দিল্লি, মুম্বই ও চেন্নাই ডিজিটাল কেবল টিভি-র গ্রাহকদের তথ্য দিতে পারলেও কলকাতা পারেনি। তারই মাসুল দিচ্ছেন এ শহরের গ্রাহকেরা। ট্রাই-এর দাবি, তথ্যের অভাবেই কলকাতায় এই পরিষেবার অনিয়ম রুখতে ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না।
ডিজিটাল কেবল পরিষেবা চালু নিয়ে গোড়া থেকেই রাজ্যের তীব্র আপত্তি ছিল। নভেম্বরে তা চালুর কথা থাকলেও বারবার তা রাজনৈতিক প্রতিরোধের মুখে পড়েছে। শেষ পর্যন্ত ফেব্রুয়ারিতে পরিষেবা চালু হলেও এখনও বিভ্রান্তি চরমে। সংশ্লিষ্ট মহলের অভিযোগ, গোড়া থেকে প্রতিরোধের জেরেই গ্রাহক-তথ্য সংগ্রহ সে ভাবে শুরু করা যায়নি।
বৃহস্পতিবার কলকাতায় এমএসও-দের সঙ্গে বৈঠকের পরে ট্রাই-এর অন্যতম কর্তা এন পরমেশ্বরন এবং জি এস কেশরওয়ানি জানান, দিল্লিতে ৯৭% এবং মুম্বই ও চেন্নাইতে ৮০%-এরও বেশি গ্রাহক তথ্যসংগ্রহ সংক্রান্ত আবেদনপত্র জমা দিলেও কলকাতায় জমা পড়েছে মাত্র ২০%। তথ্যের অভাবে কলকাতায় কোথায় কী অনিয়ম হচ্ছে, তা স্পষ্ট নয়। সুষ্ঠু ভাবে পরিষেবাও চালু করা যাচ্ছে না।
নিয়ম অনুযায়ী, পরিষেবা পেতে অপারেটরদের কাছে গ্রাহকদের ওই আবেদনপত্র জমা দেওয়ার কথা। সেখানে গ্রাহকদের যাবতীয় তথ্যের পাশাপাশি তাঁদের পছন্দের চ্যানেল ও ‘প্যাকেজ’-এর দামেরও উল্লেখ থাকতে হবে। যা ট্রাই-কে জানাবেন এমএসও-রা। গ্রাহকদের অভিযোগ, হয় আবেদনপত্র মিলছে না। কোথাও মিললেও চ্যানেলের মাসুল হার স্থির হয়নি। একই চ্যানেলের মাসুল বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম। এ নিয়ে এমএসও এবং কেবল অপারেটরেরা একে অন্যের উপর দায় চাপাচ্ছেন। কোথায় অভিযোগ জানানো যাবে, তা-ও স্পষ্ট নয়। পরমেশ্বরন জানিয়েছেন, তথ্য ভাণ্ডার থাকলে তবেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব। দিল্লিতে এই অভিযোগে তাঁরা ১৪ জন কেবল অপারেটর ও এক জন এমএসও-র বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করেছেন।
কলকাতায় আঞ্চলিক দফতর থাকা সত্ত্বেও অনিয়ম আটকাতে আগে কেন ব্যবস্থা নেয়নি ট্রাই? ট্রাই-এর কর্তারা শুধু বলেন, “সমস্যা হচ্ছে বলেই আমরা এসেছি।” বস্তুত, গোটা ব্যবস্থার নজরদারির ভার থাকলেও উপযুক্ত পরিকাঠামো নেই ট্রাই-এর। উপরন্তু এত দিন দিল্লিতেই বৈঠক হওয়ায় সে ভাবে প্রাধান্য পায়নি কলকাতার সমস্যা। কলকাতায় আলাদা কোনও ‘নোডাল অফিসারও নেই। কলকাতার আঞ্চলিক কার্যালয়ে ছ’টি অনুমোদিত পদ, রয়েছেন চার জন। তাঁদের কেবল পরিষেবার সঙ্গে টেলিকম সংক্রান্ত সব কিছুই দেখতে হয়। ফলে যথাযথ নজরদারির অভাবেই ঢিমেতালে চলছে গোটা প্রক্রিয়া।
আবেদনপত্র-সহ যাবতীয় তথ্য জমা দেওয়ার সময়সীমা নতুন করে বেঁধে দিতে আজ, শুক্রবার দিল্লিতে বৈঠক করবেন ট্রাই কর্তারা। এমএসও-রা বৃহস্পতিবারের বৈঠকে দু’মাস বাড়তি সময় চাইলেও ট্রাই খুব বেশি সময় দিতে নারাজ। কারণ ইতিমধ্যেই একবার তা বাড়ানো হয়ছে। ট্রাইয়ের কর্তারা জানান, অভিযোগ জানানোর যথাযথ ব্যবস্থা রাখতে এমএসও-দের নির্দেশ দিয়েছেন তাঁরা। নির্দিষ্ট সময়ে অভিযোগের কিনারা না হলে গ্রাহকেরা traicable@yahoo.co.in-এ জানাতে পারেন। |