কোনও ঘটনার তদন্তকারী অফিসার দ্রুত বিচারের আর্জি জানিয়ে মামলা করতে পারেন কি না, মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি অসীম রায়ের এজলাসে সেই প্রশ্ন উঠল।
কামদুনি-কাণ্ডে সিআইডি-র তদন্তকারী অফিসার ওই ঘটনার বিচারপর্ব দ্রুত শেষ করার আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে সোমবার মামলা করেছিলেন। এ দিন বিচারপতি অসীম রায়ের এজলাসে মামলাটি শুনানির জন্য ওঠে। বিচারপতি রায় সরকারি আইনজীবীর কাছে জানতে চান, একটি ঘটনার তদন্তকারী অফিসার দ্রুত বিচারের আর্জি জানিয়ে মামলা করতে পারেন কি না। জবাবে সরকার পক্ষের আইনজীবী রাজদীপ মজুমদার জানান, এই মামলাটি করেছে রাজ্য সরকার। সব সময়েই রাজ্য সরকারের মামলার আবেদনে স্বাক্ষর করেন কোনও সরকারি অফিসার। এ ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
রাজদীপবাবু আদালতে বলেন, এক ছাত্রীকে গণধর্ষণের পরে খুন করা হয়েছে। সরকার চায়, দ্রুত মামলা শেষ করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। তাই বারাসত কোর্টকে মামলাটির দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য নির্দেশ দিক হাইকোর্ট। এই মামলায় ধৃতেরা দমদম সেন্ট্রাল জেলে রয়েছে। তাদের কাছে মামলার প্রতিলিপি পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারপতি। কাল, বৃহস্পতিবার ফের মামলাটির শুনানি হবে।
বারাসতের তৃতীয় ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে কামদুনি-কাণ্ডের বিচার চলছে। ঘটনার ২২ দিন পরে সিআইডি ঘটনার অসম্পূর্ণ চার্জশিট জমা দেয় বারাসত আদালতে। তৃতীয় ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারপতি তা নিয়ে সিআইডি-র তদন্তকারী অফিসারকে ভর্ৎসনাও করেন। সিআইডিকে অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দিতে বলা হয়। ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে সিআইডি অতিরিক্ত যে চার্জশিট জমা দিয়েছে, তাতেও ফরেন্সিক রিপোর্ট অসম্পূর্ণ ছিল। এর জন্য এখনও কামদুনি-কাণ্ডের চার্জ গঠনই করা যায়নি। বিচার দ্রুত করার পথে যেখানে অসম্পূর্ণ চার্জশিটই অন্যতম বাধা, সেখানে সিআইডি-র তদন্তকারী অফিসারই কী ভাবে হাইকোর্টে এই মামলা করলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
আইনজীবী মহলের ধারণা, সিআইডি-র উপর ভরসা হারিয়ে কামদুনির মানুষ সিবিআই তদন্তের দাবি তোলেন। আইনজীবীদের একাংশের মতে, সিবিআইকে আটকাতেই কামদুনি-কাণ্ডের দ্রুত নিষ্পত্তি চেয়ে রাজ্য মামলা করেছে। যেখানে সিআইডি তার কাজই শেষ করতে পারেনি, সেখানে কী করে সরকার দ্রুত নিষ্পত্তির আশা করছে, সেই প্রশ্নও তুলেছেন আইনজীবীরা। আইনজীবীদের মতে, সিআইডি-র কিছু বলার থাকলে তা তারা ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টেই বলতে পারত। |