ভোট-ডিউটি নিয়ে পুলিশি অবরোধ দেখল কলকাতা
বাঁকুড়ার পরে এ বার খাস মহানগর। পঞ্চায়েতের ভোটের ডিউটি নিয়ে ক্ষুব্ধ কলকাতা পুলিশের কর্মীরা মঙ্গলবার ফের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখালেন কলকাতারই বুকে। যার জেরে ব্যস্ত সময়ে কিছুক্ষণের জন্য থমকে গেল ডায়মন্ড হারবার রোড।
এক সপ্তাহ আগে, গত ৮ জুলাই বাঁকুড়া পুলিশ-লাইনে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন কলকাতা পুলিশেরই কিছু কর্মী। মাওবাদী মোকাবিলায় যথাযথ অস্ত্র না-দেওয়ার যুক্তিতে ভোটের ডিউটিতে যেতে তাঁরা বেঁকে বসেন। প্রশ্ন তোলেন, থ্রি-নট-থ্রি রাইফেল নিয়ে তাঁদের মাওবাদী অঞ্চলে পাঠানো হচ্ছে। হামলা হলে লড়বেন কী করে? এ দিন ডায়মন্ড হারবার রোড আটকে যাঁরা বিক্ষোভ দেখালেন, তাঁদের অবশ্য কোনও মাওবাদী-এলাকায় পাঠানো হচ্ছিল না। ওঁদের গন্তব্য ছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর। তা হলে ক্ষোভ কেন?
ঘটনার মূলে একটি দুর্ঘটনা। লালবাজার সূত্রের খবর: এ দিন পূর্ব মেদিনীপুর থেকে ভোটের ডিউটি সেরে বাসে চেপে দক্ষিণ বিষ্ণুপুরে তৃতীয় দফার ভোটের কাজে যাচ্ছিলেন কলকাতা পুলিশের ২৩০ জন। হাওড়ার উলুবেড়িয়া ও ডোমজুড়ে দু’টো বাস দুর্ঘটনায় পড়ে। গুরুতর জখম হন দু’জন, তাঁদের কলকাতা পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। যদিও সংশ্লিষ্ট পুলিশকর্মীদের একাংশের বক্তব্য: ভাল রকম জখম হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। ২০ জনের অল্পবিস্তর চোট। এবং ওই পঞ্চাশ জনের কাউকেই ভোটের ডিউটিতে পাঠানো যাবে না বলে দাবি ওঠে।
বডিগার্ড লাইন্সে পুলিশকর্মীরা। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র
তার জেরেই বিক্ষোভ-অশান্তি। লালবাজারের খবর: কথা ছিল, ওই পুলিশকর্মীরা সরাসরি বিষ্ণুপুর থানায় গিয়ে দায়িত্ব বুঝে নেবেন। তা না-করে বাস নিয়ে ওঁরা সোজা চলে যান আলিপুর বডিগার্ড লাইন্সে। সেখানে তাঁরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেন, জখম অবস্থায় ভোটের ডিউটিতে যেতে পারবেন না। বডিগার্ড লাইন্সের এক অফিসার ওঁদের বোঝানোর চেষ্টা করেন, ভোটের ডিউটিতে যেতেই হবে। না-গেলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হবে। শেষে ওঁরা বাসে ওঠেন বটে, কিন্তু ডায়মন্ড হারবার রোডে গিয়ে বাস থেকে নেমে পড়েন। শুরু হয় রাস্তা অবরোধ। ওঁঁদের সহকর্মীদের অনেকেও তাতে সামিল হন। শৃঙ্খলাপরায়ণ বাহিনীর লোক হয়ে কেন আইনভঙ্গ করছেন?
এই প্রশ্নের মুখে বিক্ষোভকারী পুলিশকর্মীদের পাল্টা অভিযোগ: পঞ্চায়েত ভোটের প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় ডিউটি করতে গিয়ে থাকার জায়গা নিয়ে তাঁদের বিস্তর সমস্যায় পড়তে হয়েছে। অনেকের দু’বেলা খাওয়াও জোটেনি। তাই অনেকে ভোটের ডিউটি করতে যেতে চাইছেন না। “উপরন্তু এ দিন যে ভাবে গাদাগাদি করে পূর্ব মেদিনীপুর থেকে ওঁদের বাসে তোলা হয়েছে, তা এক কথায় অমানবিক। এমনকী, দুর্ঘটনার পরেও কর্তারা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেননি।” অভিযোগ করেছেন অনেকে। কেউ কেউ যুক্তি দিয়েছেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্য পুলিশের গ্রামে ভোটের ডিউটির অভিজ্ঞতা ও অভ্যাস রয়েছে। তাই প্রশাসনের উচিত তাদেরই পাঠানো।
ভরা বিকেলে মহানগরে পুলিশি-অবরোধের খবরে লালবাজার নড়েচড়ে বসে। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (সশস্ত্র) সরোজকুমার গজমের ঘটনাস্থলে যান। তিনিই অবরোধকারীদের বুঝিয়ে-সুজিয়ে বিষ্ণুপুরে পাঠান। লালবাজারের এক শীর্ষ কর্তার ব্যাখ্যা, কলকাতা পুলিশের কর্মীরা সাধারণত শহরে ডিউটি করেন। ভোটের সময়েও থাকেন শহরে। গ্রামে বা প্রত্যন্ত এলাকায় পঞ্চায়েত ভোটের ডিউটি করতে গিয়ে তাঁদের তাই কিছু অসুবিধে হচ্ছে।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.