জমানা গিয়েছে, তবু জেদ যায়নি বাহাদুরের |
তিনিই ‘শেষ মুঘল’।
সর্বহারার দলে আছেন বটে, কিন্তু অবস্থাটা তাঁর অবিকল বাহাদুর শাহ জাফরের মতোই। দুয়ারে দাঁড়িয়ে প্রবল ক্ষমতাশালী ‘ভিনদেশি’, এ দিকে বিপদ বুঝে সুদিনের সঙ্গীরা পগার পার। অলিতে-গলিতে যখন নকশাল বারুদের ধোঁয়া, সেই ১৯৭০ সালে সিপিএমের পার্টি সদস্য হয়েছিলেন শেখ খান বাহাদুর। বামফ্রন্ট ক্ষমতায় আসার পরে প্রথম বারেই তিনি ওড়ফুলি পঞ্চায়েতে নির্বাচিত হন। ১৯৮৩ সালে রেলে চাকরি পেয়ে যাওয়ায় আর দাঁড়াননি।
সেই তাঁকেই দুর্দিনে হাওড়া জেলা পরিষদে টিকিট দিয়েছে দল। আর পুরনো কমিউনিস্টের তেজেই তিনি দুয়ারে-দুয়ারে দৌড়ে বেড়াচ্ছেন। কখনও সঙ্গে গুটিকয় লোক, কখনও একা। বামফ্রন্টের সুসময়ে যাঁদের তিনি দলে ঢুকতে দেখেছিলেন, তাঁদের অনেককে বেরিয়ে যেতেও দেখেছেন। লালঝান্ডা তোলার বদলে এখন তাঁরা ঘাসফুলের গোড়ায় জল দিতে ব্যস্ত।
শুধু কি তাই? দোরগোড়ায় আন্দুল থেকে সরে আসা এমন এক প্রার্থী, তৃণমূল জেলা পরিষদ দখল করলে যাঁর নিয়ন্তা হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। বিগত জেলা পরিষদের সেই বিরোধী দলনেতা অজয় ভট্টাচার্যের সঙ্গে রয়েছেন একগুচ্ছ নেতা-কর্মী, যাঁরা গত দেড়-দু’দশক সিপিএমের হয়ে ভোট ‘করে’ এসেছেন। খান বাহাদুর বলছেন, “ওরা আমার ব্যানার ছিঁড়ে দিয়েছে। দেওয়াল দখল করেছে। কিন্তু আমি সোজা মানুষের দরজায় যাচ্ছি। তৃণমূলের দখলে দেওয়াল রয়েছে, আমাদের সঙ্গে আছেন মানুষ।”
অজয়-ব্রিগেডের সামনের সারিতে থাকা প্রাক্তন সিপিএম নেতা শ্রীকান্ত সরকারের (২০০৯ সালে তৃণমূলে গিয়েছেন) টিপ্পনী, “রমরমার সময়ে সিপিএম বাহাদুরদাকে পাত্তা দেয়নি। এখন মানুষ যখন সিপিএমের কাছ থেকে সরে গিয়েছে, ওঁকে দাঁড় করিয়ে বলির পাঁঠা করছে। ওঁর জামানত জব্দ হবে।” অজয়বাবু পাক্কা ময়দানি কোচের ঢঙে বলেন, “আমরা কোনও লড়াইকে ছোট করে দেখি না।”
মসনদ কেড়ে নিয়ে বাহাদুর শাহ জাফরকে বার্মায় (এখন মায়ানমার) নির্বাসন দিয়েছিল ব্রিটিশ। যদি হেরেও যান, খান বাহাদুরকে হয়তো তল্লাট ছাড়তে হবে না। এটুকুই যা ফারাক।
|
|
রেল সমবায় ব্যাঙ্কের পদস্থ কর্তা |
পেশা |
রেলে ছিলেন, অবসর নিয়ে ঠিকাদার |
সিগারেট ছেড়েছেন, শুধু ভ্রমণ |
নেশা |
পান চিবিয়ে দাঁত লাল |
প্যাঁচ-পয়জার সামলাচ্ছেন বহু দিন |
প্লাস পয়েন্ট |
এলাকা তো হাতের তালু |
ঘরের মাঠ ছেড়ে খেলা |
মাইনাস পয়েন্ট |
কমরেডরাই বিরোধী শিবিরে |
ওঁর লড়াই ওঁর, আমারটা আমার |
প্রতিদ্বন্দ্বী সম্পর্কে |
কিস্যু বলার নেই |
চেনা নন, মিশুকেও নন |
লোকে বলে |
এত দিন ঘুমিয়ে ছিলেন? |
|