা দেওয়া হয়। সমিতির জেলা সম্পাদক বলাই নায়েকের কথায়, “আগেও লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে ফলের বাগান তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু সেগুলি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সরকারি অর্থের অপচয় হয়েছে।” তাঁর দাবি, কয়েক বছর ধরে শুনছি, লোধাদের জন্য ফলের বাগান তৈরি হবে। তবে অর্থ বরাদ্দ হলেও কাজ কিছুই হয়নি। তার চেয়ে বরাদ্দ টাকায় লোধারা পাট্টা পেয়েছেন, এমন এলাকায় সেচের সম্প্রসারণ হোক।
বস্তুত, রাজ্যে পালাবদলের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মেদিনীপুর লোধা শবর কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হয়, লোধা-শবরদের উন্নয়নে জেলা প্রশাসন উদাসীন। লোধাদের উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ কোটি কোটি টাকা পড়ে রয়েছে। কিন্তু, সে ভাবে কাজ হচ্ছে না। এরপরও পরিস্থিতির বিশেষ পরিবর্তন হয়নি বলে অভিযোগ সমিতির। জেলা প্রশাসন অবশ্য এই অভিযোগ মানতে নারাজ। প্রশাসনের এক আধিকারিকের দাবি, “প্রতিটি প্রকল্পের কাজ এগোচ্ছে। কিছু সমস্যার জন্য কয়েকটি প্রকল্পের গতি শ্লথ। সেই সব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।”
জেলা প্রশাসনের এক সূত্রের অবশ্য দাবি, নতুন করে ওই সব প্রকল্পের কাজ হতে পারে। তবে, ফলের বাগানের জন্য যে অর্থ বরাদ্দ হয়েছে, তা দিয়ে আশ্রম হস্টেল কিংবা সেচ ব্যবস্থার সম্প্রসারণে সমস্যা রয়েছে। তবে ওই সূত্রের আশ্বাস, ফলের বাগান তৈরির জন্য ইতিমধ্যে পদক্ষেপ করা শুরুও হয়েছে। বস্তুত, লোধাদের উন্নয়নে সরকারের বেশ কিছু প্রকল্প রয়েছে। ফলের বাগান তৈরির প্রকল্প তারই একটি। জেলার নারায়ণগড়ে ২টি, শালবনিতে একটি, নয়াগ্রামে একটি এবং বিনপুর-১ ব্লকে একটি ফলের বাগান হওয়ার কথা রয়েছে। বাগানগুলি তৈরির সিদ্ধান্ত হয় ২০০৯-১০ আর্থিক বছরে। জেলা অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর বাগানের পরিকল্পনা করে। এ জন্য ১০ লক্ষ টাকা করে মোট ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দও করা হয়। তবে, এই সময়ের মধ্যে কাজ এগিয়েছে নামমাত্রই। বাগান তৈরি হলে লোধাদের কী সুবিধে হবে? জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, বাগান তৈরি করে তা লোধাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। বাগানে বিভিন্ন ধরনের ফলের গাছ থাকবে। গাছগুলির পরিচর্যা করবেন স্থানীয় লোধা সম্প্রদায়ের মানুষরাই। আর বিভিন্ন মরশুমে ফল বিক্রি করে আয়ের সুযোগ থাকবে। পতিত জমিতেও ফলের বাগান তৈরি করা যায়। তাই সবদিক খতিয়ে দেখেই এই বাগান তৈরির পরিকল্পনা করা হয়।
লোধা-শবর কল্যাণ সমিতির অবশ্য দাবি, বাগান তৈরি হলে লোধাদের তেমন সুবিধে হবে না। সমিতির সম্পাদকের কথায়, “আগেও ২০০৩-০৪ সালে নারায়ণগড়ের মালগোদা এবং প্রজনীতে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে ফলের বাগান তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু তা নষ্ট হয়ে যায়। অন্যান্য এলাকাতেও বাগান তৈরি করে সাফল্য মেলেনি। সেই কারণেই আমরা বাগান তৈরির বরাদ্দ অর্থে লোধা আশ্রম হস্টেল তৈরি কিংবা সেচ ব্যবস্থা সম্প্রসারণের দাবি জানিয়েছি। এর ফলে, সরকারি অর্থ অপচয় যেমন বন্ধ হবে, তেমনি লোধারাও উপকৃত হবেন।” |
পুরনো খবর: টাকা পড়ে, হয়নি ফলের বাগান |
|
|
|
|
|