কেন্দ্র কেন ধরেনি, তোপ মমতার
জলঘোলা করতেই প্রশ্ন অ্যাকাউন্ট নিয়ে: বিমান
ঞ্চায়েত ভোটের সময়ে জলঘোলা করতেই সিপিএমের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নিয়ে তৃণমূল প্রশ্ন তুলছে বলে অভিযোগ করলেন দলের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু। ওই অ্যাকাউন্টের টাকার হিসাবে কোনও অস্বচ্ছতা নেই দাবি করে শনিবার আলিমুদ্দিনে বিমানবাবু বলেন, “এ ব্যাপারে যে কোনও তদন্তের মুখোমুখি হতে আমরা প্রস্তুত।” এক ধাপ এগিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, “তৃণমূলের মন্ত্রীরা সারদা কাণ্ডে জড়িয়েছেন। সে দিক থেকে নজর সরানোর জন্যই অ্যাকাউন্ট নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে।”
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিনও সিপিএমের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট প্রশ্নে তদন্ত দাবি করেছেন। বসিরহাটের মেটিয়া হাইস্কুলের মাঠে নির্বাচনী সভায় মমতা বলেন, “পার্টি বেতন দেয় বলেই নাকি সিপিএম নেতাদের খাওয়া হয়! তা হলে বিমানবাবু, নিরুপমবাবুদের ব্যক্তিগত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৬ কোটি টাকা এল কোথা থেকে? কেন্দ্রীয় সরকার ওঁদের ধরেনি কেন? চোখে কি ন্যাবা হয়েছিল?”
বিমানবাবু ও দলের পলিটব্যুরোর সদস্য নিরুপম সেনের নামে কলকাতায় স্টেট ব্যাঙ্কের একটি শাখায় ১৬ কোটি টাকা ছিল। সিপিএমের দাবি, ওই টাকা আসলে দলের। দুই শীর্ষ নেতার নামে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা থাকার বিষয়টিকে ‘সাধারণ নিয়ম’ বলে দাবি করেছেন সূর্যবাবু। এ দিন হরিণঘাটার বড় আন্দুলিয়ায় তিনি বলেন, “বিমান বসু আমাদের দলের রাজ্য সম্পাদক আর নিরুপম সেন কোষাধ্যক্ষ। তাই তাঁদের নামে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এটা দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আসছে।” তবে বিষয়টি নিয়ে নাড়াচাড়া হওয়ার পরে দলের নামে নতুন অ্যাকাউন্ট খুলে সেই টাকা সরিয়েও এনেছে সিপিএম।
বিমানবাবু এ দিন জানান, ২০০১ সালে সিপিএমের তৎকালীন রাজ্য সম্পাদক শৈলেন দাশগুপ্তের মৃত্যুর পরে দলের রাজ্য কমিটির প্যাডে চিঠি লিখে অ্যাকাউন্টে শৈলেনবাবুর পরিবর্তে নিরুপমবাবুর নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আবেদন করা হয়েছিল। সেই চিঠির প্রতিলিপি দেখিয়ে তিনি অভিযোগ করেন, “পার্টির প্যাডে চিঠি দেওয়া সত্ত্বেও অ্যাকাউন্টটি ব্যক্তিগত নামে রাখার জন্য দায়ী ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষই।”
কিন্তু ১২ বছর বাদে বিষয়টি খেয়াল করার দায় কি তাঁরা এড়াতে পারেন? বিমানবাবু স্বীকার করেন, “আমাদেরও আগেই দেখা উচিত ছিল। এ বছর খেয়াল করার পরেই আমরা ব্যাঙ্ককে চিঠি দিয়েছি।” তিনি জানান, ২০০১ সালে তাঁর প্যান কার্ড ছিল না। পরবর্তী কালে প্যান কার্ড করান।
যদিও তাঁর নিজস্ব কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই।
পাশাপাশি অ্যাকাউন্টে টাকার উৎসের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বিমানবাবু এ দিন বলেন, “রাজ্যে ৩ লক্ষ ১৪ হাজার পার্টি সদস্য। প্রত্যেককে মাসে দু’টাকা চাঁদা দিতে হয়। শুধু এই বাবদ মাসে আয় হয় ৬ লক্ষ ২৮ হাজার টাকা। এ ছাড়া, প্রত্যেক সদস্যকে তাঁর আয়ের একাংশ লেভি হিসেবে দিতে হয়।” তিনি জানান, শুধু আলিমুদ্দিনের সঙ্গে যুক্ত পার্টি সদস্যরাই মাসে ৪৫ লক্ষ টাকা, অর্থাৎ বছরে ৫ কোটি টাকা লেভি দেন। এ ছাড়া, প্রত্যেক জেলা থেকে পার্টি সদস্যদের লেভি জেলা পার্টি অফিসে জমা পড়ে। আয়-ব্যয়ের অডিট হয়। নির্বাচন কমিশনের কাছে দলের কেন্দ্রীয় কমিটি হিসাব পেশ করে। বিমানবাবুর কথায়, “আমরা কখনও এক দিনের আয় বা এক মাসের আয় জমা দিতে বলি। তখন এক দিনেই বহু টাকা জমা পড়ে।”
তৃণমূলকে পাল্টা চাপে ফেলতে মমতার আয়ের উৎস নিয়েও এ দিন প্রশ্ন তোলেন বিমানবাবু। তাঁর কথায়, “উনি বই বিক্রি করে আর ছবি এঁকে টাকা তোলেন। ওঁর ছবি ১ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কে ওই ছবি কিনেছিলেন? চেকের মাধ্যমে, নাকি নগদ টাকায় ওই ছবি বিক্রির টাকা লেনদেন হয়েছিল?” অতীতে সিপিএম অভিযোগ তুলেছিল, সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেন মমতার আঁকা ছবি কিনেছিলেন। এ দিন অবশ্য বিমানবাবু কারও নাম করেননি।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.