সেরেনা-ভীতি কাটাতে
কোনর্সকে আনা
অ্যান্ডি মারে বনাম সেরেনা উইলিয়ামস ম্যাচ নিয়ে অনেক বছর পর টেনিসে ‘ব্যাটল অব সেক্স’ ফিরতে চলেছে। তবে যদ্দূর জানিটানি, সেই অভিনব ম্যাচ তো পরের বছরের কথা। আপাতত টেনিস কোর্ট গরম হয়ে উঠবে হয়তো ‘পার্টনারশিপ অব সেক্স’ ঘিরে। মানে জিমি কোনর্স-মারিয়া শারাপোভা নতুন গুরু-শিষ্যা জুটির কথা বলছি আমি। পরের মাসে ‘আমেরিকান টেনিস সামার’ থেকে (খুব সম্ভবত রজার্স কাপ) শারাপোভার ম্যাচে টেনিস রসিকেরা কোর্টের ভেতর, না গ্যালারিতে গ্ল্যামার গার্লের সাপোর্ট স্টাফ যেখানে বসবে সে দিকে তাকাবে বোধহয় ঠিক করতে পারবে না। কারণ, শারাপোভার খেলার সময় প্লেয়ার্স বক্স যে আলো করে থাকবে জিমি কোনর্স!
টেনিসের সর্বকালের সেরা যোদ্ধা-কাম-গ্ল্যামার বয়। আর দু’মাস বাদে একষট্টিতে পা দেবে। কিন্তু এই সে দিনও কোনর্সের সর্বশেষ আত্মজীবনীতে ওর আর ক্রিস এভার্টের প্রেম-গর্ভপাত-বিচ্ছেদের কাহিনি ‘জেনারেশন ওয়াই’ গপগপ করে গিলেছে। চল্লিশ বছর বয়সেও পেশাদার ট্যুরে খেলেছে। প্রথম আর শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার মধ্যে ব্যবধান দীর্ঘ ১৯ বছরের! একত্রিশেও যুক্তরাষ্ট্র ওপেন চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। অনেকেই হয়তো জানে না, আটটা সিঙ্গলস গ্র্যান্ড স্ল্যামের সঙ্গে এক জোড়া ডাবলস গ্র্যান্ড স্ল্যামও জিতেছিল কোনর্স। একশোর বেশি এটিপি টুর্নামেন্ট চ্যাম্পিয়ন। কেরিয়ারে জয়-হারের পার্সেন্টেজে (৮১.৮৫%) কোনর্স এখনও সর্বকালীন সেরাদের তালিকায় বর্গের পরেই দু’নম্বরে। ওর সময় টানা ১৬০ সপ্তাহ বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বরে থাকার রেকর্ড কোনর্সেরই ছিল। এক কথায়, গ্রেট চ্যাম্পিয়ন।
এ রকম একজন টেনিস সেলিব্রিটি যাকে কোচিং করাবে সে-ও মেয়েদের টেনিসের শীর্ষ সেলিব্রিটিদের একজন। মাত্র ছাব্বিশে কেরিয়ার গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতে ফেলেছে। বিপণন দুনিয়ার কাছে সেরা আকর্ষণ। উইম্বলডনে এ বার দ্বিতীয় রাউন্ডে শারাপোভা হেরে যাওয়ার পরেও লন্ডনে নিজের চোখে দেখেছি, স্পনসরদের মধ্যে রুশ টেনিস সুন্দরীকে নিয়ে তিলমাত্র আগ্রহ তো কমেইনি। বরং শারাপোভা-দিমিত্রভ রোমান্সের খবর ব্রিটিশ মিডিয়ায় অ্যান্ডি মারের ম্যাচ রিপোর্টের সমান গুরুত্ব পেয়েছে।

