|
|
|
|
মারধরে অভিযুক্ত তৃণমূল |
ভোট মিটলেও অশান্তি চলছেই |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
ভোট মিটেছে। তবে দাঁড়ি পড়েনি অশান্তিতে। পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকাতেই সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলা চলছে বলে অভিযোগ। সর্বত্রই অভিযুক্ত তৃণমূল।
রবিবার সকালে ডেবরার ভবানীপুরের শ্রীরামপুরে অশান্তির জেরে সিপিএম সমর্থক বেশ কিছু পরিবার ঘরছাড়া হয়। সিপিএমের ডেবরা জোনাল কমিটির সম্পাদক প্রাণকৃষ্ণ মণ্ডলের অভিযোগ, “আমাদের প্রায় ৭০টি পরিবার ঘরছাড়া। দলের লোকেদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। মহিলাদের বলা হচ্ছে, এলাকায় থাকলে কামদুনি করে দেব। ওদের হুমকিতে গ্রামের মানুষ সন্ত্রস্ত।”
এ দিন দুপুরে সিপিএমের এক প্রতিনিধি দল ডেবরা থানায় গিয়ে ওসি কৃষ্ণেন্দু হোতার সঙ্গে দেখা করে। ঘরছাড়া পরিবারের সদস্যরাও সঙ্গে ছিলেন। পুলিশ এলাকায় বাড়তি নজরদারি চালানোর আশ্বাস দিয়েছে। হামলা-হুমকির অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের ডেবরা ব্লক সভাপতি রতন দে। গত বৃহস্পতিবার, ভোটের দিন দুপুরেও এখানে অশান্তি বাধে। মঙ্গল বাস্কে-সহ দুই তৃণমূল কর্মী জখন হন। তারপর এলাকায় পুলিশ ক্যাম্পও করা হয়েছে। গোলমাল বেধেছে শালবনির পিড়াকাটাতেও। এলাকায় সিপিএমের লোকাল কমিটির অফিস রয়েছে। কিছুটা দূরে পুলিশ ফাঁড়ি। সিপিএমের অভিযোগ, নির্বাচনের পর থেকেই পার্টি অফিসে এসে হুমকি দিচ্ছে তৃণমূলের লোকেরা। ইট-পাটকেলও ছোড়া হচ্ছে। পার্টি অফিস বন্ধ না করলে মারধর-ভাঙচুরের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। রবিবার সকালেও একদল তৃণমূল কর্মী এসে হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। সিপিএম নেতা জগন্নাথ মাহাতো বলেন, “এই তো পরিস্থিতি। মানুষ সব দেখছেন।” তৃণমূলের শালবনি ব্লক সভাপতি নেপাল সিংহের অবশ্য দাবি, “রবিবার দুপুরেই পিড়াকাটায় গিয়েছিলাম। এমন কিছু তো শুনিনি। এলাকা স্বাভাবিক রয়েছে।”
গোয়ালতোড়ে আবার কংগ্রেস ও ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টির কর্মী সমর্থকদের মারধর ও বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শনিবার রাতে গোয়ালতোড় থানার গোহালডাঙা পঞ্চায়েতের গোহালডাঙা গ্রামের ওই ঘটনায় মহিলাদেরও মারধর করা হয়। অভিযোগ, এ দিন রাতে তৃণমূলের বাইক বাহিনী গ্রামে ঢুকে ওই বুথের ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টির পঞ্চায়েত প্রার্থী ফুলমণি হেমব্রমকে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য হুমকি দেয়। ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টির জেলা সাধারণ সম্পাদক রাজেন টুডুর বাড়িতে হামলা করে তাঁকে মারধর করা হয়। এলাকায় পুলিশি টহল চলছে।
ভোট দেওয়ার অপরাধে ওই গ্রামে তৃণমূল কর্মীরা হামলা চালায় বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। দিশম পার্টির পক্ষে মোহন টুডু এবং কংগ্রেস নেতা সুজিত খানের অভিযোগ, “রাতে আচমকা ২০-২৫ জনের বাইক বাহিনী গ্রামে ঢুকে তাণ্ডব শুরু করে। কংগ্রেস এবং ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টির সমর্থকদের বেধড়ক মারধর করা হয়। তিনটি বাড়িতে ভাঙচুরও চালানো হয়। ওই ঘটনায় দু’জন জখম হয়েছেন। থানায় লিখিত ভাবে অভিযোগ জানানো হয়েছে।”
ফুলমণিদেবীও আলাদা করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। রবিবার সকালে ওই গ্রামের বাসিন্দারা গোয়ালতোড় থানায় এসে দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানায়। পরে পুলিশের আশ্বাসে তারা গ্রামে ফিরে যান। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি রবি রায় বলেন, “শনিবার আমাদের এক সমর্থককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করে ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টির কর্মীরা। তখন দলীয় সমর্থকরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওই গ্রামে চড়াও হয়। তবে বাড়ি ভাঙচুর এবং প্রার্থীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়। আমরাও থানায় বিষয়টি জানিয়েছি।” গোয়ালতোড় থানার আইসি হিরণ্ময় হোড় বলেন, “দু’পক্ষের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত শুরু হয়েছে।” |
|
|
|
|
|