|
|
|
|
পটাশপুরে এসইউসি প্রার্থীর বাড়িতে হামলা
নিজস্ব প্রতিবেদন |
ভোটপর্ব শেষে ফের উত্তপ্ত হল পটাশপুর, নন্দীগ্রাম।
সোমবার রাতে পটাশপুর থানা এলাকার পাহাড়পুর গ্রামে এসইউসি-র জেলা পরিষদের প্রার্থী নমিতা দাসের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। নেতৃত্বে ছিলেন যিনি, সেই তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী নির্মল সামন্ত আবার সম্পর্কে তাঁর ভগ্নীপতি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোটের ক’দিনই উত্তেজনা ছিল গ্রামে। সোমবার ভোট চলাকালীন দুই দলের মধ্যে বিবাদও হয়। নমিতাদেবীর অভিযোগ, “রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ জামাইবাবুর নেতৃত্বে জনা তিরিশেক তৃণমূলকর্মী আচমকা আমার বাড়িতে হামলা চালায়। ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি আমার শ্লীলতাহানি করে ওরা। স্বামী ও দুই ছেলে বাধা দিতে এলে মারধর করে। আমরা কোনও রকমে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বাঁচি।” নমিতাদেবীর আক্ষেপ, “নির্মলদার কাছে আত্মীয়তার সম্পর্ক থেকে রাজনীতিটা বড় হল। এটাই দুঃখের।” মঙ্গলবার জেলা পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ জানান এসইউসি নেতৃত্ব। |
তৃণমূল সমথর্ক আব্দুল লতিফ ভর্তি নন্দীগ্রাম হাসপাতালে। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস। |
নির্মলবাবু গণ্ডগোলের কথা মেনে নিলেও ঘটনাস্থলে ছিলেন না বলে দাবি করেছেন। নির্মলবাবু বলেন, “ভোট চলাকালীন উনি তৃণমূলকর্মীদের উদ্দেশে অশ্রাব্য গালিগালাজ করছিলেন। তাই পরে কয়েকজন বাড়িতে গিয়ে এর প্রতিবাদ করে। সেই সময় সামান্য ভাঙচুরও হয়েছে বলে শুনেছি। তবে, আমি এর মধ্যে ছিলাম না। পারিবারিক ঈর্ষা থেকে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।”
অন্য দিকে, নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের মহম্মদপুর পঞ্চায়েতের নীলপুর ও বহিচবাড়ি গ্রামে মঙ্গলবার তৃণমূল ও কংগ্রেস সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় তৃণমূল কর্মী সেরাজুল মল্লিক ও লতিফ আলি আহত হন। তাঁদের নন্দীগ্রাম ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদ প্রার্থী শেখ সুফিয়ানের অভিযোগ, “এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ নীলপুর গ্রামে বাড়ির সামনে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকার সময় একদল কংগ্রেস সমর্থক এসে সেরাজুলকে মারধর করে। স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে এলে কংগ্রেস সমর্থকরা পালিয়ে যায়। এ দিনই বেলা ১২টা নাগাদ বহিচবাড়ি গ্রামে দলের কর্মী লতিফ আলি শাহ নিজের বাড়িতে ভাত খাচ্ছিলেন। সেই সময় লাঠিসোঁটা নিয়ে কংগ্রেস সমর্থকরা এসে তাঁকে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেয়।”
অভিযোগ অস্বীকার করে কংগ্রেসের জেলা পরিষদ প্রার্থী শেখ আশরাফুলতুল্লার পাল্টা অভিযোগ, “এ দিন সকালে নীলপুর গ্রামে তৃণমূল কর্মী সেরাজুল আমাদের সমর্থক সেইদুন বিবি নামে এক মহিলাকে মারধর করে। তাঁর দোকান থেকে নগদ কয়েক হাজার লুঠ করা হয়। সেই সময় স্থানীয় বাসিন্দারাই বাধা দেয়। বহিচবাড়ি গ্রামে তৃণমূল কর্মীরা দলীয় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রার্থী মুকুলেশ্বর মল্লিকের বাড়িতে ভাঙচুর চালাতে যায়। সেই সময় স্থানীয় বাসিন্দারা বাধা দিলে পালানোর সময় লতিফ পড়ে গিয়ে আহত হন।” পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের কাখরদা পঞ্চায়েতের সোয়াদিঘি গ্রামে এক তৃণমূল প্রার্থীকে হেনস্থার অভিযোগকে কেন্দ্র করে সিপিএম ও তৃণমূলের সংঘর্ষ ঘটে। ওই ঘটনায় পাঁচ জন তৃণমূল সমর্থক আহত হন বলে অভিযোগ। তাঁদের মাতঙ্গিনী ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। এ দিন দলীয় সমথর্করা আক্রান্ত হওয়ার পর তৃণমূল কর্মীরা স্থানীয় কাকটিয়া বাজারে সিপিএমের জোনাল অফিস ভাঙচুর করে। অভিযোগ, সোয়াদিঘি গ্রামের সিপিএম প্রার্থী অনিল হাজরার দোকানও ভাঙচুর করা হয়। তমলুক থানার পুলিশ বাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। |
|
|
|
|
|