সেবি-র বিরুদ্ধে রোজ ভ্যালির মামলা খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার মামলার রায় দিয়ে বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত জানান, রোজ ভ্যালির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার এক্তিয়ার রয়েছে সেবি-র। রোজ ভ্যালির পক্ষ থেকে সংস্থার চেয়ারম্যান গৌতম কুণ্ডু জানান, “হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের ওই আদেশের বিরোধিতা করে ডিভিশন বেঞ্চে খুব শীঘ্রই আপিল করবে রোজ ভ্যালি রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন্স। ২০১০ সাল থেকেই রোজ ভ্যালি রিয়েল এস্টেট সব কাজকর্ম বন্ধ করে দিয়েছে।”
একই সঙ্গে হাইকোর্ট রোজ ভ্যালিকে ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছে। ওই টাকা জমা দিতে হবে হাইকোর্টের রেজিষ্ট্রার জেনারেলের কাছে। ১০ লক্ষ টাকা থেকে ৫ লক্ষ পাবে রাজ্য লিগাল এইড সংস্থা ও ৫ লক্ষ পাবে কলকাতা হাইকোর্ট লিগাল এইড। বিচারপতি জানিয়ে দেন, ক্ষুদ্র আমানতকারীদের সুরক্ষা দেওয়া এবং জনস্বার্থ রক্ষা করাই সেবি-র কাজ। এ দিনই রোজ ভ্যালি বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের কাছে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশেরও আবেদন জানায়। বিচারপতি অবশ্য তা নাকচ করে দেন।
রোজ ভ্যালির বক্তব্য ছিল, তারা যে-ভাবে আমানত সংগ্রহ করে, তা কালেকটিভ ইনভেসমেন্ট স্কিমের আওতাভুক্ত নয়। তাই তাদের বিরুদ্ধে সেবি-র ব্যবস্থা নেওয়ার এক্তিয়ার নেই। এই কারণেই সেবি-র আইনকে চ্যলেঞ্জ করে রোজ ভ্যালি মামলা করে। হাইকোর্ট এই মামলা খারিজ করে দেওয়ায় সংস্থার আমানত প্রকল্প যে সেবি-র আওতাভুক্ত, তা হাইকোর্টের সিঙ্গ্ল বেঞ্চ মেনে নিল।
২০১০-এর অগস্টে সেবি রোজ ভ্যালিকে চিঠি দিয়ে জানতে চায়, তারা বাজার থেকে কী ভাবে আমানত সংগ্রহ করছে। রোজ ভ্যালি সেবিকে তথ্য দিয়ে সন্তুষ্ট করতে না-পারায়, ২০১১-এর ৩ জানুয়ারি রোজ ভ্যালিকে আমানত সংগ্রহ বন্ধ করার নির্দেশ দেয় সেবি। রাজ্যকেও তা জানিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু সংস্থা ২০১১-র ১৯ জুলাই কলকাতা হাইকোর্টে সেবির বিরুদ্ধে মামলা করে। সেই মামলায় রোজ ভ্যালি অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশও পায়। কিন্তু পরে ওই মামলার রায় সংস্থার বিরুদ্ধে যায়।
এর পরে সেবি-র আইন সংবিধান- সম্মত নয় বলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করে রোজ ভ্যালি। সংস্থার বক্তব্য ছিল, কালেকটিভ ইনভেস্টমেন্ট স্কিম যারা চালায়, সেবি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। কিন্তু রোজ ভ্যালি-র প্রকল্প কালেকটিভ ইনভেস্টমেন্টের আওতায় পড়ে না। তাই সেবি তাদের মতো সংস্থার কাজে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। এটা অসাংবিধানিক। এ দিন এই মামলাও খারিজ করল সিঙ্গ্ল বেঞ্চ। |