মজিদ মাস্টারের শাসনে এই প্রথম সভা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শনিবার মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের বেশির ভাগ জুড়েই ছিল শাসনে তাঁর ঢুকতে না পারার অভিজ্ঞতার কথা। মঞ্চে উঠেই তিনি বলেন, “এই সেই শাসন। ঢুকতে দেয়নি আমাকে। আমি শুনেছিলাম, এখানে এক জন মাস্টার আছে। তিনি শিক্ষার মাস্টার নয়, বন্দুকের মাস্টার।”
সরাসরি নাম না করলেও এক সময়ে শাসন যিনি ‘শাসন’ করতেন, সিপিএমের সেই মজিদ মাস্টারের প্রসঙ্গেই বারবার ফিরেছেন মমতা। তাঁর কথায়, “আমি সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের সঙ্গে এখানে এসেছিলাম। যখন ঢুকলাম, দেখলাম, সমস্ত দোকানপাট বন্ধ। আশপাশে বাড়ির জানলাগুলোও বন্ধ। কেউ-কেউ জানলার ফাঁক দিয়ে আমাদের দেখছে।”
এ বার উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদে শাসন থেকে সিপিএমের হয়ে লড়ছেন মজিদ মাস্টারের স্ত্রী আসফনূরি বেগম। সম্প্রতি তাঁর হয়ে প্রচার করতে গিয়ে মার খান সিপিএম নেত্রী রেখা গোস্বামী-সহ অনেকে। তৃণমূল অবশ্য দায় নিতে চায়নি। |
বরং মজিদ মাস্টারের অত্যাচার থেকে মুক্তি পেতে সাধারণ মানুষ ‘প্রতিরোধ’ করেছেন বলেই দাবি করা হয়। এ দিন সে প্রসঙ্গে না গিয়ে বরং সিপিএম জমানায় আতঙ্কের কথাই তুলেছেন মমতা। তাঁর কথায়, “কতগুলো গুন্ডা এখানে বামেদের সঙ্গে থেকে দুর্নীতি করেছে।” শাসনে নিহত ও আহত তৃণমূল কর্মীদের নামের তালিকাও পড়েছেন তিনি।
বারাসত ২ ব্লকে দ্বীপের মতো প্রায় বিচ্ছিন্ন শাসন ও খড়িবাড়ি। চারদিকে ভেড়ি। আগে সিপিএমেরই একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল। মেছো ভেড়ি নিয়ে খুনোখুনিও লেগে থাকত। বছর খানেক আগে শাসনের প্রধান নিয়ন্ত্রক মজিদ মাস্টারের ক্ষমতা খর্ব করে বেশ কিছু এলাকার দখল নেয় তৃণমূল। ঘরছাড়া হন মজিদ মাস্টার। দেখতে দেখতে তৃণমূলই গোটা এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। কিন্তু কোনও আমলেই উন্নয়নের কাজ হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “শাসনে কলেজ গড়ার কথা বলেছেন অনেকেই। আমি ফিরে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলব। পঞ্চায়েত ভোট মিটলেই বেরোবে এসএসসি পরীক্ষার ফল।” বারবার সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষণের কথাও তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন। সংখ্যালঘু প্রধান ওই এলাকায় মুখ্যমন্ত্রীর আগে বক্তব্য রাখেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও বসিরহাটের সাংসদ নুরুল ইসলাম। মমতা দাবি করেন, “কেন্দ্র সব টাকা সুদে কেটে নিয়ে যাচ্ছে। তা না হলে ১০ লক্ষ ছেলেমেয়ের চাকরি দিতে পারি।” এ দিন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ও নদিয়ার হরিণঘাটায় বলেন, “ভোট মিটলেই হক আদায়ের দাবিতে দিল্লি যাব।” |