পঞ্চায়েতে তৃতীয় দফার ভোট-পর্বের আগে এ বার রাজ্য সরকার এবং শাসক দলকে পাল্টা হুঁশিয়ারির কৌশল নিল সিপিএম। সেই সঙ্গে চাপে রাখার চেষ্টা করল রাজ্য নির্বাচন কমিশনকেও। কলকাতার লাগোয়া দুই ২৪ পরগনায় ভোটের দিন শাসক দল গণ্ডগোল পাকালে তাঁদের দল পাল্টা রাস্তায় নেমে অবরোধ-অবস্থান করবে বলে মঙ্গলবার হুঁশিয়ারি দিলেন সিপিএমের দুই জেলা সম্পাদক। তৃণমূলের তরফেও পাল্টা বলা হয়েছে, নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা হলে কড়া হাতেই মোকাবিলা করা হবে।
তৃতীয় পর্বে আগামী শুক্রবার উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং হাওড়ায় পঞ্চায়েত ভোট। দুই ২৪ পরগনার বাম নেতৃত্বই বারেবারে জেলা প্রশাসন এবং নির্বাচন কমিশনের কাছে সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশের জন্য রীতিমতো এলাকার মানচিত্র দিয়ে দরবার করেছেন। কিন্তু তাতে এখনও কোনও কাজ হয়নি বলে বামেদের অভিযোগ। এ দিন আলিমুদ্দিনে সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক গৌতম দেব বলেছেন, “দু’দফার ভোটে যা দেখা গিয়েছে, সেটা যদি ১৯ তারিখ উত্তর ২৪ পরগনায় হয়, শহর রাস্তায় থাকবে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক জেলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে তৈরি থাকবে। গ্রামে ভোট দিতে দেওয়া হচ্ছে না খবর এলেই, এই স্বেচ্ছাসেবকেরা রাস্তায় রাস্তায় বসে পড়বে। রেললাইনে শুয়ে পড়বে!” তিনি জানান, শ্যামনগর, ব্যারাকপুর, সোদপুর, ডানলপ, নাগের বাজার, এয়ারপোর্ট, মধ্যমগ্রাম, বারাসতের তিনটি মোড়-সহ বহু জায়গায় সড়ক ও রেল অবরোধ হবে।
একই ভাবে বারুইপুরে এ দিন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমের সম্পাদক সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, “কোথাও যদি শাসক দলের নেতা-সমর্থকেরা সাধারণ মানুষকে ভোট দিতে বাধা দেন, বুথের সামনে অবরোধ করবেন মহিলারা।” সুজনবাবু বলেন, “গত দেড় মাসে তিন দফায় নির্বাচন কমিশনকে কোন কোন এলাকায় সন্ত্রাস হতে পারে, মানচিত্র-সহ তার উল্লেখ করে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তার পরেও মানুষ ভোট দিতে না-পারলে কমিশনই দায়ী থাকবে।”
সুজনবাবুর অভিযোগ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় পঞ্চায়েতে তৃণমূলের দুর্নীতিতে মানুষ অতিষ্ঠ। সেই জন্যই সন্ত্রাস সৃষ্টি করে মানুষকে ভোট দিতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। দু’দফার ভোটেই কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঠুঁটো করে রাখা হয়েছে। আর শাসক দল অবাধে বুথ লুঠ করছে। কমিশন নির্বিকার।
হুঁশিয়ারির প্রেক্ষাপটে তৃণমূলের মহাসচিব তথা রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ দিন বলেছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন প্রক্রিয়ার সঙ্গে পেরে না উঠে ওঁরা নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। পাঁচ জন লোক নিয়েও অবরোধ করে দেওয়া যায়। জনসমর্থন ওঁদের সঙ্গে নেই। তা সত্ত্বেও ভোটের দিন নৈরাজ্য সৃ্ষ্টি করলে প্রশাসন কড়া ভাবে মোকাবিলা করবে।” |