মদনপুর ১ নম্বর পঞ্চায়েত
দুই বন্ধুর লড়াইয়ে জমজমাট নির্বাচন
ঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি। আট বছর একই বেঞ্চে পাশাপাশি বসে ক্লাস করার স্মৃতিটা এখনও টাটকা মদনপুর ১ নম্বর পঞ্চায়েতের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীর। স্কুল ফেরত ফুচকা খাওয়া বা পড়ায় ফাঁকি দিয়ে খেলতে যাওয়ায় বড়দের বকা খাওয়ার গল্প করতে গিয়ে এখনও রোমাঞ্চিত হন দু’জনেই। ছোটবেলার এই দুই বেস্ট ফ্রেন্ড বৈবাহিক সূত্রে দু’জনেই দু’জনের জা হন। বন্ধুত্ব তাতে আরও গাঢ় হয়েছে বলে জানান মদনপুরের বিদিশা ঘোষ ও সুলেখা পাল।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের দামামা বাজতেই মহিলা আসন হিসাবে বরাদ্দ ২১ নম্বর ওয়ার্ডে দুই পরিবারের পক্ষ থেকে প্রায় জোর করেই দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়েছে দু’জনকে। পূর্বপাড়ার বিদিশা দাঁড়িয়েছেন তৃণমূলের প্রতীকে আর গাঙ্গুলিপাড়ার সুলেখা সিপিএমের। রাজনীতির পাঠ দু’জনের কারও নেই। ফলে রাজনৈতিক বক্তৃতাতেও তেমন দক্ষ নন কেউই। তবু এখন ভোটের ময়দানে দু’জনেই কার্যত খড়গহস্ত। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পাড়ায় ঘুরে প্রচার সারছেন দুই বন্ধু। ৩৪ বছরে কি কি ক্ষতি হয়েছে তার খতিয়ান দিয়ে গলা ফাটাচ্ছেন একজন। অন্য জন ৩৪ বছর পরেও গ্রামের মানুষের জন্য কি কি স্বপ্ন ছিল বামপন্থীদের, তা বোঝাচ্ছেন। গত পাঁচ বছর মদনপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে ছিল। ২১ নম্বর ওয়ার্ডটি বামপন্থীরা কোনও দিন ছুঁতেও পারেননি। ফলে বিদিশার গলার জোর খানিকটা বেশি। সুলেখার সুর নরম।
সুলেখা পাল। বিদিশা ঘোষ।
বিদিশা ও সুলেখা দু’জনেই শ্বশুরবাড়ির রাজনৈতিক মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে ভোটে দাঁড়িয়েছেন বলে জানিয়েছেন। সুলেখা বলেন, “এটা সিপিএমের হারা আসন। পাড়ার বয়স্করা বারবার বলায় আমি দাঁড়ালাম।” পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিদিশাও জানতেন না তাঁকে বাড়ি ঘুরে ভোট ভিক্ষা করতে হবে। তিনি বলেন, “মানুষ বুঝেছেন মদনপুর-১ পঞ্চায়েতে পাঁচ বছরে যা উন্নয়ন হয়েছে তা যথেষ্ট। তাই তেমন প্রচার করতে হচ্ছে না”
গ্রামের পথ, চেনা মুখ। দুই বন্ধুর প্রচারে বেরিয়ে নিত্য দেখা সাক্ষাত হচ্ছে দেখা হলেই অবশ্য পথের মধ্যেই দু’জনে দু’জনকে জড়িয়ে ধরছেন। সুলেখা বলেন, “সেদিন প্রচারে বেরিয়ে দেখা। প্রচার চলাকালীন রাস্তায় দেখা হলেই গল্প হচ্ছে। মামাতো-পিসতুতো জা হওয়ায় সম্পর্ক খুবই ভাল। রাজনীতিতে শত্রু হলে কি হবে, আমার বেস্ট ফ্রেন্ড ছিল, থাকবেও।’’
হেরে গেলে? সুলেখার স্পষ্ট জবাব, “কেউ একজন তো জিতবে। ও যদি জেতে তাতেও আমি খুশি। আর হারলে পাশে থাকব।”
বেস্ট ফ্রেন্ড না রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী? বিদিশা কোন চোখে দেখছেন সুলেখাকে? বিদিশার স্পষ্ট জবাব, ‘প্রথমত বন্ধু। তারপর জা। তারপর রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী।” তিনি আরও জানান, “ও জিতলে আমার ভাল লাগবে। কারণ আমরা দু’জনেই এই প্রথম রাজনীতির আঙিনায়। সারাদিন দলের জন্য ছুটে বেড়াচ্ছি। ভাল কাজের স্বপ্ন ভেঙে গেলে ভাল লাগবে না।”
বিদিশার দুঃখ একটাই। ভোটের প্রচারে বেস্ট ফ্রেন্ড এখনও তাঁর বাড়িতে যাননি। তিনি বলেন, “তৃণমূল আমরা-ওরার রাজনীতি করে না। আমি সুলেখার বাপের বাড়ি গিয়েছি। কিন্তু ও আমাদের বাড়ি এখনও আসেনি।’’ সুলেখাও পাল্টা জানিয়েছেন, ‘‘আমরাই এখন মানুষের কাছে বেশি যাওয়ার চেষ্টা করি। ভোট তো হয়ে যাইনি। কি করে ভাবল যে আমি যাব না?”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.