নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে বার্তা
আরও ৩ আসামির মৃত্যুদণ্ড মকুবে রাজি নন রাষ্ট্রপতি
কামদুনি কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার সাংবিধানিক অধিকার রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের নেই। কিন্তু মহিলাদের ওপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে কঠোরতম শাস্তির বার্তা দিতে চাইছে রাষ্ট্রপতি ভবন ও মনমোহন সিংহ সরকার। আর তাই ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত কর্নাটকের দুই আসামি এবং পাঁচ শিশু কন্যাকে খুনের অপরাধে মধ্যপ্রদেশে দোষী সাব্যস্ত এক অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড মকুবের আর্জি খারিজ করারই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সেই সুপারিশ মেনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ও। যার অর্থ ফাঁসি দেওয়া হবে এই তিন জনকেও।
২০০১ সালে কর্নাটকের চামরাজনগরে একটি ১৮ বছরের মেয়েকে ধর্ষণ করে নৃশংস ভাবে খুন করেছিল শিবা ও জগৎস্বামী নামে দুই দুষ্কৃতী। কামদুনির ঘটনার সঙ্গে মিল রয়েছে এই ঘটনার। নিম্ন আদালত তাদের মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিল। পরে ২০০৫ সালে হাইকোর্ট এবং ২০০৭ সালে সুপ্রিম কোর্ট সেই শাস্তি বহাল রাখে। সরকারি সূত্রের খবর, গত এপ্রিলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এদের মৃত্যুদণ্ড মকুবের আর্জি খারিজ করে দেওয়ার সুপারিশ পাঠায় রাষ্ট্রপতির কাছে।
এক থেকে ছয় বছরের পাঁচ শিশু কন্যাকে কুড়ুল দিয়ে গলা কেটে খুন করেছিল মধ্যপ্রদেশের ইচ্ছাওয়াড়ের মগনলাল। ২০১০ সালের সেই ঘটনার দ্রুত শুনানি সেরে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছিল জেলা আদালত। মগনলালের মৃত্যুদণ্ড মকুবের আর্জি খারিজ করার সুপারিশ ১৮ মে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার এক সদস্য বলেন, দিল্লির গণধর্ষণ কাণ্ডের পরই সনিয়া-মনমোহন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, মহিলাদের ওপর নৃশংসতার ঘটনায় কারওকেই আর রেয়াত করা হবে না।
এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপতিও একমত। প্রণববাবু মনে করেন, ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় আদালত মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিলে তা কার্যকর করতে বেশি সময় নেওয়া উচিত নয়। মার্জনার তো প্রশ্নই নেই। রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হওয়ার পর এপ্রিলে খুন-ধর্ষণে অভিযুক্ত ধর্মপাল নামে হরিয়ানার এক অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড মকুবের আর্জি খারিজ করেছেন তিনি। এর পর ফের আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে ধর্মপাল। রাষ্ট্রপতিস্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে জানিয়ে দিয়েছেন, সরকার যেন ওই মামলায় দৃঢ় অবস্থান নেয়। কারণ রাষ্ট্রপতি মৃত্যুদণ্ড মকুবের আর্জি খারিজ করার পর আদালতের আর কিছু বলার থাকতে পারে না।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে এক বছরে ন’টি ঘটনায় ১৪ জন অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড মকুবের আর্জি খারিজ করেছেন প্রণববাবু। এর মধ্যে মুম্বই-সন্ত্রাসে অভিযুক্ত আজমল কসাব ও সংসদ হামলার ঘটনায় চক্রান্তকারী আফজল গুরুর মৃত্যুদণ্ড মকুবের আর্জিও ছিল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে বলা হচ্ছে, কসাব ও গুরুর ফাঁসি মকুবের আর্জি খারিজ করার পরে প্রণববাবুর নিরাপত্তা জোরদার করা দরকার। এখন রাষ্ট্রপতির নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে দিল্লি পুলিশ। তার বদলে এসপিজি নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়ে বিবেচনা চলছে।
আবার অল্প সময়ে এত অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড মকুবের আর্জি খারিজ করায় মানবাধিকার কর্মীরা তাঁর সমালোচনা করছেন। প্রণববাবুকে ‘হ্যাংম্যান’ আখ্যা দিয়ে পত্রপত্রিকায় লেখালেখিও হচ্ছে। তবে রাষ্ট্রপতির ঘনিষ্ঠ সূত্রে বলা হচ্ছে, দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিতে অভ্যস্ত প্রণববাবু নিরাপত্তা বা সমালোচনা নিয়ে চিন্তিত নন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.