তৃণমূলের সঙ্গে তৃণমূলের সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল কাঁকরতলা থানার হরিএকতলা গ্রাম। মঙ্গলবার সকালের ঘটনা। চলল ঢিল, বোমাবাজি। সংঘর্ষে দু’পক্ষের কমপক্ষে ৬ জন আহত হয়েছেন। আহতেরা সিউড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র নিয়ে গ্রামেরই দু’টি ‘গোষ্ঠী’র বিবাদ। পুলিশের কাছে এ ব্যাপারে কেউ কোনও লিখিত অভিযোগ জানায়নি। তবে ওই গ্রাম সূত্রে যেটা জানা গিয়েছে, খয়রাশেলের বাবুইজোড় পঞ্চায়েতের ওই গ্রামে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মীর কাছ থেকে চাঁদা নেওয়া হবে কি হবে না—এই নিয়ে দ্বন্দ্ব বেধে গিয়েছিল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতা তৃণমূল প্রার্থী নূর আকসাম ও তাঁর সঙ্গীদের সঙ্গে শেখ আলাউদ্দিন ওরফে বুধন তাঁর সঙ্গীদের মধ্যে। তিন চার দিন ধরেই সমস্যা চলছিল। যেহেতু তৃণমূলের মধ্যে ‘দ্বন্দ্ব’ তাই সেটাকে মেটাতে তৃণমূল নেতৃত্ব এ দিন সকালে চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। সেই সময়ই হঠাৎ উত্তেজনা ছড়ায় বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি। শেখ আলাউদ্দিনের অভিযোগ, “নির্বাচন তহবিলে চাঁদা তুলছিলেন নূর আকসাম ও তাঁর সঙ্গীরা। জোর করে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর কাছে টাকা চেয়েছিলেন তাঁরা। আমরা তাতে বাধা দিয়েছিলাম। বলেছিলাম, এমনিতেই বিনা লড়াইয়ে যখন জেতা গিয়েছে, তখন আর জোর করে চাঁদা আদায় করার কী আছে। সেটা ওঁরা শোনেননি।” অন্য দিকে, নূর আকসামের দাবি, “মোটেই জোর করে চাঁদা আদায় করতে যাইনি। আসলে ওই ওঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি চলে মূলত আলাউদ্দিনের কথায়। ওঁর বাড়িতেই রান্নার জিনিসপত্র রাখা হয়। গ্রামের শিশু, প্রসূতি ও গর্ভবতীরা সঠিক পরিষেবা পান না। সেটা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গ্রামের মানুষের অভিযোগ ছিল। যেহেতু বর্তমানে গ্রামের নির্বাচিত সদস্য আমি, সেই জন্য ওই কেন্দ্রে গিয়ে হিসেব দেখতে চেয়েছিলাম। সেটাতেই আঁতে ঘা লেগেছে আলাউদ্দিনের। ঝামালাটাও সেই করানেই।”
তবে যে কেন্দ্রকে নিয়ে বা বিরুদ্ধে আভিযোগ সেই কেন্দ্রের কর্মী কবিতা দাস দিন কয়েক আগেই মাতৃত্বকালীন ছুটি কাটিয়ে কাজে যোগ দিয়েছেন। মঙ্গলবার অবশ্য তিনি আসেননি। তাঁর বদলে কেন্দ্রে এসে রান্নার জিনিসপত্র বের করে দিয়ে ছিলেন ওঁর স্বামী সুকুমার দাস। তিনি বলেন, “রান্না প্রায় হয়ে এলেও খাবার বিলি করা যায়নি বিবাদের জেরে।” তবে তাঁর স্ত্রীর কাছে জোর করে চাঁদা চাওয়া বা পরিষেবা নিয়ে কোনও কথা বলতে রাজি হননি সুকুমার বাবু। খয়রাশোলের প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা অশোক ঘোষ অবশ্য বিষয়টিকে দলের বিবাদ বলতে রাজি হননি। তাঁর কথায়, “এটা গ্রাম্য বিবাদ।” পুলিশ জানিয়েছে, নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে সেই অনুয়ায়ী তদন্ত করা হবে। |