আপত্তি চেপে মোদী প্রশ্নে সুর পাল্টে ফেললেন উদ্ধব
রাজনাথ সিংহের হস্তক্ষেপে নরেন্দ্র মোদী সম্পর্কে রাতারাতি সুর নরম করে নিলেন শিবসেনা-প্রধান উদ্ধব ঠাকরে। যদিও জোটের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে তিনি মোদীকে মেনে নেবেন, তেমন কোনও ইঙ্গিত দিলেন না আজও।
উদ্ধব গত কাল এখানে এক বণিকসভার অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, পরের ভোটে কংগ্রেসকে হঠিয়ে এনডিএ সরকার হবে কেন্দ্রে। কিন্তু তেমন কোনও বিশ্বাসযোগ্য নেতা নেই এই মুহূর্তে। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, নরেন্দ্র মোদীকে কি তিনি বিশ্বাসযোগ্য নেতা বলে মনে করেন না? জবাবে উদ্ধব জানিয়েছিলেন, “বিজেপি-তে এমন অনেক নেতাই রয়েছেন।” বিজেপি যেখানে সরাসরি মোদীকে সামনে রেখেই এগোতে চাইছে, সেখানে সব থেকে পুরনো শরিক দলই এমন বেসুরো গাওয়ায় অস্বস্তিতে পড়ে যায় বিজেপি। আসরে নামেন রাজনাথ। এর পর আজ সাংবাদিক বৈঠক করে উদ্ধব দাবি করেন, বিজেপি নয়, বিশ্বাসযোগ্য নেতা নেই বলতে কাল তিনি কংগ্রেসের কথা বুঝিয়েছিলেন। সংবাদমাধ্যম ভুল ব্যাখ্যা করেছে।
মোদীর প্রতি যে তাঁর সমর্থন রয়েছে সে কথা বোঝাতে আরও এক ধাপ এগিয়ে উদ্ধব বলেন, “আমার মন্তব্য শুনে সংবাদমাধ্যম এখন বলতে পারে, এটা ডিগবাজি। তবে মনে রাখতে হবে প্রচার কমিটির প্রধান হওয়ার পর আমি মোদীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলাম।”
বালাসাহেব ঠাকরে যে সুষমা স্বরাজকে প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য আশীর্বাদ দিয়েছিলেন, সে প্রসঙ্গ তোলা হলে শিবসেনা-প্রধান বলেন, “তা ঠিকই। তবে সেটা অনেক আগের ঘটনা। নরেন্দ্র মোদী তখনও গুজরাতে তৃতীয় বার জয় হাসিল করেননি।”
তবে কী সত্যিই রাতারাতি পাল্টে গেল উদ্ধবের অবস্থান? যদি তা-ই হয়, তা হলে কেন?
বিজেপি সূত্রের মতে, প্রধানমন্ত্রী পদে মোদীর পরোক্ষ বিরোধিতার পরেই রাজনাথ সিংহের সঙ্গে কথা হয় উদ্ধবের। রাজনাথ তাঁকে বোঝান, মোদীকে সামনে রেখে দল লোকসভা নির্বাচনে যাচ্ছে বটে, তবে তাঁকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী তো ঘোষণা করা হয়নি! ফলে এখন থেকে তাঁর বিরোধিতা করার কোনও অর্থ হয় না। নীতীশ কুমারকেও ঠিক একই কথা বোঝানো হচ্ছে। বিজেপি-র অবস্থান স্পষ্ট, মোদী যদি একার ক্ষমতায় দুশোর বেশি আসন নিয়ে আসতে পারেন ও বর্তমান শরিকদের নিয়েই সরকার গড়া সম্ভব হয়, সে ক্ষেত্রে মোদীর প্রধানমন্ত্রী হওয়া ঠেকানো যাবে না।
কিন্তু বিজেপি কম আসন পেলে জোটে শরিকদের উপরে নির্ভরতা বাড়বে। তখন বিবেচনা করতে হবে শরিকদের মধ্যে গ্রহণযোগ্য নেতা কে হবেন। শিবসেনা সূত্রের ইঙ্গিত, ওই যুক্তি মেনেই আজ সুর বদলেছেন উদ্ধব। মোদী সম্পর্কে যথেষ্টই আপত্তি রয়েছে তাঁর। এবং সে কারণেই মোদীকে প্রধানমন্ত্রী পদে মেনে নেবেন কি না সেই প্রশ্নে কিন্তু উদ্ধব আজ সরাসরি কোনও জবাব দেননি। বরং বলেছেন, “বিজেপি-র সংসদীয় বোর্ড এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। এনডিএ-র শরিকদের সঙ্গেও আলোচনা হয়নি। তাই এখনই এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার কোনও তাড়া রয়েছে বলে তো মনে হয় না।”
মোদী সম্পর্কে উদ্ধবের আপত্তির কারণগুলি কী? শিবসেনা সূত্রের মতে, মোদী যে ভাবে উদ্ধবের ভাই রাজ ঠাকরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছেন, সেটা বালাসাহেব-পুত্রের নাপসন্দ। এ ছাড়া, যে হিন্দুত্বের প্রচার নিয়ে মোদী এগোতে চাইছেন, ঠিক একই অবস্থান নিয়ে চলে শিবসেনা। ফলে পরস্পরের ভোটব্যাঙ্কে থাবা বসানোর সম্ভাবনা থাকছে। ফলে মোদীর উত্থানে শিবসেনার ক্ষতির আশঙ্কা থাকছে।
বেশ কয়েক বছর পর দিল্লিতে এসে উদ্ধব কিন্তু বিজেপি-র লালকৃষ্ণ আডবাণী, সুষমা স্বরাজদের মতো মোদী-বিরোধী নেতাদের সঙ্গেই দেখা করেছেন। বিজেপি-র এই সব নেতাও যখন নিজেদের মতপার্থক্য চেপে প্রকাশ্যে ঐকমত্য দেখিয়ে ভোটে যাওয়ার অবস্থান নিয়েছেন, তখন উদ্ধব আর উল্টো পথে হাঁটতে চাইছেন না। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মোদী-প্রশ্নে উল্টো সুর সে কারণেই।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.