চান কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমহার
প্রেসিডেন্সিতে বাড়তি বেতনের পক্ষে মেন্টররা
ম্প্রতি যে-সব শিক্ষক প্রেসিডেন্সি ছেড়ে গিয়েছেন, তাঁদের অনেকেরই পাওনাগণ্ডা নিয়ে ক্ষোভ ছিল। ওই সব শিক্ষকের ইস্তফাকে তেমন গুরুত্ব না-দিলেও মেন্টর গ্রুপ মনে করছে, প্রেসিডেন্সিতে ভাল শিক্ষকদের ধরে রাখতে হলে তাঁদের কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমান বেতন দেওয়া জরুরি। রাজ্য সরকারকে তা জানিয়ে বেতনক্রমে ফারাক ঘোচানোর চেষ্টা করা হবে বলেও জানিয়েছেন গ্রুপের সদস্যেরা। চলতি মাসেই মেন্টর গ্রুপের পঞ্চম রিপোর্ট সরকারের কাছে জমা পড়ার কথা। তাতেও এই বিষয়ের উল্লেখ থাকবে বলে জানান মেন্টর গ্রুপের চেয়ারম্যান সুগত বসু।
রাজ্য সরকার আগেই জানিয়েছে, প্রেসিডেন্সির জন্য রাজ্যের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে বাড়তি বেতনের ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। মঙ্গলবার এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “এই বিষয়ে সরকারের নতুন কিছু বলার নেই।”
সোম ও মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ে মেন্টর গ্রুপের বৈঠক ছিল। এ দিন বৈঠকের পরে সুগতবাবু জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নত মানের পরিকাঠামো গড়ে তোলার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। পরে ওই গ্রুপের অন্যতম সদস্য, বিজ্ঞানী অশোক সেনও গবেষণার জন্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সর্বোচ্চ মানের সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার উপরে জোর দেন। তিনি বলেন, “এঁদের কারও যোগ্যতা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের থেকে কম নয়। কিন্তু বেতন অনেক কম। কিছু আদর্শবান মানুষকে আমরা পেয়েছি। তাঁরা পড়াচ্ছেন। তাঁদের সেই আদর্শবোধের উপরেই নির্ভর করা হচ্ছে। কিন্তু বেতনে ফারাক থাকলে প্রেসিডেন্সি কখনওই এক নম্বর বিশ্ববিদ্যালয় হতে পারবে না।” আইআইএমের রাশিবিজ্ঞানের শিক্ষক, মেন্টর গ্রুপের অন্যতম সদস্য রাহুল মুখোপাধ্যায়েরও বক্তব্য তা-ই।
প্রেসিডেন্সি থেকে গত কয়েক মাসে সাত জন শিক্ষক চলে গিয়েছেন। কর্তৃপক্ষের দাবি, এঁদের বেশির ভাগই ইস্তফা দিয়েছেন যথেষ্ট বেতন বা গবেষণার পরিকাঠামো পাননি বলে। উপাচার্য মালবিকা সরকারের কাছে শিক্ষকদের চলে যাওয়া নিয়ে জানতে চান উদ্বিগ্ন আচার্য-রাজ্যপালও। যদিও রাজ্য সরকার বা মেন্টর গ্রুপ বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দিতে রাজি নয়। তাদের যুক্তি, সব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আসা-যাওয়া চলে। প্রেসিডেন্সিও ব্যতিক্রম নয়।
কী ভাবে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে প্রেসিডেন্সির শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতনক্রমের ফারাক ঘোচানো যায়, সেই ব্যাপারে তাঁদের কিছু সুপারিশ রয়েছে বলে সুগতবাবু এ দিন জানান। তিনি বলেন, “সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও আলোচনা করব। শ্রেষ্ঠত্বের প্রতিযোগিতায় থাকতে গেলে তো জমিটা সমান হওয়া দরকার!” তবে এর জন্য সময় লাগবে বলে মনে করেন মেন্টর গ্রুপের চেয়ারম্যান।
প্রেসিডেন্সিকে রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবেই আন্তর্জাতিক মানের করে তুলতে চায় মেন্টর গ্রুপ। রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াতে রাজি হয়েই শিক্ষকেরা প্রেসিডেন্সিতে আসছেন। তা হলে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমান বেতনের দাবি উঠছে কেন? সুগতবাবু বলেন, “কোনও শিক্ষক বেতনের ব্যাপারে সন্তুষ্ট হতে না-পেরে যদি চাকরি ছাড়েন, সে-কাজ যুক্তিগ্রাহ্য নয়। কিন্তু ভাল শিক্ষকদের রাখতে হলে ভাল বেতন দিতেই হবে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর সুপারিশে তো রাজ্য ও কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের বেতনের ফারাক নেই। মহার্ঘ ভাতা ও বাড়িভাড়া বাবদ যে-অর্থ দেওয়া হয়, তাতেই দু’ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রাপ্যে ফারাক হয়ে যায়।” এই সব দিক মাথায় রেখেই সরকারের সঙ্গে কথা হবে বলে জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকাঠামো তৈরির জন্য রাজ্য সরকার সম্প্রতি চার কোটি ১০ লক্ষ টাকা দিয়েছে প্রেসিডেন্সিকে। সুগতবাবু জানান, সরকারের কাছ থেকে কিস্তিতে আরও টাকা পাবে প্রেসিডেন্সি। ছ’মাসের মধ্যে বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেস বিভাগের জন্য একটি কেন্দ্রীয় গবেষণার তৈরি হবে। গবেষণার উন্নত পরিকাঠামো গড়া হবে পদার্থবিদ্যা বিভাগেও। কলা বিভাগে বিভিন্ন গ্রন্থাগারের উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে গ্রন্থাগারিকের ১১টি পদে নিয়োগের প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে।
প্রেসিডেন্সি-কর্তৃপক্ষের আশা, ২০১৭-র মধ্যে রাজারহাটে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভবনের ২১ লক্ষ বর্গফুট এলাকায় নির্মাণকাজ শেষ করা যাবে। প্রাক্তনী, বেসরকারি সংস্থার অনুদানের সঙ্গে বিভিন্ন শিক্ষকের উদ্যোগে আনা অর্থও ব্যবহার করতে চায় প্রেসিডেন্সি।

পুরনো খবর:
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.