আরামবাগে ধৃত ২
নির্দেশ উড়িয়ে চলছেই মোটরবাইক মিছিল
লকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ এবং নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকাকে তোয়াক্কা না করে ভোটের প্রচারে মোটরবাইক-মিছিল চলছেই। এর মধ্যে শনিবার পুলিশকে সক্রিয় হতে দেখা গেল শুধু আরামবাগে। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের নির্বাচনী সভায় মোটরবাইক নিয়ে মিছিল করে আসার সময়ে দুই তৃণমূল সমর্থককে গ্রেফতার করল পুলিশ। আটক করা হয়েছে চারটি মোটরবাইক। কিন্তু উত্তর ২৪ পরগনার হাবরা, পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া এবং বীরভূমের মাড়গ্রামে শাসক দলের মোটরবাইক-মিছিল ঘুরেছে নির্বিঘ্নেই।
পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে মোটরবাইক-বাহিনী নিষিদ্ধ করতে বুধবারই রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। এ নিয়ে নির্দেশিকা জারি করে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল, নির্বাচনী কাজে রাজনৈতিক দলগুলি একটি করে মোটরবাইক ব্যবহার করতে পারবে পুলিশের অনুমতি সাপেক্ষে। কিন্তু বহু জায়গাতেই এই নির্বাচনী আচরণ-বিধি ভঙ্গ হচ্ছে। কোর্টের নির্দেশ আদৌ রাজ্য মানতে চায় কি না, তা নিয়ে প্রশ্নও তুলেছেন বিচারপতি।
শনিবার সকালে আরামবাগের সালেপুরে নির্বাচনী জনসভা করতে যাচ্ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি মুকুল রায় এবং তৃণমূল যুবার সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সভার জন্য মোটরবাইক-মিছিল করে আসার সময়ে গৌরহাটি মোড়ে পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করে। দুই তৃণমূল সমর্থক বাইক ফেলে পালান।
আটক হওয়া তৃণমূলের ঝান্ডা লাগানো বাইক। —নিজস্ব চিত্র
এ ব্যাপারে মুকুলবাবু বলেন, “আমার যাতায়াতের পথে দলের তরফে কোনও বাইক-মিছিল দেখিনি। তেমন মিছিল যাতে না করা হয়, সে জন্য সভা থেকেই বারণ করেছি। দু’জনকে গ্রেফতারের বিষয়টি আমার জানা নেই। পুলিশ পুলিশের কাজ করেছে।”
আরামবাগের আইসি সুকোমল দাসের সামনেই ওই মিছিল হলেও তিনি কোনও ব্যবস্থা নেননি বলে এ দিন সিপিএমের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়। কমিশন অবশ্য জানিয়েছে, আইসি-ই ওই দু’জনকে গ্রেফতার করেন। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু বলেন, “বাইক-বাহিনীর দৌরাত্ম্য নিয়ে দলের পক্ষ থেকে রবীন দেব নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ করেছেন। আমিও চিঠি দিয়েছি।” এ ব্যাপারে হাইকোর্ট যে ভাবে মন্তব্য করেছে, তাতে রাজ্যে সাংবিধানিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে বলে তিনি মনে করেন কি না, জানতে চাওয়া হলে বিমানবাবু বলেন, “সংবিধানের নামে যাঁরা শপথ নিয়েছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী থেকে আরম্ভ করে বাকি মন্ত্রীরা সকলেই এখন সংবিধানকে কলার পাতার মতো সরিয়ে রাখছেন।”
শনিবার তৃণমূলের মোটরবাইক মিছিল। হাবরায়। ছবি: শান্তনু হালদার
এ দিন পাঁশকুড়ার কেশাপাট পঞ্চায়েতের একাধিক গ্রামে দেখা গিয়েছে তৃণমূলের মোটরবাইক-বাহিনী। এ ব্যাপারে পুলিশ-প্রশাসন কিছু জানে না বলে দাবি করেছে। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি দীপ্তিকুমার জানার দাবি, “পাঁশকুড়ার প্রতিটি বুথে আমাদের মিছিলের কর্মসূচি ছিল। কেশাপাটে সাইকেল-মিছিল হওয়ার কথা ছিল। বাইক-বাহিনীর মিছিল হয়ে থাকলে আমাদের না জানিয়েই হয়েছে।” হাবরা-২ ব্লকের বাঁশপুল পঞ্চায়েত এলাকায় দলীয় কর্মী-সমর্থকদের মোটরবাইক-মিছিল নিয়ে অশোকনগরের তৃণমূল বিধায়ক ধীমান রায় বলেন, “মনে হয় বাইক-মিছিলের অনুমতি নির্বাচন কমিশন নির্দেশ দেওয়ার আগেই পুলিশের কাছ থেকে নেওয়া ছিল।” প্রশাসনের বক্তব্য, ব্যাপারটা খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
পুলিশের উপস্থিতিতেই বীরভূমের মাড়গ্রামেও এ দিন দুপুরে একাধিক মোটরবাইক নিয়ে নির্বাচনী প্রচার করে তৃণমূল। এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার মুরলীধর শর্মা বলেন, “বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি।” মাড়গ্রামেই প্রচারে গিয়ে নির্বাচনী বিধিভঙ্গ করে লালবাতি লাগানো গাড়ি ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে রাজ্যের মৎসমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের বিরুদ্ধেও। মহকুমাশাসক (রামপুরহাট) রত্নেশ্বর রায় বলেন, “মন্ত্রী এমন করে থাকলে, তা নির্বাচনী বিধিভঙ্গের আওতায় পড়ে। খোঁজ নিচ্ছি।” মন্ত্রীর দাবি, তিনি বিধিভঙ্গ করেননি। বলেন, “আমার গাড়ির লালবাতি জ্বলছিল না।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.