|
|
|
|
বিজেপি নিয়ে মৌনী কেন মমতা, প্রশ্ন কংগ্রেসের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
লোকসভা ভোটের আনুষ্ঠানিক প্রচারে নামার আগে নরেন্দ্র মোদী গত কাল যখন তাঁর টিম ঘোষণা করছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখন বলেছেন, “আমরা মোদীকে সমর্থন করি না। তাঁকে সমর্থন করার প্রশ্নও নেই।” তৃণমূল নেত্রীর এই মন্তব্যের সূত্র ধরেই ধর্মনিরপেক্ষতার প্রশ্নে তাঁর উপর চাপ বাড়ানোর কৌশল নিল কংগ্রেস। তাদের বক্তব্য, শুধু মোদীকে সমর্থন না করাই যথেষ্ট নয়। মমতা যে ভবিষ্যতে ফের বিজেপি-র সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধবেন না, সেটা খোলসা করে বলুন। যেটা করেছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার।
মোদী-সংক্রান্ত মন্তব্যের সূত্র ধরে বামেরা অবশ্য আজ প্রশ্ন তোলেন শরিক নির্বাচনের ব্যাপারে তাঁর নির্ভরযোগ্যতা নিয়েই। সিপিএম রাজ্য সম্পাদক বিমান বসুর কথায়, “কখনও কংগ্রেস, কখনও বিজেপি এত বার উনি শরিক বদলেছেন যে আর কারও তাঁর ওপর আস্থা নেই।” এই সূত্রে মোদীর শপথ অনুষ্ঠানে মমতার ফুল পাঠানোর প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন বিমানবাবু।
বামেদের তরফে এমন প্রতিক্রিয়া প্রত্যাশিতই। অ-কংগ্রেসি, অ-বিজেপি ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির পরিসরে মমতার গুরুত্ব বাড়ুক, এটা তারা চায় না। কংগ্রেসের কিন্তু চিন্তা বিজেপি-তৃণমূল অক্ষ গড়ে ওঠার সম্ভাবনা নিয়ে। সংখ্যালঘু ভোটের কথা ভেবে পঞ্চায়েত ভোটের চলতি পর্বে মমতা হয়তো কংগ্রেস-সিপিএমের মতোই বিজেপি-কেও তুলোধোনা করছেন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে হিংসার ঘটনাগুলি নিয়ে বিজেপি কিন্তু জাতীয় স্তরে কোনও রকম সমালোচনা করেনি এ পর্যন্ত। |
|
এই অবস্থায় লোকসভা ভোটের পরে যে বিজেপি-র সঙ্গে তৃণমূলের একটি অক্ষ গড়ে উঠবে না, এমন নিশ্চয়তা নেই। বরং লোকসভা ভোটের পরে কেন্দ্রে সরকার গড়তে বিজেপি-কে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষে সমর্থন জানাতে পারে তৃণমূল। এবং সেই আশঙ্কা থেকেই কংগ্রেস মুখপাত্র মীম আফজল আজ বলেন, “মোদীকে সমর্থন না করার ব্যাপারে তৃণমূলের ঘোষণা ইতিবাচক। কিন্তু ধর্মনিরপেক্ষতার প্রমাণ দিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এটাও ঘোষণা করা উচিত যে, তিনি বিজেপি-কেও সমর্থন করেন না বা করবেন না। ঠিক যে ভাবে নীতীশ কুমার মোদী প্রশ্নে আপত্তি জানিয়ে বিজেপি-র সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন।”
তৃণমূল-বিজেপি অক্ষ গড়ে ওঠার সম্ভাবনা ঠেকাতে কংগ্রেস নেতা শাকিল আহমেদও আজ টুইটারে লেখেন, “মোদীকে সমর্থন না করার কথা বলছেন মমতা, কিন্তু বিজেপি-কে সমর্থনের সম্ভাবনা খারিজ করছেন না। এটা কি তবে কোনও ইঙ্গিত?” পরে শাকিল এ-ও যোগ করেন, এনডিএ তথা বিজেপি-র সঙ্গে থাকলেও লোকসভা ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসাবে মোদীকে তো শিবসেনাও সমর্থন করছে না। তা হলে উদ্ধব ঠাকরে আর মমতার মধ্যে পার্থক্য কোথায়? শাকিলের কথায়, “ইদানীং একটা কৌশল অনেকেই নিতে চাইছে যে, মোদী সাম্প্রদায়িক, কিন্তু লালকৃষ্ণ আডবাণী ধর্মনিরপেক্ষ। এই অজুহাত খাটবে না। আডবাণী যে সাম্প্রদায়িকতার বীজ বুনেছেন, মোদী তারই ফসল।”
কংগ্রেসের এই চাপের বিপরীতে বিজেপি আজ যে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তা বেশ তাযপর্যপূর্ণ। মমতার মন্তব্য নিয়ে বিজেপি-র মুখপাত্র নির্মলা সীতারামন আজ বলেন, “আমরা এ ব্যাপারে কোনও তু তু ম্যায় ম্যায়-এ যেতে চাই না।” ঘরোয়া আলোচনায় বিজেপি নেতারাও বলছেন, মোদী প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হোক বা না হোক, ভবিষ্যত সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখেই মমতাকে ঘাঁটাতে চাইছে না দল। |
|
|
 |
|
|