কোমর আর কাঁধের রিহ্যাব চালাচ্ছি। আমাকে দেখে যা মনে হচ্ছে তার
চেয়ে কিন্তু ব্যাপারটা অনেক মজার। সত্যি বলছি
....টুইটারে শারাপোভা
এহেন দু’জন মহাতারকা টেনিস নারী-পুরুষের কোর্টে সম্পর্ক অনেকের মনে হতেই পারে নিছক ‘গিমিক’। স্পনসর-বাজারে নিজেদের দর আরও বাড়িয়ে তোলার কৌশল। আমার ধারণা ঠিক উল্টো। সম্পূর্ণ টেনিসগত কারণে শারাপোভা অনেক চিন্তা-ভাবনা করে কোনর্সকে কোচ করেছে। সার্কিটে এত বড় বড় সফল কোচ থাকতেও। কোনর্স যে অসফল কোচ সেটাও আমি মানি না। অ্যান্ডি রডিক মাত্র উনিশ মাস কোনর্সের কোচিংয়ে থাকার সময় যুক্তরাষ্ট্র ওপেন ফাইনাল খেলেছিল। কী করে কোনর্সকে ব্যর্থ কোচ বলবেন? রডিক নিজেই স্বীকার করেছে, ওর ব্যাকহ্যান্ডের উন্নতি ঘটিয়েছিল কোনর্স।
শারাপোভার যা কোনর্সের থেকে শেখার থাকবে তা হল, এক) গুরুর খেলোয়াড় জীবনের কিছুতেই হার না মানা নাছোড় মনোভাব। দুই) অবিশ্বাস্য সার্ভ রিটার্ন। তিন) ফিটনেস রেজিম। চার) সার্ভিসে চুড়ান্ত ধারাবাহিকতা। পাঁচ) যে কোনও চোট সামলে উঠে দাঁড়ানোর শক্তি। আমার মনে হয়, শারাপোভা নিজেও এ রকম কিছু টেকনিক্যাল উন্নতি ওর খেলায় আনার কথা ভেবে কোনর্সকে নতুন কোচ নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তবে আসল হল, শারাপোভার সেরেনা-ভয় কাটিয়ে ওঠা। নেটের উল্টো দিকে সেরেনাকে দেখলেই যেন শারাপোভার খেলা তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে ইদানীং। আর সেরেনা এখন খেলছেও ওর জীবনের সেরা টেনিস। উইম্বলডনে সেরেনার হারটা স্রেফ অঘটন। অফিসে একটা খারাপ দিন মাত্র! ফলে শারাপোভাকে আবার গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিততে হলে, ফের র‌্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বর হতে হলে সেরেনা-জয় করতেই হবে। সেই লক্ষ্যেই ওর কোনর্সকে কোচ আনা।
একটাই ভয়। দু’জন মহা সেলিব্রিটির ইগো-যুদ্ধ যেন না লেগে যায়। কোনর্স কিন্তু মাথা গরম করে ফেলার লোক। যেটা তিয়াত্তরে ওয়ার্ল্ড টিম টেনিসে (যেটা এই মুহূর্তে লিয়েন্ডার খেলছে আমেরিকায়) কোনর্সের সঙ্গে এক টিমে খেলার সুবাদে আমিও টের পেয়েছি। টনি রোচের মতো আমার টেনিস-বন্ধুর কাছে শুনেছি, ভীষণ কড়া ধাতের ট্রেনার। হয়তো শারাপোভা কোনও ফিটনেস ট্রেনিং করতে একটু বেগড়বাই করল দুচ্ছাই বলে কোনর্স চাকরিই ছেড়ে দিয়ে বসতে পারে! ঠিক যে রকম সদ্য উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন মারের কোচ লেন্ডল নিজের দ্বিতীয় উইম্বলডন ফাইনালে কোচ টনি রোচের ‘শুধুমাত্র সার্ভ-ভলি’ খেলার পরামর্শ না মেনে খেলে হারার পর আমার বন্ধুটি করেছিল!

তারকা থেকে তারকার কোচ
• ইভান লেন্ডল শিষ্য অ্যান্ডি মারে (যুক্তরাষ্ট্র ও উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন)
• এমিলি মরেসমো শিষ্য মারিয়ন বার্তোলি (২০১৩ উইম্বলডন জয়ী)
• জিমি কোনর্স শিষ্য অ্যান্ডি রডিক (২০০৬ যুক্তরাষ্ট্র ওপেন রানার্স) ও মারিয়া শারাপোভা (বর্তমানে)
• টনি রোচ শিষ্য ইভান লেন্ডল (৮ গ্র্যান্ড স্ল্যামজয়ী), লেটন হিউইট ও প্যাট্রিক র‌্যাফটার (দু’জনই প্রাক্তন এক নম্বর ও দু’টি গ্র্যান্ড স্ল্যামজয়ী), রজার ফেডেরার (১৭ গ্র্যান্ড স্ল্যাম)
• পাম শ্রাইভার শিষ্য ভেনাস উইলিয়ামস (৭ গ্র্যান্ড স্ল্যাম, ২০০০ অলিম্পিকে সোনা)
• পল অ্যানাকোন শিষ্য পিট সাম্প্রাস (১৪ গ্র্যান্ড স্ল্যাম), ফেডেরার (বতর্মানে) ও টিম হেনম্যান (সেরা র‌্যাঙ্কিং ৪)
• ব্র্যাড গিলবার্ট শিষ্য রডিক (২০০৩ যুক্তরাষ্ট্র ওপেন চ্যাম্পিয়ন)
• ডারেন ক্যাহিল শিষ্য আন্দ্রে আগাসি (৮ গ্র্যান্ড স্ল্যাম)
• অ্যালেক্স কোরেটজা শিষ্য মারে (২০০৮-’০৯)
• পিটার লুন্ডগ্রেন (৮০-র দশকে ৪ বছরে ৩ বার সুইডেন ডেভিস কাপ চ্যাম্পিয়ন টিমের প্লেয়ার) শিষ্য মারাট সাফিন (২০০৫ অস্ট্রেলীয় ওপেন চ্যাম্পিয়ন), মার্সেলো রিয়স (প্রাক্তন এক নম্বর) ও গ্রিগর দিমিত্রভ (বর্তমানে)




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.