|
|
|
|
বহু বুথে ভোট গভীর রাত পর্যন্ত
নিজস্ব প্রতিবেদন |
জঙ্গলমহলের মতো ৩টে না বাজলেও দ্বিতীয় দফার ভোটে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বেশ কিছু বুথে ভোটগ্রহণ চলল রাত ১২টার পরেও। জেলা প্রশাসনের হিসেবে, ভোট পড়েছে ৮৭.৯২ শতাংশ
সোমবার সকাল ৭টায় ভোট শুরু হয়ে গিয়েছিল। ভোট দিয়ে কাজে যাওয়ার তোড়জোড় ছিল অনেকের। সাতসকালেই তাঁরা বুথের সামনে লাইন দেন। শুরুতে ঢিমেতালে ভোট চললেও বেলা বাড়ার সঙ্গে ভোট পড়ার হার বাড়তে থাকে। দুপুরে কিছু সময় বুথগুলিতে ভিড় পাতলা ছিল। বিকেলে তা ফের বাড়তে থাকে। বিকেলে আবার জেলার কিছু এলাকায় বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি পড়ায় ভোটারদের অসুবিধা হয়। তা সত্ত্বেও বিকেল ৫টায় নির্ধারিত সময়ের পরও ছিল লম্বা লাইন। ফলে ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা গ্রামবাসীদের হাতে হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় নির্বাচন কমিশনের স্লিপ। ওই স্লিপ হাতে চলে দীর্ঘ অপেক্ষা। ভোটের লাইনে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকা লোকজনের ধৈর্যের বাঁধও ভাঙছিল মাঝেমধ্যে। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীরা মিষ্টি কথায় তাঁদের ভোলানোর চেষ্টা করেন। কোথাও বা কড়া হতে হয়। তবে বড় কোনও গণ্ডগোল ছাড়াই শেষ হয় ভোটগ্রহণ। |
রাতে ব্যালট বাক্স নিয়ে ডিমারি হাইস্কুলে পৌঁছলেন ভোটকর্মীরা। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল। |
জেলা প্রশাসনের হিসেবে, পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় গড়ে ভোট পড়েছে ৮৭.৯২ শতাংশ। সোমবার সকালে ভোট শুরুর পর দুপুর ১টা পর্যন্ত জেলায় গড়ে ভোট পড়েছিল ৪৪.৩৫ শতাংশ। বিকেল ৫টায় তা বেড়ে হয় ৭৪.৫৫ শতাংশ। জেলা প্রশাসনের হিসেব অনুযায়ী, জেলার ৩৯৭৭টি বুথের মধ্যে বিকেল ৫টার পরও ২৯১৩টি বুথে ভোটগ্রহণ হয়েছে। অর্থাৎ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জেলার মাত্র সাড়ে ৪০০ বুথে ভোটগ্রহণ সম্পূর্ণ হয়েছিল। বিকেল ৫টার পরও জেলায় গড়ে প্রায় সাড়ে ১৩ শতাংশ ভোট পড়েছে। রাত ৯টার মধ্যে জেলার অধিকাংশ বুথে ভোট গ্রহণ শেষ হলেও কিছু বুথে ঘড়ির কাঁটা ১২টা পেরিয়ে যায়। যেমন ময়নার পরমানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৪০ নম্বর হাভেলি হরিদাসপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথ ও কোলাঘাট ব্লকের খন্যাডিহি গ্রাম পঞ্চায়েতের পাকুড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২০ নম্বর বুথে ভোট হয়েছে রাত প্রায় ১টা পর্যন্ত। পাকুড়িয়া বুথের ভোটার শুভজিৎ অধিকারী বলেন, “ভোট দেওয়ার জন্য বিকেল ৩টে থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। ভোট দিতে পেরেছি রাত ১টা নাগাদ। আমার পরও লাইনে তখন কুড়ি জন ছিলেন।”
পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) অজয় পাল বলেন, “ভোট দেওয়ার জন্য বিভিন্ন জায়গায় ভোটাররা দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেছেন। জেলার কিছু বুথে রাত ১টা পর্যন্ত ভোট হয়েছে। তারপরেও সব কিছু শান্তিপূর্ণ ভাবে মেটার জন্য জেলাবাসীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”
এ দিকে, রাতভর ভোট চলার পর স্ট্রং রুম পর্যন্ত ব্যালট বাক্স পৌঁছে দিতেই ভোরের আলো দেখেছেন অনেক পুলিশকর্মী। মঙ্গলবার সকালেই আবার বিছানাপত্র বেঁধে ফের অন্য জেলার উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন তাঁরা। তবে, এই দিনটা কার্যত ঘুমিয়েই কাটালেন রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা। মহিষাদলের তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সোমনাথ মাইতি বলেন, “এই ক’দিন যে চাপ গিয়েছে, তাতে সকলে ক্লান্ত। এখন একটু বিশ্রাম নিচ্ছে আর কি।” |
|
|
|
|
|