বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা এক সিপিএম কর্মীকে গুলি করে খুনের চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার রাত ১০টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে রায়গঞ্জ থানার বরুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ মারিয়া এলাকায়। পেশায় চাষি ৪৫ বছর বয়সী ওই সিপিএম কর্মীর নাম মহতাব আলি। তিনি যখড় বাড়ির সামনে দাঁনিয়েছি কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলছিলেন, সেই সময়ে দুই দুষ্কৃতী বাইকে চড়ে তাঁকে লক্ষ্য করে পাঁচ রাউন্ড গুলি করে উত্তর মাড়িয়ার দিকে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ। তাঁর ডান হাতে ও ডান পায়ে দুটি করে গুলি লেগেছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় এরপর সিপিএমের কর্মী সমর্থকেরাই তাঁকে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি করান। রাতেই তাঁর শরীর থেকে গুলি বার করা হয়। তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।
সিপিএমের অভিযোগ, নানা হুমকি সত্ত্বেও মহতাববাবু প্রচার থেকে সরে না দাঁড়ানোয় কংগ্রেস সমর্থিত সমাজবিরোধীরা তাঁকে খুনের চেষ্টা করেছে। কংগ্রেসের অবশ্য দাবি, সিপিএমের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই মহতাববাবু গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত মহতাববাবু বা সিপিএমের তরফে এই বিষয়ে থানায় কোনও অভিযোগ না জানানোয় প্রশ্ন তুলেছেন জেলা পুলিশের কর্তারা। উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, “কী কারণে মহতাববাবুকে গুলি করে খুনের চেষ্টা করা হল তা স্পষ্ট নয়। এখনও পর্যন্ত রাজনৈতিক কোনও বিরোধের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত থানায় কেন অভিযোগ জানানো হচ্ছে না তা বুঝতে পারছি না। সবই তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”
এদিন হাসপাতালে মহতাববাবু বলেন, “কয়েকদিন আগে কংগ্রেসের একদল নেতাকর্মী আমাকে প্রচার থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য হুমকি দেন। আমি প্রচার থেকে সরে না দাঁড়ানোয় আমাকে গুলি করে খুনের চেষ্টা করা হয়েছে বলে সন্দেহ করছি। পুলিশ হাসপাতালে এসে আমার কাছ থেকে সব শুনেছে।” সিপিএমের রায়গঞ্জ জোনাল কমিটির সম্পাদক বাপি ভৌমিক জানান, সুস্থ হলেই মহতবাববাবুকে দিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ জানানো হবে। কংগ্রেসের বরুয়া গ্রাম পঞ্চায়েত অঞ্চল কমিটির সভাপতি জগদীশ বর্মন সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “সিপিএমের সমাজবিরোধীদের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে মহতাববাবু গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। পুলিশি তদন্তে সব কিছু স্পষ্ট হবে।”
এদিন দক্ষিণ মাড়িয়া এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, এলাকার পরিবেশ থমথমে। কেউই দরকারি কাজ ছাড়া ঘরদোর ছেড়ে বাইরে বার হচ্ছেন না। এলাকায় পুলিশের টহলদারি চলছে। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রচারও এদিন বন্ধ রাখা হয়। মহতাববাবুর স্ত্রী নুরজাহান আলি, দুই প্রতিবেশি মমতাজ আলি ও সুফিয়া বেগমের দাবি, “নিরাপত্তার কারণে মহতাববাবু থানায় অভিযোগ জানাতে ভয় পাচ্ছেন। পুলিশই তদন্ত করে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করুক।” |