নেতাজির স্মৃতির স্কুল বাঁচাতে উদ্যোগ |
প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায় • রাঁচি |
স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় ওই স্কুলের চাতালে বিপ্লবীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন সুভাষচন্দ্র বসু। নেতাজির ব্যবহৃত চেয়ারটি আজও সযত্নে রেখে দিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা।
তাঁদের একটাই ক্ষোভ, পোটকার কালিকাপুর বিদ্যালয়ে ইট-কংক্রিটে ইতিহাস ‘লুকিয়ে’ থাকলেও, তার রক্ষণাবেক্ষণে নজর দেয়নি প্রশাসন। নেতাজির স্মৃতিবিজরিত স্কুল বাঁচাতে তা-ই এগিয়ে এসেছেন পূর্ব সিংভূমের পোটকা ব্লকের মানুষই। শুরু হয়েছে গণ-স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান।
সংস্কারের অভাবে ১১৩ বছরের পুরনো ওই স্কুল এখন সত্যিই ‘হানাবাড়ি’। সিমেন্ট খসে পড়ে ইটের পাঁজর বেরিয়েছে সর্বত্র। ছবিটা একেবারে অন্যরকম ছিল ৪০-এর দশকে। |
|
জামশেদপুরের পোটকা কালিকাপুর হাইস্কুল। ছবি: পার্থ চক্রবর্তী। |
১৯৩৪ সালে কালিকাপুর স্কুলের পাশে একটি থানায় হানা দেন বিপ্লবীরা। ভাঙচুরের পর আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় সেখানে। তারই প্রেক্ষিতে ওই স্কুল চত্বরে গ্রামবাসীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন নেতাজি। ওই দিন তাঁর ব্যবহৃত চেয়ার এখনও আগলে রেখেছেন গ্রামবাসীরা। শুধু তা-ই নয়, পুড়ে যাওয়া থানার ভগ্নাবশেষও দেওয়াল তুলে ঘিরে দিয়েছেন। পোটকার বাসিন্দাদের দাবি, স্কুল এবং সেটির সংলগ্ন পুরনো কাঠামোগুলিকে ‘হেরিটেজ’ বলে ঘোষণা করুক সরকার। গ্রামবাসীদের বক্তব্য, স্কুলটির সঙ্গে নেতাজির যোগাযোগ ছিল---এ কথা জেনে স্বাধীনতার পর অনেক অভিভাবকই তাঁদের সন্তানদের সেখানে ভর্তি করেছিলেন। সংস্কার না-হওয়ায় এখন ওই স্কুলে কার্যত প্রাণ হাতে নিয়েই ক্লাস করে পড়ুয়ারা। মাটিতে বসে পড়াশোনা করতে হয় ।
স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, দীর্ঘদিন ধরে এ নিয়ে সরকারের কাছে আবেদন করা হচ্ছে। বহু বছর স্কুল ভবনটির মেরামতির কাজ করা হয়নি। প্রাথমিক বিভাগে ৬ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন। মাধ্যমিক বিভাগে কেউ-ই নেই। পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় ৮০০।
স্কুলের দুরবস্থা নিয়ে রাজ্যপাল সৈয়দ আহমেদের কাছে স্মারকলিপি দেয় জেলা কংগ্রেস। পোটকায় সুভাষচন্দ্রের নামে কলেজ তৈরিরও দাবি তুলেছে তাঁরা। জেলা কংগ্রেস সভাপতি মনোজ যাদবের অভিযোগ, “নেতাজির স্মৃতি বিজড়িত স্কুলটির প্রতি প্রশাসন শ্রদ্ধা জানায়নি।” |
|