| দীর্ঘ ৩৫ বছর পরে প্রশাসক নিয়োগ হল বর্ধমান পুরসভায়। সোমবার বিদায়ী চেয়ারম্যান আইনূল হক বর্ধমান মহকুমাশাসক (উত্তর) প্রদীপ আচার্যকে কার্যভার বুঝিয়ে দিলেন। রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় এসে ১৯৭৮ সালে বর্ধমান পুরবোর্ড ভেঙে দিয়ে প্রশাসক নিয়োগ করেছিল।
বিদায়ের দিনেই বামফ্রন্টের পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে বেআইনি নিয়োগের অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার খোকন দাস বলেন, “এই পুরবোর্ড শেষের দিকে অসংখ্য অবৈধ নিয়োগ করে গিয়েছে। আমরা ক্ষমতায় এলেই ওই সব নিয়োগ বাতিল করব।” |
| বিদায়ী পুরপ্রধান আইনুল হক।—নিজস্ব চিত্র। |
তবে এই অভিযোগ মানতে চাননি আইনূল। তিনি বলেন, “আমরা যা করেছি, স্বচ্ছতার সঙ্গে, গণতন্ত্র মেনেই করেছি।”
তাঁর আমলের পুরবোর্ডের কাজের ফিরিস্তি দিয়ে আইনূল দাবি করেন, “আমরা পুরসভার আয় বাড়িয়েছি। এক সময়ে বাত্সরিক বাজেট ছিল ৭৬ লক্ষ টাকা। শেষ দিকে ১২১ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছি আমরা। শহরের সমস্ত রাস্তা পাকা করা হয়েছে। সব রাস্তায় আলো জ্বালিয়েছি। অসংখ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করেছি। শহরের ঐতিহাসিক স্থাপত্যগুলি সংস্কার করেছি। যা পারিনি, সেটা হল দামোদর থেকে জল তুলে পানীয় জলের ব্যবস্থা করা আর শহরের আবর্জনাকে কাজে লাগিয়ে সার তৈরি। আমাদের হাতে টাকা ছিল। কিন্তু নতুন সরকার বেসরকারি উদ্যোগে ওই বৃহত্ জলপ্রকল্প তৈরি করার কথা বলেছিল। প্রকল্পের জল নিতে মানুষের উপরে আর্থিক চাপ পড়বে বলে আমরা তাতে রাজি হইনি।”
সামনের বার কি আর জিতে পুরসভায় ফিরতে পারবেন? আইনূলের দাবি, “যদি বাইকবাহিনীর দাপটে না থাকে আর নির্বাচনের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টি না হয়, বুথ দখল না হয়, আমরাই জিতবো।” তাঁর ব্যাখ্যা, “বর্ধমান শহরকে আমরা লন্ডন করতে পারিনি। কিন্তু আধুনিক ও উন্নতমানের শহর করার চেষ্টা করেছি। মানুষকে নিরাপত্তা দিতেও চেষ্টা করেছিলাম। সে সবের ভিত্তিতেই আমরা মানুষের কাছে ভোট চাইব।” মহকুমাশাসক প্রদীপ আচার্য বলেন, “পুরভোট না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসক হিসেবে পুরসভার দায়িত্ব নিয়েছে প্রশাসন। মানুষের সমস্যা সমাধানের যথাসাধ্য চেষ্টা করা হবে।” |
