সাধারণ মানুষের কাছ থেকে নেওয়া সমস্ত আমানত অলকেমিস্ট ইনফ্রা রিয়েল্টিকে ১৮ মাসের মধ্যে ফিরিয়ে দিতে বলল সেবি-র আপিল আদালত সিকিউরিটিজ অ্যাপেলেট ট্রাইব্যুনাল (স্যাট)। এর ফলে সংস্থাটিকে ওই সময়সীমার মধ্যে প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষকে ১,০০০ কোটি টাকার বেশি ফেরত দিতে হবে। টাকা ফেরতের প্রক্রিয়ার অগ্রগতি ৬ মাস অন্তর সেবি-কে জানাতে হবে বলে জানাচ্ছে সংবাদসংস্থা পিটিআই। সংস্থার মুখপাত্র আনন্দবাজারের পাঠানো এক ই-মেল বার্তার উত্তরে অবশ্য জানান, “অলকেমিস্ট আইন মেনেই কাজ করে। আদালতের নির্দেশ মেনেই চলবে সংস্থা।”
পিটিআই জানিয়েছে: বাজার থেকে আমানত সংগ্রহ বন্ধ করার জন্য সেবি অলকেমিস্টকে নির্দেশ দিয়েছিল। সেই নির্দেশের বিরোধিতা করে স্যাটে আপিল করে অলকেমিস্ট। ওই মামলারই আজ রায় দিয়েছে স্যাট।
টাকা ফেরতের জন্য অলকেমিস্ট ৫ বছর সময় চেয়েছিল স্যাটের কাছে। কিন্তু স্যাট রাজি হয়নি। তাদের মন্তব্য, ১৮ মাস সময় যথেষ্ট। তবে ভবিষ্যতে বিশেষ পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে সংস্থা সময় বাড়াতে আবেদন করা যাবে। সেবি-র অবশ্য নির্দেশ ছিল, ৩ মাসে আমানতকারীদের টাকা ফেরাতে হবে। কিন্তু স্যাটের বক্তব্য, অত মানুষকে টাকা ফেরতের প্রক্রিয়া ৩ মাসে শেষ করা কঠিন।
সেবি-র অভিযোগ ছিল, অলকেমিস্ট যে-ভাবে মানুষের কাছ থেকে টাকা তুলছিল, তা কার্যত ‘কালেকটিভ ইলভেস্টমেন্ট স্কিম’ (সিআইএস)-এর আওতায় পড়ে। অথচ সংস্থা সিআইএস চালানোর অনুমোদন সেবির কাছ থেকে নেয়নি। সংস্থা বেআইনি ভাবে বাজার থেকে টাকা তুলছে, এই মর্মে ২০১১ সালে সেবি অভিযোগ পায়। তারা তদন্ত চালিয়ে দেখে, অলকেমিস্ট নির্মাণ শিল্পের যে-প্রকল্পের মাধ্যমে টাকা তুলছে, তা আদতে সিআইএস শ্রেণির। ২০১১-র ৩১ মার্চ পর্যন্ত সংস্থা ১০৮৭ কোটি টাকা বাজার থেকে তুলেছে।
গত মাসেই সেবি অলকেমিস্ট ইনফ্রা রিয়েল্টিকে তাদের প্রকল্প গুটিয়ে নিয়ে আমানত সংগ্রহ বন্ধের নির্দেশ দেয়। বলা হয়, ৩ মাসে আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে হবে। যত দিন পর্যন্ত টাকা পরিশোধ করা না-হয়, তত দিন সংস্থার ৫ ডিরেক্টরকে শেয়ার বাজারে লেনদেন থেকেও বিরত থাকতে নির্দেশ দেয় সেবি। তদন্তে প্রকাশ, টাকা তুলতে সংস্থা যে-আবেদনপত্র চালু করে, তাতে উল্লেখ করা হয়, তারা রিয়েলটি ছাড়াও ইস্পাত, তথ্যপ্রযুক্তি, খাদ্য-পানীয়, সংবাদ মাধ্যম ইত্যাদি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। |