আজ বুধবার কলকাতায় আসছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। বৈঠকে বসবেন বিভিন্ন ব্যাঙ্কের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে। রাজ্য তথা পূর্বাঞ্চলে বেশ কিছু প্রকল্প থেমে থাকায় ধারের টাকা ফেরত পেতে সমস্যায় পড়ছে ব্যাঙ্কগুলি। তার সমাধান খুঁজতেই শহরে আসছেন অর্থমন্ত্রী। এই কারণেই সম্প্রতি মুম্বই, হায়দরাবাদ, চেন্নাইয়েও ছুটে গিয়েছিলেন তিনি।
ইউরোপ-সহ উন্নত দুনিয়ায় আর্থিক হাল সুবিধার নয়। গতি নেই দেশের অর্থনীতির চাকাতেও। তা ছাড়া আছে জমি না-পাওয়া কিংবা পরিবেশ সংক্রান্ত অনুমোদন না-মেলার সমস্যা। আর এ সব কারণে সারা দেশের মতো পূর্ব ভারতেও থমকে বেশ কিছু প্রকল্প। ফলে মুশকিলে ওই সমস্ত প্রকল্পে ঋণ দেওয়া ব্যাঙ্কগুলি। কারণ, প্রকল্প শেষ হওয়ার অনিশ্চয়তা যত বাড়ছে, টাকা ফেরত পাওয়াও তত অনিশ্চিত হচ্ছে। এ দিন এ রকম ১০টি প্রকল্প নিয়েই ব্যাঙ্ককর্তাদের সঙ্গে আলোচনার কথা অর্থমন্ত্রীর। তাঁর সঙ্গে বৈঠকে স্টেট ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান ছাড়াও থাকার কথা এলাহাবাদ ব্যাঙ্ক, ইউকো ব্যাঙ্ক এবং ইউনাইটেড ব্যাঙ্কের কর্ণধারদের।
পূর্বাঞ্চলে ওই ১০টি প্রকল্পে লগ্নি হওয়ার কথা ৩১,৫০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২৩,৭০০ কোটি ঋণ হিসেবে দিয়েছে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক। ফলে প্রকল্প থেমে যাওয়ায় সমস্যায় তারা। গত বছর বণিকসভা অ্যাসোচ্যাম-এর সমীক্ষায় দেখা গিয়েছিল, রাজ্যে মাঝ পথে থেমে থাকা প্রকল্পের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। অবশ্য শুধু রাজ্যে নয়, প্রকল্প থমকে আছে সারা দেশেই। আটকে রয়েছে প্রায় সাত লক্ষ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বিনিয়োগ। যার মধ্যে দু’লক্ষ কোটি টাকা ব্যাঙ্ক ঋণ। প্রকল্পের কাজ থেমে থাকায় আশঙ্কা দেখা দিয়েছে ধারের টাকা আর ফেরত না-পাওয়ার।
ধার ফেরত না-পাওয়া ব্যাঙ্কের আর্থিক স্বাস্থ্যের পক্ষে সব সময়ই ক্ষতিকর। কিন্তু সম্প্রতি এই বোঝা লাফিয়ে বেড়েছে অধিকাংশ ব্যাঙ্কেরই। একেই বৃদ্ধির ঢিমে গতি, চলতি খাতে চড়া বাণিজ্য ঘাটতি, টালমাটাল শেয়ার বাজার নিয়ে কেন্দ্র নাজেহাল। তার উপর দিল্লির রক্তচাপ বাড়িয়েছে ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রের এই সমস্যা। ফলে গোড়াতেই তা সামাল দিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আলোচনায় বসছেন খোদ অর্থমন্ত্রী। তারই অঙ্গ হিসেবে রাজ্য-সহ পূর্ব ভারতে থেমে থাকা প্রকল্পের খবর নিতে এ বার তাঁর শহরে আসা।
ব্যাঙ্ককর্তাদের আশা, পূর্বাঞ্চলের প্রকল্পগুলি থামার কারণ খুঁজবেন অর্থমন্ত্রী। উদ্যোগী হবেন প্রকল্প চালুর পথে বাধা দূর করতেও। হায়দরাবাদ, চেন্নাই ও মুম্বইয়ে যে কাজ ইতিমধ্যেই করেছেন তিনি।
মুম্বইয়ের বৈঠকে ব্যাঙ্ককর্তারা ছাড়াও ছিলেন কুমার মঙ্গলম বিড়লা, অনিল অম্বানীর মতো শিল্পপতিরা। |